রেকর্ড গড়েই জিততে হবে বাংলাদেশকে

জয়ের জন্য আফগানদের দেওয়া ৩৩২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে হবে বাংলাদেশকে। এতো বড় রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের।

সিরিজে টিকে থাকতে হলে জয়ের কোনো বিকল্প নেই বাংলাদেশের। সেই লক্ষ্যে সূচনাটা হয় বেশ বিবর্ণ। টাইগারদের হতাশা উপহার দিয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহীম জাদরান। গড়েন রেকর্ড জুটি। তাতে বিশাল লক্ষ্যই পেয়েছে টাইগাররা। শেষ দিকে ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে লক্ষ্য হতে পারতো আরও বড়। তবে এরপরও জিততে হলে নতুন রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশকে।  

শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩৩২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে আফগানিস্তান। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩৩১ রান তুলতে পারে সফরকারী দলটি।

ফলে কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে টাইগারদের জন্য। কারণ এতো বড় লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। সর্বোচ্চ ৩২২ রান তাড়া করে জিততে পেরেছে তারা। ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া এ লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ। এছাড়া ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২২ রান করে জয় পেয়েছিল টাইগাররা।

বাংলাদেশের ভোগান্তির মূল কারণই ছিলেন ওপেনাররা। পুরো ৩৬ ওভার ব্যাট করে ২৫৬ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন গুরবাজ ও ইব্রাহীম। এর আগে ওয়ানডেতে আফগানদের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি ছিল ২১৪ রানের। ২০১০ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সেই জুটিটি গড়েছিলেন মোহাম্মদ শাহজাদ ও করিম সাদিক। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে আফগানদের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি ছিল ৭৯ রানের। গত বছর এই চট্টগ্রামের মাঠেই সে জুটি গুরবাজের সঙ্গী ছিলেন রিয়াজ হাসান।

বেশি ভুগিয়েছেন গুরবাজ। শুরুতে অন্য প্রান্তে কিছুটা ধীর গতিতেই ব্যাট করছিলেন ইব্রাহীম জাদরান। যেখানে শুরু থেকেই গুরবাজ ছিলেন আগ্রাসী। ৪৮ বলে ফিফটি স্পর্শ করা এ ব্যাটার সেঞ্চুরি পূরণ করেন ঠিক ১০০ বলে। ব্যক্তিগত ১৪৫ রানে এসে সাকিব আল হাসানের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন। রিভিউ নিয়েছিলেন। বল লেগ স্টাম্প প্রায় মিস করে যাচ্ছিল। আম্পায়ার্স কলের কারণে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়নি। ১২৫ বলের ইনিংসে ১৫টি চারের সঙ্গে ৮টি ছক্কা মেরেছেন গুরবাজ।

তবে সাকিবের বিপক্ষে এর আগে সফল ছিলেন এই ওপেনার। তার বলেই সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেছিলেন। এর আগে এই সাকিবকে টানা দুই বলে চার ও ছক্কা মেরে পূরণ করেছিলেন নিজের ফিফটি। অন্যদিকে ইব্রাহীম ফিফটি স্পর্শ করেন ৭৫ বলে।

গুরবাজকে ফেরানোর ঠিক পরের বলে রহমত শাহ রানআউট হতে পারতেন। তবে মুশফিকের ভুলে বেঁচে যান তিনি। আগেই তার গায়ে লেগে স্টাম্প ভাঙে। তবে খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রহমত। পরের ওভারে তাকে তুলে নেন মোস্তাফিজুর রহমান। এক ওভার পর অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শাহিদিকে বোল্ড করে দেন ইবাদত হোসেন। তাতে কিছুটা স্বস্তিতে ফিরে আসে টাইগারদের। কমে আসে রানের গতি।

তবে এক প্রান্ত আগলে সেঞ্চুরি তুলে নেন ইব্রাহীম। ঠিক ১০০ রান করার পর শিকার হয়েছেন মোস্তাফিজের। ১১৯ বলে ৯টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া শেষ দিকে ১৫ বলে ২৫ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ নবি। অন্যথায় শেষ দিকে আফগানদের চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। ৭৫ রানের ব্যবধানে ৯টি উইকেট হারায় তারা।

এদিন টস জিতেছিল বাংলাদেশই। তবে আগে আফগানদের ব্যাটিংয়ে পাঠান তামিম ইকবাল পরিবর্তে নেতৃত্বে থাকা লিটন দাস। হয়তো ভেবেছিলেন শুরুতে বোলাররা কিছুটা সুবিধা পেতে পারেন। কারণ এই মাঠেই প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে শুরু থেকেই সংগ্রাম করেছেন তারা। কিন্তু কোনো ধরণের সুবিধা আদায় করে নিতে পারেননি টাইগার বোলাররা। আলগা বল করেছেন নিয়মিত। যার পুরোপুরি সুবিধা নিয়েছে সফরকারীরা।

তাতে রানও এসেছে দ্রুতগতিতে। তাদের ধারহীন বোলিংয়ে নিজেদের রেকর্ড ওপেনিং জুটি পেয়ে যায় সফরকারীরা। জুটি ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেও নিয়মিত পাঁচ বোলারের বাইরে অন্য কোনো পার্ট টাইম বোলার দিয়েও চেষ্টা করেননি অধিনায়ক লিটন। নিজের দশম ওভার করতে এসে চোটে না পড়লে নাজমুল হোসেন শান্তকে ব্যবহারই করা হতো না তার।

Comments