টানা চতুর্থ মাস বেড়েছে ইন্টারনেট গ্রাহক

 ইন্টারনেট, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, বিটিআরসি

দেশের মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে। গত মে মাসে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা এক মাস আগের তুলনায় প্রায় ১২ লাখ বেড়েছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, এ নিয়ে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকের মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ।

গত ফেব্রুয়ারির পর থেকে টানা চতুর্থ মাসে ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে।

৬ মাস পর গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। গত মার্চে ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বেড়েছে।

মে মাসে মোবাইল ইন্টারনেটের বাড়তি গ্রাহক আসায় তা প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

১২ লাখ নতুন গ্রাহক নিয়ে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৫৫ লাখ।

মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলোর কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ডিজিটাল সেবার জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে।

তারা জানান, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মোবাইল সাবস্ক্রিপশন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

'আমরা গ্রাহকদের মধ্যে একটি নতুন প্রবণতা লক্ষ্য করছি' উল্লেখ করে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার শাহেদ আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রাহকরা এখন নানান ধরনের ডিজিটাল সেবা—যেমন ওভার-দ্য টপ মিডিয়া, গেমিং ইত্যাদির জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। এটি গ্রাহকের সংখ্যা বাড়িয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আগে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকরা সাধারণত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউটিউবের জন্য আমাদের সেবা নিতেন।'

মে মাসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখে অপরিবর্তিত আছে।

বিটিআরসি প্রতি ৩ মাস পরপর তথ্য দেওয়ায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহকের প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বিটিআরসি প্রায় সব ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের (আইএসপি) কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ব্রডব্যান্ড গ্রাহকের সংখ্যা জানিয়ে থাকে।

আইএসপিগুলো বলছে, তারা মে মাসে গ্রাহকের সংখ্যা নিয়ে ইতিবাচক প্রবণতা দেখেছে।

শীর্ষ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাম্বার আইটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল হাকিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মে ও জুনে গ্রাহকের সংখ্যা ইতিবাচক ছিল।'

তবে অনেক গ্রাহক একাধিক সিম ব্যবহার করায় ঠিক কতজন ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন বিটিআরসির তথ্য দিয়ে তা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স প্রকল্পের তথ্য অনুসারে, দেশে ৫ বছরের বেশি বয়সী ৪১ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।

জরিপে বলা হয়, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে পার্থক্য এখনো দেখা যাচ্ছে। গ্রাম ও শহর এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যার পাশাপাশি লিঙ্গভেদেও এই পার্থক্য স্পষ্ট।

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ গ্রামীণ এলাকায় বসবাস করেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শহরাঞ্চলে উন্নত অবকাঠামো ও সংযোগ থাকলেও গ্রামাঞ্চলে অপর্যাপ্ত ব্রডব্যান্ড কভারেজ ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা আছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরুষদের তুলনায় নারীরা ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন। ইন্টারনেট ব্যবহার ও ডিজিটাল দক্ষতাতেও লিঙ্গ বৈষম্য দেখা যাচ্ছে।

নানান কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য অব্যাহত আছে।

গত মাসে প্রকাশিত বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স অনুসারে, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে ৪৭ শতাংশ পুরুষ ও ৩৪ শতাংশ নারী।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

3h ago