গভীর রাতে ঢাকার রাস্তায় সুমনকে মারল কে, উত্তর খুঁজে পেয়েছে পুলিশ

সুমন চন্দ্র পাল

গত ৪ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ঢাকার বাড্ডায় প্রগতি সরণির ফুটপাতে সুমন চন্দ্র পালকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১১ দিন পর মারা যান সুমন। আড়াই মাস পর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের কথা জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার গুলশান জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবুল হক সজীব জানান, এ ঘটনায় সুমনের (২৭) স্ত্রী প্রতিমা রানী পাল অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করে বাড্ডা থানায় মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তে তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্য, মালিবাগ আবুল হোটেল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে হত্যাকাণ্ডের উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়।

ওই গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সুমন গুলশান-২ এ চাপঘর নামের একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন। রেস্টুরেন্টে সিনিয়র ওয়েটার ছিলেন তিনি। সেদিন রাতে কাজ শেষে গুদারাঘাটে নিজের মেসে ফিরছিলেন তিনি। রাত সোয়া ২টার দিকে উত্তর বাড্ডায় লাজ ফার্মার বিপরীত দিকে প্রগতি সরণিতে একটি রিকশায় করে ৩ জন এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে সহকর্মীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তিনি মারা যান।

গত ১৭ জানুয়ারি ভোলায় প্রতিমা রানী পালের সঙ্গে বিয়ে হয় সুমনের। বিয়ের ১৭ দিনের মাথায় খুন হন তিনি। অসহায় পরিবারের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন পিতৃহীন সুমন।

ডিবি কর্মকর্তা মাহবুবুল হক বলেন, সুমন হত্যায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী মো. আরিফ তালুকদারকে গত ৭ মার্চ এবং ইমরান হোসেন ও শ্যামল রায়কে গত ১৭ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়। বাড্ডায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, রিকশা ও ঘটনার সময় আসামিদের পরিহিত কাপড় জব্দ করা হয়।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা ওই রাতে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে রিকশা নিয়ে মধ্যবাড্ডা থেকে বের হন। তারা তাদের টার্গেট খুঁজতে খুঁজতে মধ্যবাড্ডা থেকে রামপুরা বাজারে যান। সেখান থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত ঘোরাফেরা করে আবার রামপুরার দিকে আসার পথে সুবাস্তু মার্কেটের বিপরীতে সুমন চন্দ্র পালকে পান। তারা সুমনের সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ ও মোবাইল ফোন নিয়ে টানাটানির এক পর্যায়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে ৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান।

সন্দেহভাজন হত্যাকারীদের মধ্যে আরিফ ইতোমধ্যে আদালতে দায় স্বীকারে করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আর ইমরানের বিরুদ্ধে ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ২টি মাদক মামলা, ১টি ডাকাতি মামলা ও ২টি দস্যুতা মামলা ও শ্যামলের বিরুদ্ধে ১টি ডাকাতির প্রস্তুতি মামলাও ২টি মাদক মামলা আছে বলে যোগ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

7h ago