ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করেই তবে ‘মিশন’ শেষ করতে চায় বাংলাদেশ

'মিশন শেষ করতে আর এক ধাপ বাকি'। চট্টগ্রামের ফ্লাইটে উঠে ফেসবুকে লিখেছিলেন অধিনায়ক লিটন দাস। প্রথম দুই ম্যাচেই ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জেতা নিশ্চিত করে ফেলেছে বাংলাদেশ। এই অবস্থায় শেষ ম্যাচটা স্রেফ নিয়মরক্ষার। কিন্তু বাংলাদেশ দল এমনটা ভাবলে তো! ভারতকে বাগে পেয়ে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ কোনভাবেই হাতছাড়া করতে চায় না স্বাগতিকরা। দলের প্রতিনিধি হয়ে গণমাধ্যমে হাজির হয়ে সে কথাই জানিয়ে গেলেন ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডারমট।
শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শেষ ম্যাচের আগে অনুশীলনে আসেননি অধিনায়ক লিটন, সাকিব আল হাসান, দুই ম্যাচের সেরা মেহেদী হাসান মিরাজ। টানা খেলার ধকলের কারণে বিশ্রামে ছিলেন তারা। রান না পাওয়া মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেনরা নেটে দিয়েছেন বাড়তি সময়।
সাধারণত তিন ম্যাচের কোন সিরিজে দুই ম্যাচেই সিরিজের ফয়সালা হয়ে গেলে শেষ ম্যাচটিতে শরীরী ভাষায় কিছুটা নেতিয়ে পড়ে। দেখা দেয় তীব্রতার ঘাটতি। খেলোয়াড়দের তেতে উঠার বারুদ থাকে কম।
বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ ম্যাকডারমটকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি দ্রুতই তা উড়িয়ে দিলেন। বরং জানালেন এই ম্যাচটাও যে কারণে দলের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, 'কাজ কখনো শেষ হয় না। আমরা আন্তর্জাতিক ম্যাচকে হালকাভাবে নেই না। এই দল কখনো ভারতকে ৩-০ ব্যবধানে হারায়নি। এটা আমাদের জন্য বড় লক্ষ্য। আমরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যেতে পারতাম। আমরা এখনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং চাপের সময় আগের চেয়ে ভালো। সিরিজ জেতার পর আমার ধারণা ছেলেরা আরেকটি ম্যাচ জিততে মুখিয়ে থাকবে।'
বোঝা যাচ্ছে ভারতকে সিরিজ হারিয়েই পুরোপুরি স্বস্তি আসেনি দলের, শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে ফেলতে চায় আরও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে।
এই সিরিজ ওয়ানডে সুপার লিগের অংশ নয়, এমনিতে বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় সুপার লিগ আগের মতো গুরুত্বপূর্ণও নয় বাংলাদেশের। এসব ম্যাচে নিয়মিত একাদশের বাইরের খেলোয়াড়দের ঝালিয়ে দেখার একটা সুযোগ থাকে। কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন ভারত, সেই পথে যাওয়ার কোন রকম কারণ দেখেন না ম্যাকডারমট। সেরা দল নিয়ে নেমেই আরও একটি ভারত বধের পরিকল্পনা তৈরি হয়ে আছে, 'ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের বিষয় ছাড়া ভারতের বিপক্ষে আপনি দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে চাইবেন। আমার মনে হয় না বিশ্রাম দেওয়ার মতোন জায়গায় আছে বাংলাদেশ। আমরা জেতার ধারাবাহিকতা রাখতে চাই, বড় খেলোয়াড়দের বসানোর বিলাসিতা করার মতো অবস্থায় নেই। আমরা আমাদের সেরা দলটি নিয়েই নামব। যত বেশি ম্যাচ জেতা যায় সেটাই লক্ষ্য।'
শেষ ম্যাচে ভারতের শক্তি কমছে। নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা আগের ম্যাচেই আঙুলের চোটে পড়েছিলেন। সেলাই নিয়ে ব্যাট করতে নেমে নায়কোচিত ইনিংস খেলেও দলকে জেতাতে পারেননি। রোহিত ফিরে গেছেন দেশে। তার সঙ্গে চোটে ছিটকে গেছেন দীপক চাহার, কুলদীপ সেনরাও।
বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ রোহিত না থাকায় একটা বাড়তি সুবিধা দেখছেন, তবে ম্যাচ জিততে তার আত্মবিশ্বাস নিজেদের উপরই, 'সে (রোহিত) না খেললে আমাদের সুযোগ আরও বেশি। সে অনেক মেধাবী খেলোয়াড়। গত ম্যাচে সে আরও আগে না নামায় আমি অবাক হয়েছিলাম। সে কম বল পেয়েছি। প্রতিপক্ষের চেয়েও আমরা নিজেদের নিয়ে ভাবছি। প্রতিপক্ষ নিয়ে আমরা যথেষ্ট গবেষণা করেছি। আমরা এমন এক জায়গায় আছি যেখানে আমাদের খেলোয়াড়রা নিজেদের আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতা দিয়ে ম্যাচ জিততে পারে।'
শনিবার দুপুর ১২টায় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে নামবে দুদল।
Comments