প্রবাসে

এক বছরে ২৩০২ ইউক্রেনীয় শরণার্থী জাপানে এসেছে: কিশিদা

রাশিয়ার আগ্রাসী হামলার এক বছরে ২ হাজার ৩০২ জন ইউক্রেনীয় শরণার্থী জাপানে এসেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার আগ্রাসী হামলার এক বছরে ২ হাজার ৩০২ জন ইউক্রেনীয় শরণার্থী জাপানে এসেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের বর্ষপূর্তি এবং মে মাসে হিরোশিমায় জি-৭ সম্মেলন পূর্ব এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

কিশিদা জানান, ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত জাপানে এসে পৌঁছানো শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ২ হাজার ৩০২ জনে।

শরণার্থীদের মধ্যে ৬০২ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ৭০০ জন নারী। এদের মধ্যে ৪৩৯ জনের বয়স ১৭ বা তার চেয়ে কম, ১ হাজার ৫৬৩ জনের বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এবং অন্য আরও ৩০০ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি।

যুদ্ধ শুরুর পরবর্তী ২ মাসে, অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিল মাসে এসেছে যথাক্রমে ৩৫১ ও ৪৭১ জন।

কিশিদা বলেন, 'আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে এই দিনে রাশিয়া বিনা উস্কানিতে ইউক্রেনে অতর্কিত হামলা চালিয়ে, শুধু ইউক্রেনই নয় পুরো বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এটি এমনই একটি দিন, যা কখনই ভুলব না, ভুলে যাওয়া উচিত নয়।'

তিনি বলেন, '২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে সাধারণ নাগরিকরা গোলাবর্ষণের অব্যাহত হুমকির মধ্যে বসবাস করছেন। তারা আকাশপথে আক্রমণের সাইরেনের শব্দ এবং নিরাপত্তার জন্য হুড়োহুড়ি করার সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।'

কিশিদা ইউক্রেনে অতিরিক্ত ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৭৪২ বিলিয়ন ইয়েন) পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন, যা এ পর্যন্ত জাপানের মোট সাহায্যের পরিমাণ ৭ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে এসেছে।

পশ্চিমা দেশগুলো যেখানে যুদ্ধ ট্যাংকসহ তাদের প্রাণঘাতী সহায়তার সুযোগ প্রসারিত করেছে, সেখানে জাপান এখন পর্যন্ত অস্ত্র সরবরাহে সাংবিধানিক বিধিনিষেধের কারণে ইউক্রেনকে কেবল অ-সামরিক সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী কিশিদা ফুমিওর বিদেশ সফর প্রতিবাদের মুখে পড়েছে।

মে মাসে হিরোশিমায় নির্ধারিত ৭টি অগ্রসর দেশের জোট জি-সেভেনের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের আগে প্রধানমন্ত্রী কিশিদা ফুমিওকে ইউক্রেন সফরে পাঠানোর জন্য জাপান সরকার যখন প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করছে, ঠিক তখনই ব্যাপক প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। 

বুধবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে কিশিদা যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি, তখনই তার কার্যালয়ের সামনে শত শত লোক বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। এসময় তারা প্ল্যাকার্ড হাতে বিভিন্ন স্লোগানও দেন।

জি-সেভেন দেশগুলোর নেতাদের মধ্যে কিশিদাই কেবল গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে রুশ হামলা শুরুর পর থেকে ইউক্রেন সফরে যাননি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে আমন্ত্রণ পাওয়ায় কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা কিয়েভে কিশিদার সফর এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা জানান যে, জি-সেভেনের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর উচিত হবে নেতৃত্ব প্রদর্শন করা।

৭টি শীর্ষস্থানীয় শিল্পোন্নত অর্থনীতির এই গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং পারমাণবিক বোমা দ্বারা আক্রান্ত একমাত্র দেশ জাপান। পারমাণবিক হুমকি মোকাবিলায় অটল প্রতিশ্রুতি দেখানোর জন্য জি-৭ নেতারা মে মাসে হিরোশিমায় মিলিত হবেন।

Comments