সেরা দলই জিতবে এবং সেটা হবে ইন্টার, আশা লাউতারোর
তাদের পক্ষে বাজি ধরার লোক ছিল খুব কমই। তারপরও প্রত্যাশা ছাপিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ইন্টার মিলান। ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় মঞ্চে খেলতে নামা নিয়ে ভীষণ রোমাঞ্চিত তাদের স্ট্রাইকার লাউতারো মার্তিনেজ। তার আশা, শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে সেরা দল হিসেবে তারাই জিতবেন ও শিরোপা উঁচিয়ে ধরবেন।
আগামী ১১ জুন এবারের মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হবে ইন্টার। ম্যাচের ভেন্যু তুরস্কের ইস্তানবুলের আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়াম।
ফাইনালে ফেভারিট তকমা গায়ে নিয়ে সিটি নামবে মাঠে। ইতোমধ্যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপ ঘরে তোলা পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা বিভোর 'ট্রেবল' জয়ের স্বপ্নে। আর সেটা পূর্ণতা পাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার মাধ্যমে– যে শিরোপার জন্য গত এক যুগের বেশি সময় ধরে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মালিকানাধীন ক্লাবটি।
ম্যান সিটির সামর্থ্য সম্পর্কে ভালোভাবেই জানা আছে লাউতারোর। তবে কঠিন প্রতিপক্ষের বিপরীতে নিজেদের খাটো করে দেখছেন না তিনি। সোমবার উয়েফাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, 'এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে তারা বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোর একটি। তারা যে ঘরানার ফুটবল খেলে সেটা আমি সত্যিই পছন্দ করি এবং প্রতিপক্ষ হিসেবে তাদের মোকাবিলা করা খুবই কঠিন হবে। তবে গ্রুপ পর্ব ও নকআউট পর্বে আমরা কঠিন প্রতিপক্ষদেরই মুখোমুখি হয়েছি এবং খুবই ভালো পারফর্ম করেছি।'
বায়ার্ন মিউনিখ ও বার্সেলোনার মতো শক্তিশালী ক্লাবের সঙ্গে একই গ্রুপে ছিল ইন্টার। গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে ইতালিয়ান সিরি আর দলটি ওঠে নকআউটে। এরপর একে একে তারা বিদায় করে এফসি পোর্তো, বেনফিকা ও এসি মিলানকে। সিটির মতো নেরাজ্জুরিরাও দুটি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে– কোপা ইতালিয়া ও সুপারকোপা ইতালিয়ানাতে। তাছাড়া, সাম্প্রতিক সময়টা দারুণ কাটছে ইন্টারের। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ ১১ ম্যাচের মাত্র একটিতে হেরেছে তারা, জিতেছে বাকি দশটিতে।
উপভোগের মন্ত্রে বিশ্বাসী বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন তারকা লাউতারো। তার চাওয়া, সেরা দল হিসেবে ফাইনালে সিটিজেনদের হারিয়ে ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন হবে ইন্টার, 'আমাদের উপভোগ করার চেষ্টা করি উচিত কারণ প্রতিদিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেলার সুযোগ মেলে না। আমাদের সবার জন্য স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো ব্যাপার হতে যাচ্ছে এটি। এখন যেটা বাকি আছে তা হলো পরিশ্রম করা ও যতটা সম্ভব ভালো খেলা। সেরা দলই জিতবে এবং আশা করি, ম্যাচের শেষে আমরা শিরোপা উঁচিয়ে ধরব।'
বিশ্বকাপে গোল না পেলেও ক্লাব পর্যায়ে ছন্দ দেখিয়ে চলেছেন লাউতারো। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৬ ম্যাচে ২৮ গোল ও ১১ অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। ইন্টারের আক্রমণভাগে তার সঙ্গীদের মধ্যে আছেন বসনিয়ান স্ট্রাইকার এদিন জেকো ও বেলজিয়ান স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু। ফাইনালে এই দুজনও পার্থক্য গড়ে দেওয়ার মতো যথেষ্ট ক্ষমতাধর।
লুকাকু ও ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সিটিতে খেলা জেকোর খেলার ধরন নিয়ে লাউতারোর বিশ্লেষণ এমন, 'তারা ভিন্ন ধরনের খেলোয়াড়। এদিন বল পায়ে রেখে খেলতে পছন্দ করে, সে নিচে নেমে আসে এবং সতীর্থদের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে। অন্যদিকে, রোমেলু সাধারণত ফাঁকা জায়গাগুলো দিয়ে আক্রমণে যায় এবং প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের তার অনুগামী করিয়ে দ্বিতীয় স্ট্রাইকারের জন্য জায়গা তৈরি করে।'
যে পরিস্থিতিরই উদ্ভব হোক না কেন, ইন্টারের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী ফুটবলার, 'দুজনের সঙ্গেই আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আমি তাদের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি এবং দলের যা প্রয়োজন তাই করি। এদিনের জন্য জায়গা বানাতে যদি আমাকে ফাঁকা জায়গা দিয়ে আক্রমণ করতে হয়, তাহলে আমি এটা সহজেই করতে পারি এবং একই জিনিস রোমেলুর জন্যও প্রযোজ্য।'
Comments