মিরাজের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি

অসাধারণ। দুর্দান্ত। দুর্ধর্ষ। এ মিরাজ যেন ভয়ঙ্কর। ঠিক ভয়ঙ্কর বললেও যেন কম বলা হয়। শেষ দিকে ভারতীয় ব্যাটারদের স্রেফ যেন গলির বোলারদের মতো পেটালেন। তার দানবীয় ব্যাটিংয়ে উড়ে গেলেন উমরান-সিরাজরা। তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। বাংলাদেশ পেল লড়াইয়ের পুঁজি।

বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৭১ রান তুলেছে টাইগাররা।

এদিন ৬৯ রানেই বাংলাদেশ হারিয়েছিল প্রথম সারির ছয়টি উইকেট। শঙ্কা ছিল একশর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার। একশ পার করে দেড়শর মতো রান হলেই তখন সন্তুষ্ট থাকতেন টাইগাররা। সেখানে রান এলো প্রায় পৌনে তিনশ। যার মূল কৃতিত্বই মিরাজের। প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেও দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে দলকে জয় এনে দিয়েছিলেন তিনি। এদিন যেন ঠিক সেখান থেকেই ব্যাটিং শুরু করেন।

অথচ ছয় উইকেটে হারানোর পর পরিসংখ্যান খুঁজে দেখা হচ্ছিল ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন রান কতো। রীতিমতো খাঁদের কিনারায় দল। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন মিরাজ। সঙ্গী হিসেবে পান অভিজ্ঞ সেনানী মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। যাকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস মেরামত তো করেছেনই, গড়ে দেন বড় পুঁজির ভিত। এরপর সেই ভিতে নাসুমকে নিয়ে ইমারত তৈরি করেন মিরাজ।

ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির তুলে ঠিক ১০০ রান তুলে অপরাজিত থেকেছেন মিরাজ। ৮৩ বলে ৮টি চার ও ৪টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ অলরাউন্ডার। ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে মাহমুদউল্লাহ খেলেন ৭৭ রানের ইনিংস। এ দুই ব্যাটারের জুটিতে আসে ১৪৮ রান। যা ভারতের বিপক্ষে সপ্তম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। এর আগে এনামুল হককে নিয়ে ২০১৪ সালে সপ্তম উইকেটে সর্বোচ্চ ১৩৩ রানের জুটি গড়েছিলেন মুশফিক।

২১৭ রানে মাহমুদউল্লাহ আউট হওয়ার পর লেজ বেরিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। তবে লেজের ব্যাটার নাসুম আহমেদ বুঝতে দেননি ঘাটতি। ১১ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৮ রান করে মিরাজকে দিয়েছেন দারুণ সঙ্গ। এই ব্যাটার মাত্র ২৩ বলে করেছেন ৫৪ রানের জুটি। তাতেই আড়াইশর বেশি রান করতে পারে টাইগাররা।

এদিন নাজমুল হোসেন শান্তর বদলে ইনিংস ওপেন করতে নেমেছিলেন এনামুল হক বিজয়। দুই চারে শুরু করলেও এবারও ব্যর্থ তিনি। মোহাম্মদ সিরাজের দ্বিতীয় ওভারে স্লিপে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন। রোহিত শর্মা তা ফেলে দেওয়ায় জীবন পান তিনি। ঠিক পরের বলেই ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে বিদায় তার। ৯ বলে ১১ করে আউটের সঙ্গে রিভিউও নষ্ট করে গেছেন এই ওপেনার।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে কিছুটা চেষ্টা চালান অধিনায়ক লিটন দাস। তবে হতাশ করেছেন অধিনায়ক (৭)। সিরাজের বলে লাইনেই যেতে পারেননি তিনি। রক্ষণাত্মক ঢঙ্গে খেলতে গিয়েও বোল্ড হয়ে যান। স্কোরবোর্ডে আর ১২ রান যোগ হতে ফিরে যান শান্তও। উমরান মালিকের গতিতে পরাস্ত হন তিনি। বাড়তি বাউন্সের বলে অফস্টাম্প উড়ে যায় তার। ৩৫ বলে ২১ রান করেন শান্ত।

৫২ রানে তিন উইকেট হারানোর পর সাকিব ও মুশফিক জুটির দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবে হতাশ করেছেন সাকিব (৮)। ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন তিনি। শুরু থেকেই বেশ ভুগছিলেন তিনি। উমরান মালিকের বাউন্সার বুঝতে না পেরে বেশ কয়েকবার গায়ে লাগে বল। একটি লেগেছিল হেলমেটেও।

হতাশ করেছেন মুশফিকও (১২)। ওয়াশিংটনের বলে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে যায় লেগ স্লিপে দাঁড়ানো শেখর ধাওয়ানে হাতে। যদিও আম্পায়ার আঙুল তোলেননি। রিভিউ নিয়ে ফেরায় দলটি। এর পরের বলে আফিফ হোসেনকে তুলে নেন ওয়াশিংটন। তার আর্ম বল বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে যান আফিফ (০)। তাতে বড় চাপে পড়ে যায় টাইগাররা।

Comments

The Daily Star  | English
narcotics cases pending despite deadline

4.8 lakh narcotics cases pending despite deadline

Judge shortage, lack of witnesses, inadequate court infrastructure blamed for delays

7h ago