বিদ্রুপে পরিবারের সদস্যরা বেশি কষ্ট পায়, বললেন শান্ত

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাজমুল হোসেন শান্ত বিদ্রুপের শিকার হয়ে আসছেন অনেক দিন ধরে। কারণ হলো বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সিতে ব্যাট হাতে একের পর এক ব্যর্থতা। তবে এই বাঁহাতি ওপেনার এবারের বিপিএলে ছড়াচ্ছেন আলো। সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ম্যাচসেরা ইনিংস খেলার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানালেন, সমালোচকদের কথা-বার্তায় তার পরিবারের সদস্যরাই বেশি কষ্ট পায়।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাজমুল হোসেন শান্ত বিদ্রুপের শিকার হয়ে আসছেন অনেক দিন ধরে। কারণ হলো বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সিতে ব্যাট হাতে একের পর এক ব্যর্থতা। তবে এই বাঁহাতি ওপেনার এবারের বিপিএলে ছড়াচ্ছেন আলো। সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ম্যাচসেরা ইনিংস খেলার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানালেন, সমালোচকদের কথা-বার্তায় তার পরিবারের সদস্যরাই বেশি কষ্ট পায়।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আসরের পয়েন্ট তালিকার দুই শীর্ষ দলের মধ্যে হয়েছে রোমাঞ্চকর লড়াই। সেখানে সাকিব আল হাসানের বরিশালকে ২ রানে হারিয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার সিলেট। দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন শান্ত। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে ৮৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। ৬৬ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ১১ চার ও ১ ছক্কা। ব্যাটিংয়ে পরিস্থিতির দাবি মেটাতে দেখা যায় শান্তকে। ১৫ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর তিনি একপ্রান্ত আগলে থাকায় চাপ সামলে নেয় সিলেট। ৪৮ বলে ফিফটি পূরণের পর আগ্রাসী মেজাজে আবির্ভূত হন তিনি। পরের ১৮ বলে আনেন ৩৭ রান।

চলমান বিপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তিনে আছেন শান্ত। সাত ম্যাচে দুই ফিফটিসহ তার রান ২৮১। যদিও তার ১১৪.২২ স্ট্রাইক রেট টি-টোয়েন্টিসুলভ নয়। তবে সিলেটকে বড় পুঁজির ভিত গড়ে দেওয়ার কাজটি ধারাবাহিকভাবে করছেন তিনি।

বিবর্ণ পারফরম্যান্সের কারণে নিন্দুকদের কটু কথা শোনা শান্তর জন্য প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচুর ট্রলের শিকার হন তিনি, তাকে নিয়ে বানানো হয় নানা রকমের মিম। এসব বিদ্রূপ যতটা না শান্তকে কষ্ট দেয়, সেটার চেয়ে অনেক বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে তার পরিবারের ওপর, 'সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যমের বিষয়গুলো আমার জন‌্য যতটা কঠিন, আমার পরিবারের জন‌্য তার চেয়ে বেশি কঠিন। আমি যেভাবে বুঝি, আমার পরিবারের সদস‌্যরা কিন্তু সেভাবে বোঝে না। তারা হার্ট হয় (আঘাত পায়), তারাও কষ্ট পায়, (তাদেরও) খারাপ লাগে। তারাও (বাড়ির) বাইরে যায়। এই জিনিসটার জন‌্য আমি মাঝে মাঝে হতাশ হয়েছি। আমারও খারাপ লেগেছে।'

খারাপ খেললে সমালোচনা হবে, এই বাস্তবতা জানা আছে শান্তর। তবে সেটা শালীনতার মাত্রা যাতে ছাড়িয়ে না যায়, সেই প্রত্যাশা ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটারের, 'আমি যেটা বললাম, এটা আসলে আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। অনেকে না জেনে, অনেকে না বুঝে হয়তো কথা বলে ফেলে। দলের পরিকল্পনা, আমার পরিকল্পনা কিংবা আমি কতটুকু হার্ড ওয়ার্ক (কঠোর পরিশ্রম) করি, সেটা হয়তো অনেকে জানে না, (তাদের) জানার প্রয়োজনও নেই। এটা নিয়ে আসলে যত বেশি কথা আমি বলব, কথা বলাই হবে। এটা যার যার চিন্তা-ভাবনা। সে যদি বুঝে কথা বলে, জেনে কথা বলে, তাহলে আমার মনে হয় ভালো (হয়)।'

'আমি এটা বলছি না যে আমাকে নিয়ে সমালোচনা করা যাবে না। আমি খারাপ খেললে অবশ‌্যই সমালোচনা হবে। তবে আমি মনে করি, আরেকটু ডিসেন্ট ওয়েতে (গঠনমূলক) হতে পারত, যেটা আমার পরিবারের জন‌্য ভালো হতো। এতটুকুই (আমার বলার)।'

বিপিএলের পারফরম্যান্স মানুষের ভাবনায় বদল আনছে কিনা তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না শান্ত। কণ্ঠের সুরে বুঝিয়ে দেন যে মাঠের ভেতরের ব্যাপারেই মনোযোগী তিনি, 'পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে কি না সেটা আমি বলতে পারব না। এটা যার যার চিন্তা-ভাবনা থেকে বলে। আমি এটা নিয়ন্ত্রণও করতে পারব না। পরিবর্তন হবে কি হবে না, সেটা নিয়ে আমি খুব চিন্তিতও না। যদি হয়, আলহামদুলিল্লাহ (বলতে হবে)। যদি না হয়, তাও আমার কিছু করার নেই। এটা যার যার চিন্তা-ভাবনা থেকেই বলে।'

প্রবল সমালোচনায় চাপে পড়া স্বাভাবিক। তবে সেটা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া অনেককে পাশে পেয়েছেন শান্ত। এই প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন সিলেট অধিনায়ক মাশরাফির কথা, 'মাশরাফি ভাই সব সময় অনুপ্রাণিত করেন। বিপিএলে আমার প্রথম মৌসুমে উনি কুমিল্লার (ভিক্টোরিয়ান্স) অধিনায়ক ছিলেন। (তিনি) সব সময় অনুপ্রাণিত করেন, অনুপ্রেরণামূলক কথা বলেন।'

Comments

The Daily Star  | English
Abnormally high-priced purchases by Power Grid Company of Bangladesh

Goods worth Tk 16k imported at Tk 2.63 crore

State-run Power Grid Company of Bangladesh Ltd (PGCBL) imported 68 kilograms of tower bolts, nuts and washers from India for a whopping $2,39,695 or Tk 2.63 crore, which is 1,619 times the contract value.

13h ago