সোহান দুষ্টুমি করছিল, আমরা সবাই সুবিধা নিতে চেয়েছি: মিরাজ

Shakib Al Hasan & Mehidy Hasan Miraz

ফরচুন বরিশালের ইনিংস শুরুর আগে বিস্ময়কর এক দৃশ্যের জন্ম দেন সাকিব আল হাসান। কোন ব্যাটার স্ট্রাইক নেবেন তা নিয়ে মাঠে ঢুকে আম্পায়ারের সঙ্গে উত্তপ্ত তর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তার এমন আচরণে ইনিংস শুরু হতে দেরি হয় পাঁচ মিনিট। তবে মেহেদী হাসান মিরাজ জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতির সূচনা করেছেন আসলে রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রংপুর রাইডার্স-ফরচুন বরিশাল ম্যাচের ফল ছাপিয়ে গেছে মাঠের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায়। আগে ব্যাট করে রংপুর ১৫৮ রান করার পর বরিশালের হয়ে ওপেন করতে নামেন চতুরঙ্গ ডি সিলভা আর এনামুল হক বিজয়।

চতুরঙ্গ স্ট্রাইক নেওয়ার দিকে হাঁটতে দেখে বল হাতে নিতে দেখা যায় শেখ মেহেদী হাসানকে। সিদ্ধান্ত বদলে বিজয় স্ট্রাইক নিতে গেলে আবার রংপুরও  সিদ্ধান্ত বদল করে বল তুলে দেয় রাকিবুলের হাতে। এতেই  তৈরি হয় সংকটের।

এই সময় বাউন্ডারি লাইনের বাইরে দাঁড়িয়ে ব্যাটারদের দিকে ইশারা করে চিৎকার করতে থাকেন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব। তাকে বেশ উত্তেজিত অবস্থায় দেখা যায়, চতুর্থ আম্পায়ার সাকিবকে কিছু একটা বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। সাকিব তখন সরাসরি ঢুকে যান মাঠে। মাঠে গিয়েও আম্পায়ারদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে দেখা যায় এই তারকাকে।

ম্যাচ শেষে দলের হয়ে সংবাদ মাধ্যমে কথা বলতে এসে মিরাজ জানান, ম্যাচআপের সুবিধার্থে কোন ব্যাটার স্ট্রাইকে যাবেন সেটা ঠিক করতে চাচ্ছিলেন তারা। এই নিয়ে কথা বলতেই মাঠে ঢুকে যান সাকিব,   'এক প্রান্ত থেকে যে বোলার বল করছিল...আমাদের তো ডানহাতি-বাঁহাতি ক্রিজে ছিল। যেহেতু শেখ মেহেদি শুরু করছিল, আমাদের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান চাতুরঙ্গ স্ট্রাইক এন্ডে ছিল। সাকিব ভাই এখান থেকে বলছে যেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান স্ট্রাইক নেয়। এতে তো একটা সুবিধা পাবে। কারণ টি-টোয়েন্টিতে এক-দুইটা বলও খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাকিব ভাই বাইরে থেকে এটাই বলছিল।'

'তারপর যখন আবার বিজয় ভাই স্ট্রাইকে আসছে, ওরা আবার বাঁহাতি বোলার নিয়ে এসেছে। তখন আবার ও (সোহান)  বদলাচ্ছিল। জিনিসটা ওরকম ছিল। কিন্তু এটা যে অনেক কিছু এরকম কিছু না। ওরাও সুবিধা নিতে চাচ্ছিল, হয়তো দুষ্টামি করছিল সোহান ভাই ওই সময়ে।'

কে স্ট্রাইক নেবেন সেই সিদ্ধান্ত মাঠে যাওয়া দুই ব্যাটারই ঠিক করবেন। এক্ষেত্রে এই ছোট বিষয় নিয়ে মাঠের বাইরে থেকে এসে তর্কে জড়ান সাকিব। মিরাজ অবশ্য বলছেন অধিনায়ক চাইলে তো মাঠে যেতেই পারেন,  'পরিস্থিতিটা এমন ছিল, যখন বিজয় ভাইকে যখন বলছিল, তখন আম্পায়ারের সঙ্গে কথোপকথন হচ্ছিল। অধিনায়ক তো মাঠে যেতেই পারে। অনেক সময় যেতে পারে না?'

পানি পানের  বিরতি, ওভারের মাঝের সময়ে অনুমতি সাপেক্ষে ছাড়া হুট করে মাঠে প্রবেশের নিয়ম নেই। সাকিব কারো অনুমতি নিয়েছিলেন কিনা সেটা স্পষ্ট করতে পারেননি মিরাজ। সাকিবকে চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেলেও সেখানে মাঠে যাওয়ার অনুমিত নেওয়ার ব্যাপার ছিল কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি, 'আম্পায়ারের সঙ্গে তো কথা বলেছে। এখানে যে থার্ড (ফোর্থ) আম্পায়ার ছিল, তার সঙ্গে তো প্রথমে কথা বলেছে।'

যে বিষয় নিয়ে এই সংকটের শুরু সেটা হচ্ছে 'ম্যাচআপ।' বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা সাধারণত বোলিংয়ের দিক থেকে  বাঁহাতি ব্যাটারের বিপক্ষে অফ স্পিনার, ডানহাতি ব্যাটারের বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনারকে আদর্শ ম্যাচআপ হিসেবে খুব গুরুত্বের সঙ্গে নেয়। একই সঙ্গে বাঁহাতি ব্যাটাররা অফ স্পিনারকে এড়াতে চান।

এই বিষয়টা দেশের ক্রিকেটে গুরুতর দিকে চলে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মিরাজ দেন ব্যাখ্যা, 'জিনিসটা হলো সবাই সুবিধাটা নিতে চায়। সব দলই নিতে চাইবে। আমি যদি দেখি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ব্যাটিং করছে আমি কিন্তু ওকে ২-৩ বল খুব স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে বলটা করতে পারব। হ্যাঁ সিঙ্গেল নিলে স্ট্রাইক বদলে যাবে। তবে আউট করার সুযোগটা বেশি থাকবে। ডট হওয়ার সুযোগ থাকবে। টি-টোয়েন্টিতে একটা বলও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই জিনিসটা সব দলই সুযোগ নেবে। সেটাই আমরা চেষ্টা করছিলাম ব্যাটসম্যান যারা ছিল, অধিনায়ক বাইরে থেকে বলছিল। কিন্তু উনারা শুনে নাই প্রথমে। সেজন্য হয়তো আরও কিছু বলছিল।'

মজার কথা হলো বরিশালের চাওয়া মেনে বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুলের বিপক্ষে স্ট্রাইক পান চতুরঙ্গই। কিন্তু তিনি রাকিবুলের তিন বল সামলেই ক্যাচ তুলে আউট হয়ে ফিরে যান।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago