ভারতের কাছে হেরে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের
১১ বছর পর হোম অব ক্রিকেটে খেলতে নামে বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে ফেরাটা রাঙিয়ে রাখতে পারলো না তারা। সাদামাটা ব্যাটিংয়ের পর ক্যাচ মিস আর বাজে ফিল্ডিংয়ে ভারতের বিপক্ষে হারতে হয় তাদের। ফলে সিরিজে পিছিয়ে পড়ল নিগার সুলতানার দল।
রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১১৪ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ২২ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছায় সফরকারীরা।
এর আগে সবশেষ ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরের মাঠে খেলেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। এই মাঠে সেটাই ছিল মেয়েদের প্রথম ও একমাত্র সিরিজ। দীর্ঘ দিন পর ফেরাটা রঙিন করতে পারল না তারা।
আগে ব্যাট করে এদিন ভারতকে বড় কোনো চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিতে পারেনি বাংলাদেশ। শুরুতে বেশ কিছু উইকেট তুলে চেপে ধরতে পারলে ভিন্ন কিছু হতে পারতো। সূচনাটা অবশ্য ভালো ছিল তাদের। রানের খাতা খোলার আগেই শেফালি ভার্মাকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মারুফা। এরপর জেমিমাহ রদ্রিগেজকে বোল্ড করে দিয়ে আশা জাগিয়েছিলেন সালমা খাতুন।
কিন্তু স্মৃতি মান্দানার সঙ্গে ভারতীয় অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌরের জুটিই ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় বাংলাদেশকে। তৃতীয় উইকেটে ৭০ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। স্মৃতিকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন সুলতানা খাতুন। এরপর বাকি কাজ ইয়াস্তিকা ভাটিয়াকে নিয়ে শেষ করেন অধিনায়ক হারমানপ্রিত।
ভারতীয় অধিনায়ক অবশ্য আউট হতে পারতেন অনেক আগেই। ব্যক্তিগত ২৪ রানে থাকা অবস্থাতেই সুলাতানার বলে টপএজ হয়ে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে সে ক্যাচ ছেড়ে দেন এই স্পিনার। শেষ পর্যন্ত ৫৪ রানে অপরাজিত থাকেন হারমানপ্রিত। ৩৫ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। স্মৃতির ব্যাট থেকে আসে ৩৮ রান। বাংলাদেশের হয়ে ২টি উইকেট নেন সুলতানা। একটি শিকার মারুফার।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দেখেশুনেই খেলতে থাকে বাংলাদেশ। তবে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মিন্নু মানির উপর চড়াও হন শামিমা সুলতানা। টানা দুই বলে একটি ছক্কা ও চার মেরে রানের গতি বাড়ান তিনি। তবে এরপরের বলে আরও একটি হাঁকাতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন শামিমা। ভাঙে বাংলাদেশের ২৭ রানের ওপেনিং জুটি।
এরপর সোবহানা মোস্তারিকে নিয়ে দলের হাল ধরেন সাথি। আমানজট কোউরের করা ইনিংসের সপ্তম ওভারে টানা তিনটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। তবে ২৫ রানের জুটি গড়ে পুজা ভাস্ট্রাকারের শিকার হন এই ওপেনার। স্কোরবোর্ডে আর ৫ রান যোগ হতে অধিনায়ক নিগার সুলাতানাকেও হারায় বাংলাদেশ। তাতে কিছুটা চাপে পড়ে তারা।
অধিনায়ককে হারানোর পর উইকেটে নেমে দেখেশুনেই খেলতে থাকেন স্বর্ণা। সোবহানার সঙ্গে ২১ রানের জুটির পর রিতু মনির সঙ্গে ৩৩ রানের জুটি গড়েন এই ব্যাটার। তবে রানের গতিও কমে আসে। মাঝে ১০ ওভারে মাত্র একটি বাউন্ডারি পায় বাংলাদেশ। ১৭ ও ১৮তম ওভারে স্বর্ণা একটি করে ছক্কা হাঁকালেও শেষ দুই ওভারে আসেনি কোনো বাউন্ডারি। ফলে মাঝারী পুঁজি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশকে।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ রান করে অপরাজিত থাকেন স্বর্ণা। ২৮ বলে ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। সোবহানা ২৩ ও সাথি রানী ২২ রান করেন। শামিমার ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান। ভারতের পক্ষে একটি করে উইকেট নিয়েছেন পুজা, মানি ও শেফালি ভার্মা।
Comments