অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে
বাংলাদেশে করোনার নতুন উপধরন বিএফ.৭ শনাক্ত হয়েছে। চীন থেকে আসা ৪ নাগরিকের একজনের শরীরে করোনা এ নতুন ধরন শনাক্ত হয়। বিএফ.৭ করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের নতুন উপধরন।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ওমিক্রনের নতুন এই উপধরন অনেক বেশি সংক্রামক। দ্রুত ছড়ায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকেও জানানো হয়েছে, বিএফ.৭ উপধরনে আক্রান্ত একজন ব্যক্তির থেকে ১৮ জন সংক্রমিত হতে পারে।
নতুন উপধরন বিএফ.৭ প্রতিরোধে করণীয় কী তা জানতে দ্য ডেইলি স্টারে কথা বলেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনা-বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএসএমএমইউ'র ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহর সঙ্গে।
তারা দুজনেই বলেছেন, সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে হবে এবং অবশ্যই হাত ধুতে হবে।
অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, 'করোনার এই নতুন উপধরনটি অনেক বেশি সংক্রামক। সবাইকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। নতুন এই উপধরন সম্পর্কে প্রচারণা চালাতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। বিমানবন্দরগুলোতে অবশ্যই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। কেউ দেশের বাইরে থেকে এলে, সন্দেহ হলে করোনা পরীক্ষা করতে হবে।'
'সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে, ভারতের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ সীমান্ত আছে। বিভিন্ন দিকে ভারতে থেকে দেশে মানুষ আসছে। ভারতে বিএফ.৭ ধরা পড়েছে। ভারত থেকে যারা আসে তাদেরকে অবশ্যই সবাইকে টেস্ট করার ব্যবস্থা করতে হবে। শুরুর দিকে যেমনটা ঢিলেঢালা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তেমনটি করা যাবে না। আমাদের যে হাসপাতালগুলো আছে সেগুলো আবার সচল করতে হবে। জেলা-উপজেলা হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখতে হবে,' তিনি যোগ করেন।
ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, 'ওমিক্রন ধরনের নতুন উপধরনটি ব্যাপক সংক্রমিত এবং দ্রুত ছড়ায়। এ কারণে ঝুঁকি একটু বেশি। মানুষ এখন মাস্ক পরা ভুলেই গেছে। অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যারা টিকা নেয়নি তাদের দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বুস্টার ডোজ নিতে হবে। সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।'
তিনি বলেন, 'দেশের বাইরে থেকে বিশেষ করে ভারত, জাপান, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, থাইল্যান্ড যারা আসবে অবশ্যই স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘ সীমানা আছে। যারাই আসুক না কেন, অন্তত র্যাপিড টেস্ট করাতে হবে। কারো মধ্যে করোনা ধরা পড়লে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। সেটি জিনোম সিকোয়েন্স করে দেখতে হবে ধরন কোনটি।'
পূর্বে যেসব বিধিনিষেধ মানা হতো বিএফ.৭ প্রতিরোধে কি একই বিধিনিষেধ মানতে হবে, না আরও কিছু করতে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আগের মতোই সব বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। দেশে যাতে এই নতুন উপধরনটি আর না ছড়ায় সেটির ব্যবস্থা করতে হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। অনেকের মধ্যে একটা গা সয়ে যাওয়া, ঢিলেঢালা ভাব দেখা দিয়েছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে নতুনভাবে যেন না ছড়ায়।'
এই উপধরনটি প্রতিরোধে আমাদের কি যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ছড়ালে তো সামাল দিতে পারবো। তবে যাতে নতুন করে না আসে এবং না ছড়ায় এর জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে এবং আমাদের সব সক্ষমতা আছে। যদি ছড়িয়ে পড়ে ভয়ের কিছু নেই। তবে আবারো বলবো সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এবং কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।'
Comments