বাংলায় জ্যোতির্বিজ্ঞান শেখাচ্ছে অ্যাস্ট্রোনমি পাঠশালা

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থীর জ্যোতির্বিজ্ঞান শেখার আগ্রহ থাকলেও, প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে বিস্তারিত জানার সুযোগ স্বল্প। আবার শেখার ক্ষেত্রে অনেকের ভাষাগত একটা বাধাও থেকে যায়। এ চিন্তা থেকেই বাংলায় জ্যোতির্বিজ্ঞান শেখার জন্য 'অ্যাস্ট্রোনমি পাঠশালা' চালুর পরিকল্পনা করেন হাসিবুল হোসেন রিফাত। তার হাত ধরেই শুরু হয় দেশের প্রথম জ্যোতির্বিজ্ঞান শেখার প্ল্যাটফর্ম 'অ্যাস্ট্রোনমি পাঠশালা'।

২০২০ সালে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম ডিজিটাল জ্যোতির্বিজ্ঞান শেখার এডটেক প্ল্যাটফর্ম অ্যাস্ট্রোনমি পাঠশালা। এখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই ২০ থেকে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী বিনামূল্যে জ্যোতির্বিজ্ঞান শিখছে। ৪৬টি জেলার শিক্ষার্থীরা এ শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত মোট ৯ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

অ্যাস্ট্রোনমি পাঠশালার প্রোগ্রামগুলোতে মেন্টর হিসেবে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা যেমন অংশ নেন, তেমনি অ্যাস্ট্রোনমি পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা হাসিবুল হোসেন রিফাতেরও আছে দেশ-বিদেশের অনেক স্বনামধন্য জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক প্রোগ্রামে প্রশিক্ষণ নেওয়ার অভিজ্ঞতা। শিক্ষার্থীরা তাদের কাছ থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের নানা বিষয় সরাসরি শিখতে পারছে।

বাংলায় জ্যোতির্বিজ্ঞান কোর্স থেকে শুরু করে বেসিক অ্যাস্ট্রোনমি ওয়ার্কশপ, অল বাংলাদেশ অ্যাস্টেরয়েড সার্চ ক্যাম্পেইনের মতো আন্তর্জাতিক প্রোগ্রাম পুরো দেশজুড়ে পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। অ্যাস্ট্রোনমি পাঠশালা ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নটরডেম কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন রকমের ওয়ার্কশপ ও ইভেন্ট পরিচালনা করেছে।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু করা অল বাংলাদেশ অ্যাস্টেরয়েড সার্চ ক্যাম্পেইন এমন একটি আন্তর্জাতিক প্রোগ্রাম, যেখানে ঘরে বসে দেশের শিক্ষার্থীরা প্রতি মাসে আবিষ্কার করছে শত শত গ্রহাণু বা অ্যাস্টেরয়েড। আর এ প্রোগ্রামটিতে পার্টনার হিসেবে যুক্ত আছে নাসা। ক্যাম্পেইনের আন্তর্জাতিক অফিসিয়াল রিজিওনাল ট্রেইনার হিসেবে নিযুক্ত আছেন অ্যাস্ট্রোনমি পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা হাসিবুল হোসেন রিফাত এবং চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসার শামস ইবনে হোসেন।

প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে প্রাপ্ত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে দেশের নানা প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এখন পর্যন্ত ৩৫০টিরও বেশি অ্যাস্টেরয়েড বা গ্রহাণু আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিনই তাদের সব প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এবং লাইভ ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জ্যোতির্বিজ্ঞান শিখিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা হাসিবুল হোসেন রিফাত বলেন, 'আমরা ভবিষ্যতে আরও দারুণ সব মেন্টর এবং কন্টেন্ট নিয়ে আসব। বিজ্ঞান বিভাগের বাইরের শিক্ষার্থীরাও যেন সহজে জ্যোতির্বিজ্ঞান শিখতে পারে, সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।'

তিনি আরও বলেন, 'ঘরে ঘরে জ্যোতির্বিজ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে আমাদের টিম দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে এবং আমরা বিশ্বাস করি আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব। কারণ প্রতিনিয়ত আমাদের শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে।'

লক্ষ্য পূরণে রিফাত এবং তার ৪০ জনের দলটি কাজ করে যাচ্ছে অবিরাম। এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ৫টি দেশ, কয়েকটি আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থা এবং অসংখ্য খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীর সঙ্গে কাজ করেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে জ্যোতির্বিজ্ঞানের মানসম্মত সব কন্টেন্ট এবং রিসোর্স।

তারা তাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে  নিয়মিত কনটেন্ট এবং রিসোর্স প্রদান করছে। আপনি চাইলে সেগুলো ঘুরে দেখতে পারেন।

অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল লিংক:

https://www.youtube.com/@astronomypathshalaofficial

অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ লিংক: https://www.facebook.com/astronomypathshala

অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিংক: https://astronomypathshala.com/

দেশের কোনো শিক্ষার্থী যেন জ্যোতির্বিজ্ঞান শেখার রিসোর্সের অভাবে কিংবা মাতৃভাষায় শেখার সুযোগ না থাকার কারণে আক্ষেপে না ভোগে এবং তাদের স্বপ্নগুলো যেন অধরা না থেকে যায় সেই লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠানটি  কাজ করে যাচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh economic recovery 2025

Economy shows signs of healing

If macroeconomic stabilisation has been the interim government's main success, revenue collection is its most glaring failure

9h ago