ফোন থেকে ছবিসহ ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিতেন ‘ডেলিভারিম্যান

মিজানুর রহমান ওরফে আল-আমিন। ছবি: সংগৃহীত

বাড়িতে পণ্য ডেলিভারির সময় কৌশলে নারীদের মোবাইল ফোনে গুগল অ্যাড্রেস যুক্ত করে ছবিসহ ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া ও তা ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান ওরফে আল-আমিনকে (২২) গাজীপুর শহরের রথখোলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বেলা সাড়ে ১১টায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ কমিশনার (অপরাধ) আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার মিজানুর রহমান ওরফে আল-আমিন জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চরগাঁওকোড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জেলা শহরের রথখোলা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং দারাজ অনলাইন শপের পণ্য সরবরাহকারী (ডেলিভারিম্যান) হিসেবে চাকরি করতেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বলেন, 'গত ১০ ফেব্রুয়ারি দারাজের এক ডেলিভারিম্যান আপত্তিকর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করছে এমন একটি অভিযোগ আসে। এক কিশোরীকে তিনি ব্ল্যাকমেইল করছিলেন। পরে এ অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়।'

'মিজানুর রহমান ওরফে আল আমিন অভিনব কায়দায় ছবি সংগ্রহ করতেন। টাকা না দিলে ছবি ভাইরাল করার হুমকিও দেন তিনি। এতে ওই কিশোরী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং লোক লজ্জায় ভয়ে পড়ালেখা বন্ধ করে দেন। তিনি একাধিকবার আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন,' বলেন তিনি।

শুক্রবার রাতে রথখোলা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন এ ঘটনায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি জিয়াউল ইসলাম।

ওসি বলেন, 'জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, দারাজ অনলাইন শপে নারী ও উঠতি বয়সী মেয়েদের টার্গেট করতো আল আমিন। পণ্য সরবরাহের সময় ক্রেতার গুগল লোকেশনে এ্যাড্রেস এ্যাড করে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে তাদের মোবাইলটি হাতে নিতো। পরে ক্রেতার মোবাইলের গুগল ফটোতে ঢুকে শেয়ারিং অপশনের মাধ্যমে শেয়ার উইথ পার্টনার হিসেবে তার ব্যক্তিগত জিমেইল এ্যাড করে ক্রেতার মোবাইলটি ফেরত দিত। এ কাজটি করতে ১-২ মিনিট সময় লাগতো।'

'পরে সে সুবিধামতো ক্রেতার গুগল থেকে শেয়ার করা সমস্ত ছবি তার মোবাইলে ডাউনলোড করে নিত। এভাবেই অনেক নারীর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতো।'

আল আমিনের মোবাইলে বহু নারীর ছবি ও ১১টি ইমেইল আইডি লগইন অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করে শনিবার দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জিএমপির সহকারী উপ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) রেজওয়ান আহমেদ, সহকারী কমিশনার ফাহিম আসজাদ,  গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের সহকারী কমিশনার আসাদুজ্জমানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Child rape cases rise nearly 75% in 7 months

Shows ASK data; experts call for stronger laws, protection

1h ago