গ্রিসে ট্রেন দুর্ঘটনা: নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশি ইদ্রিসও ছিলেন

নিহত মো. ইদ্রিস। ছবি: সংগৃহীত

গ্রিসের ইতিহাসে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ৫৭ জনের মধ্যে এক প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন।

গত ১ মার্চ গভীর রাতে গ্রিসের লারিসা শহরের কাছে মর্মান্তিক এ ট্রেন দুর্ঘটনার ঘটনায় প্রাণ হারান মো. ইদ্রিস।

আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।

গ্রিসের লারিসা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিহত ইদ্রিসের কাপড়ের আলামত থেকে ও ডিএনএসহ বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করে। পরে লারিসা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ দূতাবাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করে।

নিহত ইদ্রিস চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ৮ নম্বর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সাহেব মিয়ার ছেলে।

গত ১ মার্চ স্থানীয় সময় মধ্যরাতের আগে প্রায় ৩০০ জন যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে একটি ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এতে যাত্রীবাহী ট্রেনটির প্রথম দুটি বগিতে আগুন ধরে যায়। এতে বগি দুটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। একে গ্রিসের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।

ঘটনার পরপরই ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেছেন দেশটির অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী কোস্টাস কারামানলিস। এ ছাড়াও, ঘটনার পরপরই লারিসা শহরের স্টেশন মাস্টারকে গ্রেপ্তার করে দায়িত্ব অবহেলার কারণে তার বিরুদ্ধে নরহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

এ দুর্ঘটনার পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না বাংলাদেশি অভিবাসী ইদ্রিসের। সহকর্মীরা তাকে না পেয়ে ফেসবুকে পোষ্ট করেন। পরে গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও অবগত করা হয়। বাংলাদেশ দূতাবাস তাৎক্ষণিক গ্রিসের লারিসা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তখন হাসপাতাল মর্গে বেশ কয়েকটি অজ্ঞাত মরদেহ ছিল। গ্রিসের একটি টিভি চ্যানেলও তার ছবি দিয়ে সংবাদ প্রচার করে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস এথেন্সের প্রথম সচিব বিশ্বজিৎ কুমার পাল বলেন, 'খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইদ্রিসের বিভিন্ন তথ্য ও ব্যবহৃত কাপড় সংগ্রহ করে। পরে তারা কাপড় নিয়ে ডিএনএ টেস্ট করে পরিচয় নিশ্চিত হয়। তারপর তারা বিষয়টি দূতাবাসকে জানায়। ইদ্রিসের মরদেহ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান।'

সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে ভাগ্য বদলের আশায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি জমান ইদ্রিস। পরে সেখান থেকে ইউরোপের দেশ গ্রিসে চলে যান। গ্রিসে বসবাসের অনুমতি পেয়ে ভালোই চলছিল তার দিন। প্রায় ৩ বছর আগে দেশে ছুটিতে এসেও বিয়েও করেন ইদ্রিস। তার এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Comments

The Daily Star  | English

What if India and China stop buying Russian oil?

Donald Trump is tightening sanctions loopholes that fund Moscow's war machine. What does a crackdown on Russia's oil trade mean for global markets — and economic heavyweights like China and India?

4h ago