অথচ শুরুতে ‘এ’ দলেও ছিলেন না জাকির

Zakir Hasan
ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

যদি বলা হয় অভিষেকেই সেঞ্চুরি করা জাকির হাসানের টেস্ট দলে আসার পেছনে আছে দুটি ইনজুরির 'হাত'। খুব একটা ভুল বলা হবে না। সেজন্য অবশ্য প্রেক্ষাপট আরেকটু খোলাসা করা দরকার। 

ঘরোয়া ক্রিকেটে গত দুই বছর ধরে টানা রান করলেও হয়ত এত সহসা টেস্ট দলে ডাক পড়ত না জাকিরের। তার দুয়ার খুলে দেয় মূলত 'এ' দলের হয়ে বড় এক সেঞ্চুরি।

এই টেস্ট সিরিজের আগে বাংলাদেশ 'এ' দলের বিপক্ষে খেলতে এসেছিল ভারত 'এ' দল। সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচে কক্সবাজারে জাকির খেলেন ১৭৩ রানের ইনিংস। তামিম ইকবালের কুঁচকির চোটে পড়ে সিরিজ থেকে ছিটকে যাওয়া, টপ অর্ডারের কয়েকজনের ফর্মহীনতা মিলিয়ে তার ওই ইনিংস ছিল একদম আদর্শ সময়ে। নির্বাচকদের তাকে ডেকে নিতে তাই পড়তে হয়নি দ্বিধায়।

তবে 'এ' দলের সেই ম্যাচও খেলার কথা ছিল না জাকিরের। শেষ দিকে তার ডাক পাওয়ার পেছনেও আছে আরেকজনের চোটের গল্প। ভারত 'এ' দলের বিপক্ষে প্রথম আনঅফিসিয়াল টেস্টের স্কোয়াডে শুরুতে ছিলেন না তিনি। মিডল অর্ডার ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়ের চোট সুযোগ করে দেয় জাকিরকে।

মিডল অর্ডার ব্যাটারের জায়গায় দলে ঢুকলেও 'এ' দলে খেলতে নামেন ওপেনিংয়ে। প্রথম ইনিংসে ৪ বল খেলে আউট হন শূন্য রানে। দল গুটিয়ে যায় স্রেফ ১১২ রানে। ভারত 'এ' দলের ৪৬৫ রানের পাহাড়ের নিচে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে প্রবল চাপে করে ফেলেন ১৭৩ রান। এই সেঞ্চুরির সঙ্গেও সেই পরিস্থিতির যথেষ্ট মিল। এমনিতে তিন বা চারে খেলা জাকিরের সেই ম্যাচে ওপেন করে পাওয়া সাফল্য ঠিক করে দেয় পজিশনও। 

Zakir Hasan
সেঞ্চুরির পথে জাকির হাসান। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে উচ্ছ্বাস লুকিয়ে শান্ত কন্ঠে এই বাঁহাতি জানালেন ওটাই ছিল তার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট,   'ওইখানে ভালো একটা স্কোর করার পরে জাতীয় দলে ডাক পাওয়া একটা টার্নিং পয়েন্ট সবাই বলতে পারে। আমার কাছেও মনে হয়।'

'এ' দলের হয়ে খেলা সেই ইনিংস তাকে যুগিয়েছে আত্মবিশ্বাস, এবার চেষ্টা করেছেন স্রেফ প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করে যেতে,  'ওই ইনিংসটার জন্য আত্মবিশ্বাস ছিল মনের ভেতরে। প্রক্রিয়া অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করছিলাম আরকি। ওইটাই ব্যাক অফ দ্য মাইন্ডে ছিল, প্রক্রিয়াটা ঠিক রেখে খেলার চেষ্টা করব।'

২০২১ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে সব সংস্করণ মিলিয়ে জাকির করেন এক হাজারের বেশি রান। ২০২২ সালেও হাজার পেরিয়েছেন জাকির। দেশের সবচেয়ে বড় প্রথম শ্রেণীর আসর জাতীয় লিগে  ৮ ইনিংসে ৫৫.২৫ গড়ে করেছেন সর্বোচ্চ ৪৪২ রান।

Zakir Hasan
সেঞ্চুরির পর জাকির হাসানের উদযাপন। ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সিলেট বিভাগকে নেতৃত্ব দেওয়া জাকির চট্টগ্রামের বিপক্ষে খেলেছিলেন ২১৩ রানের ইনিংস। যা এই আসরের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। জাতীয় লিগের গেল আসরেও সাবলীল ছিল জাকিরের ব্যাট। সিলেটের হয়ে তিনটা সেঞ্চুরিতে ৯৯ গড়ে করেছিলেন ৩৯৬ রান।

৬৯টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলার পর টেস্ট আঙিনায় পা পড়েছে তার। বাংলাদেশের জন্য এমন নজির খুব বেশি। তারচেয়ে বেশি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলে টেস্ট খেলার নজির আছে মোহাম্মদ মিঠুন (৮৮), নাজিমুদ্দিন (৮১) ও আরিফুল হকের (৭৬)।

টেস্ট অভিষেকের আগে এতগুলো প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা টেম্পারমেন্টের জন্য ফলদায়ক হয়েছে তার, 'অবশ্যই, প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার কারণে আমি আমার টেম্পারমেন্টটা ধরে রাখতে পেরেছি। ওইখানে অনেকগুলো বড় ইনিংস আছে আবার ছোট আছে। তো প্রক্রিয়াটা কিছুটা হলেও আমার আয়ত্তে ছিল যে আমি এভাবে রান করতে পারি।'

Comments

The Daily Star  | English

Disrupting office work: Govt employees can be punished within 8 days

The interim government has moved to amend the Government Service Act-2018 to allow swift disciplinary action against its employees who will be found guilty of disrupting official activities.

7h ago