শান্ত-মুশফিক-বার্লের ঝড়ে জয়ে ফিরে শীর্ষে সিলেট

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মেহেদী মারুফ গড়ে দিলেন ভিত। মাঝপথে খেই হারালেও শুভাগত হোমের বিস্ফোরক ইনিংসে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স পেল লড়াইয়ের জন্য দারুণ পুঁজি। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম ও রায়ান বার্ল সেই সংগ্রহকে মামুলি বানিয়ে ফেললেন। জয়ে ফিরে আবারও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠল সিলেট স্ট্রাইকার্স।

বিপিএলে শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে উইকেটে ৭ জিতেছে স্বাগতিকরা। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৭৪ রান তোলে চট্টগ্রাম। জবাবে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল ১২ বল বাকি থাকতে ৩ উইকেটে ১৭৭ রান করে জয় নিশ্চিত করে।

চলমান আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শান্ত খেলেন ৬০ রানের ইনিংস। বাঁহাতি ওপেনার ৪৪ বল মোকাবিলায় মারেন ৬ চার ও ২ ছক্কা। রানখরা কাটানোর আভাস দেওয়া অভিজ্ঞ মুশফিক ২৬ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন। জিম্বাবুয়ের বার্ল শেষ পর্যন্ত টিকতে না পারলেও জয় সিলেটের মুঠোয় এনে দিয়ে যান। প্রতিপক্ষের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে ৪১ রান তিনি করেন কেবল ১৬ বলে। তার ব্যাট থেকে আসে ৪ চার ও ৩ ছক্কা।

নয় ম্যাচে সিলেটের এটি সপ্তম জয়। তাদের পয়েন্ট ১৪। নিজেদের ভেন্যুতে আগের ম্যাচে ফরচুন বরিশালের কাছে হেরেছিল তারা। সিলেটের দর্শকদের জন্য মাশরাফিদের এই জয় তাই বিপুল উৎসবের। দুইয়ে নেমে যাওয়া বরিশালের পয়েন্ট আট ম্যাচে ১২। নয় ম্যাচে সপ্তম হারের তিক্ত স্বাদ পাওয়া চট্টগ্রামের পয়েন্ট ৪।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই হাত খুলে খেলতে থাকেন শান্ত। তৃতীয় ওভারে পেসার মেহেদী হাসান রানাকে ৪টি চার মারেন তিনি। পাওয়ার প্লে শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৫৫ রান। নবম ওভারে ৬৩ রানের জুটি ভাঙে তৌহিদ হৃদয়ের আউটে। ১৮ বলে ১৫ রান করে বিজয়াকান্ত বিয়াসকান্তকে ফিরতি ক্যাচ দেন তিনি।

আগের দুই ম্যাচে গোল্ডেন ডাকের তিক্ত স্বাদ নিয়েছিলেন মুশফিক। এদিন তিনে নেমে সাবলীল ব্যাটিং উপহার দেন তিনি। কার্টিস ক্যাম্পারকে ২ চার মারার পর রানার ওভার থেকে আনেন চার ও ছক্কা।

মাঝে শান্তর ব্যাটের ধার কমে এসেছিল। ফিফটি পূরণ করতে তার লাগে ৩৬ বল। এরপর আবার আগ্রাসী হয়ে ওঠেন। তবে বড় শট খেলার বাড়তি চেষ্টায় ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে নিহাদুজ্জামানের ডেলিভারির লাইন মিস করেন তিনি। সেই সুযোগে স্টাম্প ভেঙে দেন ইরফান শুক্কুর। আগের দুই বলে ছক্কা ও চার মেরেছিলেন শান্ত। ভাঙে ৪৭ রানের জুটি।

এরপর শুরু হয় বার্লের বাউন্ডারি বৃষ্টি। মুশফিকের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটিতে প্রায় পুরো অবদান তার। স্পিনার নিহাদুজ্জামানের করা ১৫তম ওভারে ৩টি ছক্কা ও ২টি চার আনেন তিনি। সব মিলিয়ে ২৯ রান আসে ওই ওভার থেকে। ম্যাচ চলে আসে সিলেটের মুঠোয়।

অথচ নিহাদুজ্জামানের ওই ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হতে পারতেন বার্ল। লং-অনে তার ক্যাচ নিতে পারেননি মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। উল্টো হয়ে যায় ছক্কা। শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি বার্ল। তাকে ফিরিয়ে দ্বিতীয় শিকার ধরেন বিয়াসকান্ত। এরপর মৃত্যুঞ্জয়কে ছক্কা-চারে খেলা শেষ করে দেন জাকির হাসান।

এর আগে প্রথম বলেই উসমান খানকে বিদায় করেন মাশরাফি। পয়েন্টে অসাধারণ এক ক্যাচ ধরেন জাকির। তবে সিলেটের এই উল্লাস স্থায়ী হয়নি বেশিক্ষণ। দ্বিতীয় উইকেটে ৮৮ রানের বড় জুটি গড়েন মারুফ ও আফিফ হোসেন।

মোহাম্মদ আমিরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি স্পর্শ করেন ওপেনার মারুফ। সেজন্য তার লাগে ৩৬ বল। ওই ওভারেই ভাঙে জুটি। এরপর হয় ছন্দপতন। ৯ রানে পড়ে যায় চট্টগ্রামের ৪ উইকেট।

আমিরের বলে এলবিডব্লিউ হন আফিফ। রিভিউ নিলেও কাজ হয়নি। ২৭ বলে ৩৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। পরের ওভারে জোড়া শিকার ধরেন বাঁহাতি স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম। মারুফ ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ বলে ৫২ রান করে ক্যাচ দেন। ম্যাক্স ও'ডাউড বোল্ড হয়ে ফেরেন দ্রুত। কার্টিস ক্যাম্পার কাটা পড়েন রানআউটে।

৯৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে শক্ত ভিত নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে চট্টগ্রাম। সেই বিপাকে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক শুভাগত। পেসার থিসারা পেরেরাকে চার, ছয় ও ছয় মেরে শুরু হয় তার আগ্রাসন।

আরেকটি রানআউটে শুক্কুর বিদায় নিলেও শুভাগতর তাণ্ডব চলতে থাকে। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৪৭ রান যোগ করেন তিনি। শেষ ওভারে তানজিম হাসান সাকিবকে ছক্কা মেরে ফিফটিতে যান শুভাগত। ২৯ বলে ৫৪ রানে তিনি অপরাজিত থাকেন। তার ব্যাট থেকে আসে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কা।

ইমাদ ২ উইকেট নেন ২৩ রানে। বেধড়ক পিটুনি খান  সাকিব। চার ওভারে তার খরচা ৫২ রান।

Comments

The Daily Star  | English
rally demanding ban on awami league in Dhaka

Blockade at Shahbagh demanding AL ban

The demonstration follows a sit-in that began around 10:00pm last night in front of the Chief Adviser's residence

5h ago