শামীমের ব্যাটে সাকিবদের বিদায় করে টিকে রইল রংপুর

Shamim Hossain
৫১ বলে ৭১ রান করার পথে শামীম হোসেন পাটোয়ারি। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মেহেদী হাসান মিরাজ আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে এক সময় দুশোর আভাস দিচ্ছিল ফরচুন বরিশাল। এই দুজনের বিদায়ের পর মাঝের ওভারে অনেকগুলো ডটবলের চাপ তাদের হিসাব দেয় বদলে। স্লগ ওভারে পর্যাপ্ত রান না আসার ঘাটতি নিয়ে বোলিংয়েও সেরা অবস্থায় থাকল না তারা। রান তাড়ায় রনি তালুকদারের ঝড়ের পর রংপুর রাইডার্সের হাল ধরলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। তার ফিফটিতে সাকিব আল হাসানদের বিদায় করে ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে থাকল রংপুর। 

রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এলিমিনেটর ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর। আগে ব্যাট করে মিরাজের ফিফটিতে ১৭০ রান জড়ো করেছিল বরিশাল। ৩ বল আগে ওই রান পেরিয়ে জিতে যায় রংপুর।

রনির ১৭ বলে ২৯ রানের পর এই লক্ষ্য মিলিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখেন শামীম। তার ব্যাট থেকে আসে ৫১ বলে ৭১ রান।

শেষ দিকে দাসুন শানাকা (১২ বলে ১৬) আর শেখ মেহেদী (৮ বলে ১৪) কাজটা সারেন সহজে।

রান তাড়ায় নেমে নাঈম শেখকে শুরুতেই হারালেও রনি -শামীম মিলে দলকে পাইয়ে দেন উড়ন্ত সূচনা। বিপিএলে এবার দারুণ ছন্দ বজায় রেখে রনি চড়াও হন বোলারদের উপর। প্রিটোরিয়াস, সাকিবকে ছক্কায় উড়ান তিনি। প্রথমে কিছুটা আড়ষ্ট থাকলেও টানা মেলেন শামীমও। প্রথম ছয় ওভারে চলে আসে ৫৫ রান।

পাওয়ার প্লের পরেই দৌড় থামান রনি। আগ্রাসী মেজাজে থিতু হওয়া এই ব্যাটার ১৭ বলে ২৯ করে ক্যাচ দেন কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে। এই ধাক্কা টের পেতে দেননি শামীম, চারে নেমে চালাতে শুরু করেছিলেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। তৃতীয় উইকেটে ২২ বলে জুটিতে আসে ৩৫ রান।  নিজের স্পেলের শেষ ওভারে সোহানকে থামান সাকিব।  ভেতরে ঢোকা বলে জোরালো এলবিডব্লিউর আবেদন আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নিয়ে সফল হয় বরিশাল।

শামীমকে থামানো যায়নি। ৩৪ বলে ফিফটি তোলে নেন তিনি। উড়িয়ে আনা ক্যারিবিয়ান নিকোলাস পুরান করেন হতাশ। ৮ বলে ৫ করে খালেদ আহমেদের ফুলটসে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।

Dasun Shanaka & Sheikh Mahedi Hasan

ম্যাচে তখন আবার তৈরি হয় দোলাচল, শামীম অবশ্য নিয়মিত বাউন্ডারি বের করে কমাচ্ছিলেন চাপ। ১৭তম ওভারে তিনিও শিকার হন খালেদের। লং অন দিয়ে ছক্কা পেটাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা দেন শামীম। চারটি করে চার-ছয়ে ৫১ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৭১ রান।

শেষ তিন ওভারে ২৯ রানের সমীকরণ কঠিন হতে দেননি শানাকা আর মেহেদী। শেষ ওভার পর্যন্ত খেলা গেলেও তেমন টানটান রোমাঞ্চের দোলাচল রাখেননি তারা। 

এদিন টস হেরে খেলতে নেমে বরিশালকে ভালো শুরু এনে দেন মিরাজ। আন্দ্রে ফ্লেচার ডানা মেলতে না পারলেও পাওয়ার প্লে কাজে লাগান তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে যোগ করেন ৬৯ রান।

তিনে নেমে মাহমুদউল্লাহও দলের চাহিদা মেটান বেশ ভালোভাবে। ২১ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৪ রান। ১৪তম ওভারে মাহমুদউল্লাহ যখন ফেরেন তখন দলের রান ১১৫। লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ থাকায় ওই জায়গা থেকে দুইশোর কাছে যাওয়া ছিল খুবই সম্ভব।

ফিফটি তোলার পর মিরাজের কাছে চাহিদা ছিল বিস্ফরক হওয়ার। তিনি ঠিক রুদ্রমূর্তি ধারণ করতে পারছিলে না। ৪৮ বলে ৬৯ করে তার বিদায়ের পর  চারে পাঠানো হয়ছিল করিম জানাতকে, ঝড় তোলার চিন্তাতেই। তবে তা কাজে আসেনি। আফগান এই ব্যাটার এদিন টাইমিং পেতে ধুঁকছিলেন, শেষ দিকে অনেকগুলো ডটবল খেলে তিনি বাড়ান চাপ।

ভানুকা রাজাপাকসেও ক্রিজে নেমে উত্তাল হতে পারছিলেন না। তাদের আড়ষ্টতায় শেষ দিকে আসেনি যথেষ্ট রান। বিশেষ করে দাসুন শানাকা আর ডোয়াইন ব্র্যাভোর স্লোয়ারে ধন্দে পড়ছিলেন তারা। একদম শেষ ওভারে হাসান মাহমুদকে পিটিয়ে কিছুটা পোষালেও থেকে যায় অন্তত ১৫ রানের ঘাটতি।  হাতে ৯ উইকেট নিয়েও শেষ ৭ ওভারে স্রেফ ৫৬ রান করাই মূলত ম্যাচের গতিপথ তৈরি করে দেয়।

Comments

The Daily Star  | English
cyber security ordinance 2025

Cyber Security Ordinance to be announced this week: law adviser

Nine sections have been scrapped from the Cyber Security Act 2023, he says

1h ago