সাংবাদিক জুলকারনাইনের ভাইয়ের ওপর হামলা: জাতিসংঘ মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ও সিপিজের নিন্দা

সাংবাদিক জুলকারনাইনের ভাইয়ের ওপর হামলা: জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ও সিপিজের নিন্দা

যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামির ভাইয়ের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক ও কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।

গত রাতে এক টুইটে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক মেরি লওলর জানান, ঢাকায় জুলকারনাইন সায়েরের ভাইয়ের ওপর হামলার খবর শুনে তিনি উদ্বিগ্ন। 

এ ছাড়া জুলকারনাইনের পরিবারকে যথাযথ নিরাপত্তা প্রদানের আহ্বান জানিয়ে ঘটনাটি দ্রুত তদন্ত করা উচিত বলে জানান তিনি।

গতকাল কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এক বিবৃতিতে জানায়, সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খানের ভাই মাহিনুর খানের ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সিপিজে-এর এশিয়া প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী বেহ লিহ ই বলেছেন, 'বাংলাদেশি সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খানের ভাইয়ের ওপর এই হামলা প্রবাসে থাকা সাংবাদিকদের পরিবারের যারা দেশে আছেন তাদেরকে টার্গেট করার সবশেষ ঘটনা। কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই এই হামলার অপরাধীদের জবাবদিহি করতে হবে এবং তার পরিবার যাতে নিরাপদে বসবাস করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।'

জুলকারনাইন সায়েরের বরাতে সিপিজে আরও জানায়, স্থানীয়রা তার পরিবারকে জানিয়েছে যে হামলাকারীরা আওয়ামী লীগের সদস্য হুমায়ুন রশিদ জনির সমর্থক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে সিপিজে এর ফোন রিসিভ করেননি জনি। পরে এসএমএস পাঠানো হলে এর উত্তরে তিনি বলেন, 'আমার জীবনে সহিংসতার কোনো ইতিহাস নেই।'

সিপিজে জানায়, সংগঠনটি এর আগেও বিদেশভিত্তিক বাংলাদেশি সাংবাদিকদের দেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক আচরণ নথিভুক্ত করেছে। যার মধ্যে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাংবাদিক শামসুল আলম লিটন এবং আবদুর রব ভুট্টোর ভাইদের গ্রেপ্তার এবং ২০২১ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাংবাদিক কনক সারোয়ারের বোনকে গ্রেপ্তারের ঘটনা রয়েছে।

অন্যদিকে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক দ্য অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) জানায়, অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুকারনাইন সায়ের খানকে দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য টার্গেট করা হয়েছে।

তিনি বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, পক্ষপাতিত্ব এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আল জাজিরার একটি ডকুমেন্টারিতে কাজ করেছিলেন। ২০২১ সালে সেটি প্রচারিত হওয়ার পরপরই বাংলাদেশ সরকার ওই  ডকুমেন্টারি মিথ্যা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছিল।

ওসিসিআরপি জানায়, 'আপাতদৃষ্টিতে যুক্তরাজ্যে সায়ের খানের কাছে পৌঁছাতে না পারার কারণে বাংলাদেশের বাহিনী বাংলাদেশে থাকা তার পরিবারের ওপর হামলা করছে বলে মনে হচ্ছে।'

ওসিসিআরপি প্রকাশক ড্রু সুলিভান বলেন, 'একজন সাংবাদিকের প্রতিবেদনের জন্য তার পরিবারের নির্দোষ সদস্যকে এভাবে আক্রমণ করা কাপুরুষোচিত।'

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র ব্রায়ান শিলারের এক বিবৃতিতে বলেন, 'আমরা আশা করি মামলাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

'Election Commission shamelessly favouring a particular party'

Hasnat Abdullah says police obstructed NCP leaders and activists from entering EC building

1h ago