আজ থেকে সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব আজ বুধবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে।
আজ সকাল সাড়ে ১০টায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের ময়ূরপঙ্খী লোকজ মঞ্চে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
বাংলাদেশ লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশন প্রতি বছর মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব আয়োজন করে।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক এস এম রেজাউল করিম। আলোচক হিসেবে থাকবেন চিত্রশিল্পী আবুল হাসেম খাঁন।
আয়োজকরা জানান, দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে আয়োজিত মাসব্যাপী এ লোক কারুশিল্প মেলায় ফাউন্ডেশনে কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনী, লোকজ প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বাহারি পণ্য সামগ্রীর প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।
মাসব্যাপী উৎসবে প্রতিদিন লোকজ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুল শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণখেলারও আয়োজন থাকছে।
এবার ফাউন্ডেশনের কারুশিল্পীদের ২৪ স্টলসহ ১০০ স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতযশা ৪৮ কারুশিল্পী এই প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন।
এ বছর মেলায় থাকবে কারুশিল্পের কারুকাজ, হাতি, ঘোড়া, মমী পুতুলের বর্ণালী-বাহারি পণ্য, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁয়ের জামদানি শিল্প, বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প, ঢাকার কাগজের শিল্প, রাজশাহীর মৃৎশিল্প-মাটির চায়ের কাপ, শখের হাঁড়ি, বাটিক শিল্প, খাদিশিল্প, মণিপুরী তাঁতশিল্প ও রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প।
আরও থাকবে—টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য, সিলেটের বেতশিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনি কাঁথা, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা পুতুল, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশের কারুশিল্প, মাগুরা ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলংকার শিল্প, নাগর দোলা, বায়স্কোপ ও মিঠাই-মণ্ডার পসরা থাকবে স্টলগুলোতে।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক এস এম রেজাউল করিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লুপ্তপ্রায় লোকজ ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা, প্রদর্শন ও পুনর্জীবন দেওয়াই মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের মূল উদ্দেশ্য।'
তিনি জানান, মেলার পাশাপাশি এই লোকজ উৎসবে বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালি গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান, লালন সংগীত, মাইজভাণ্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গায়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তি-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী থাকবে।
ইতোমধ্যে ফাউন্ডেশনের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এ উপলক্ষে ফাউন্ডেশন চত্বর বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। এই মেলা আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
Comments