দেশের প্রথম ওপেনার হিসেবে টেস্ট অভিষেকেই জাকিরের সেঞ্চুরি

Zakir Hasan
সেঞ্চুরির পর জাকির হাসানের উদযাপন। ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

নিজের অভিষেক টেস্ট। খেলতে নেমেছেন তামিম ইকবালের মতো তারকার বদলি হিসেবে। প্রথম ইনিংসে থিতু হয়েও বড় রান করতে পারেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে পাহাড়সম রান তাড়ায় চাপ ছিল মাথার উপর। সব সামলে জাকির হাসান দেখালেন দৃঢ়তা, নিজের অভিষেক রাঙালেন দারুণ সেঞ্চুরিতে। টেস্ট ক্রিকেটে জাকিরই বাংলাদেশের প্রথম কোন ওপেনার, যিনি অভিষেকে করলেন সেঞ্চুরি।

কুলদীপ যাদবকে আগের ওভারে লং অফ দিয়ে ছক্কায় উড়িয়ে নব্বুই ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। আকসার প্যাটেলকে সুইপ করে চার মেরে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন দিলেন লাফ। সঙ্গী মুশফিকুর রহিমও তখন ভাসছেন উচ্ছ্বাসে। ২১৯ বলে জাকির পৌঁছান তিন অঙ্কে। পরের ওভারেই অবশ্য তিনি আউট হয়ে গেছেন। ২২৪ বলে ১৩ চার আর ১ ছক্কায় জাকির থামেন ঠিক ১০০ রানে। 

বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি আছে আমিনুল ইসলাম বুলবুল, মোহাম্মদ আশরাফুল ও আবুল হাসান রাজুর। তবে জাকির তাদের সবার থেকে আলাদা, কারণ তিনি সেঞ্চুরিটা করলেন ওপেন করতে নেমে। জাকির আরেকটি রেকর্ডেও নাম উঠিয়েছেন। অভিষেকে টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ইতিহাসের কেবল দ্বিতীয় ওপেনার তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৭৫ সালে এই কৃতী গড়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ল্যান্স বাইচান।

 

৫১৩ রানের লক্ষ্যে আগের দিন নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন তিনি। দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন ১৭ রানে। 

চতুর্থ দিনে নেমে তিনি ছিলেন ধীর-স্থির। ভারতীয় বোলারদের বিপদজনক বলগুলো খেলছিলেন সতর্ক পথে, আলগা বল পেলে বাউন্ডারি পাঠাতেও দ্বিধা করেননি। 

ওপেনিংয়ে শান্তর সঙ্গে জমে যায় তার জুটি। বাংলাদেশের প্রথম ওপেনিং জুটি হিসেবে ভারতের বিপক্ষে পেরিয়ে যান শতরান। চতুর্থ ইনিংসে  ওপেনিংয়ে দেশের হয়ে শতরানের দ্বিতীয় নজির গড়েন তারা। 

লাঞ্চের আগে ৫৫ রানে একবার সুযোগ দিয়েছিলেন জাকির। আকসার প্যাটের বলে তার ব্যাট-প্যাড হয়ে যাওয়া ক্যাচ ধরলেও টের পায়নি ভারতের ফিল্ডাররা। 

লাঞ্চের পর নেমে আর কোন সুযোগ দিচ্ছিলেন না তিনি। পেসারদের অফ স্টাম্প তাক করা ডেলিভারিগুলো ছাড়ছিলেন দেখেশুনে। নিরাপদ বল পেলে ছুটিছিলেন রানের খোঁজে। তৃতীয় উইকেটে লিটন দাসের সঙ্গে গড়েন ৪২ রানের আরেক জুটি। লিটন আউটের পর মুশফিককে নিয়ে ছুটে যান তিনি। চা-বিরতির পর নেমে তিন অঙ্কে যেতে সময় লাগাননি বেশি। 

গত দুই বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে বছরে এক হাজার করে রান আনছিলেন জাকির। এই ছন্দে ভারত 'এ' দলের বিপক্ষে ডাক পড়ে তার। সেখানেও দলের বিপদে করেন সেঞ্চুরি। তাতে টেস্ট দলের দোয়ারও খোলে ২৪ বছর বয়েসী সিলেটের এই ব্যাটারের। 

বড় মঞ্চে সুযোগ পেয়ে স্নায়ুচাপে ভুগেননি। পরিণত ক্রিকেট খেলে পেলেন দারুণ অর্জনের দেখা।

সেঞ্চুরির পর পর অশ্বিনের বল ফ্লিকের মতো করতে গিয়ে পুরো ব্যাটে নিতে পারেননি। এজড হয়ে স্লিপে বিরাট কোহলির সহজ ক্যাচে পরিণত হন তিনি। জাকিরের বিদায়ের সময় ২০৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ম্যাচ জিততে বা ম্যাচ বাঁচাতে এখন পাড়ি দিতে হবে কঠিন পথ।  

Comments

The Daily Star  | English

BGMEA wants 3-month window from India to clear pending shipments

The association urges the interim government to send a letter to India seeking the opportunity

5h ago