সিনিয়র ব্যাটারদের কাঠগড়ায় তুললেন নিগার
প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত হলেও ঘরের মাঠে ম্যাচ হওয়ায় আশাবাদী ছিল বাংলাদেশ। তার উপর মিরপুরের মাঠে ১১ বছর পর মাঠে নেমেছিলেন মেয়েরা। কিন্তু লড়াইটাও জমিয়ে করতে পারেনি তারা। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় যথেষ্ট পুঁজিই মিলেনি তাদের। আর এই ব্যর্থতার জন্য দলের সিনিয়র ব্যাটারদের কাঠগড়ায় তুললেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি।
রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৪ রান তুলতে পারে স্বাগতিক দলটি। জবাবে ২২ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছায় ভারত।
অথচ অভিষিক্ত সাথি রানী ও শামিমা সুলতানার ব্যাটে শুরুটা ভালো ছিল বাংলাদেশের। ২৭ রানের ওপেনিং জুটি। পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে আসে ৩৪ রান। কিন্তু এরপর মাঝের ওভারগুলো তো বটেই স্লগ ওভারেও রানের গতি বাড়াতে পারেননি সোবহানা মোস্তারি ও রিতু মনিরা। ৩৩ বল খেলে ২৩ রান করে আউট হয়ে যান সোবহানা। রিতু আউট হন ১৩ বলে ১১ রান করে।
মাঝের ওভারগুলোতে আরও কিছুটা গতিশীল ক্রিকেট খেলতে পারলে ভারতকে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ জানাতে পারতেন বলে মনে করেন অধিনায়ক নিগার, 'মিডল অর্ডার আমার কাছে মনে হয় যে, ওইখানে বেশি বল ডট হয়ে গেছে। উইকেট কিন্তু একটু লো স্লো ছিল। টার্নও যেহেতু ছিল ১২০-২৫ ও যদি আমরা করতে পারতাম অ্যাটলিস্ট ১৪০ যেটা আমরা করতে পারতাম। তাহলে হয়তো ওরা আমাদেরকে আরও ডিফিকাল্ট ওয়েতে খেলত।'
ভারত সিরিজে এবার ফারজানা হক পিংকি, রুমানা আহমেদ ও জাহানারা আহমেদের মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের বাদ দিয়ে স্কোয়াড ঘোষণা করে বিসিবি। তাই এদিন ভারতের বিপক্ষে সুযোগ পান কিছু তরুণ ক্রিকেটার। অভিজ্ঞতার ঘাটতি ছিল দলে। কিন্তু দেখা তরুণদের তুলনায় নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি অভিজ্ঞরাই।
'আমার কাছে মনে হয় যে, ইন্টেন্টডের একটা অভাব ছিল। এক্সপেরিয়েন্স বলতে কি। যখন আপনি ন্যাশন্যাল টিমের জার্সি পড়ে নামবেন, তখন আপনি অবশ্যই এক্সপেরিয়েন্সড। তাই আপনাকে নামানো হচ্ছে। কারণ, আমরা কন্টিনিউয়াসলি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছি। হয়তো বা ইন্টারন্যাশন্যাল ম্যাচ খেলছি না। কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছি। আমাদের ওই সিচুয়েশনে কী করতে হবে সেটা বারবার কোচিং স্টাফরা প্র্যাকটিস করাচ্ছেন।'
'কেন পারছিনা? ভেতর থেকে একটা বিষয় থাকেই। অনেক সময় ইন্ডিভিজুয়ালি কিছু প্লেয়ারের প্রেশার কাজ করে। যখন দুই একটা বল ডট হয়ে যায়। সেটাকে ওভার কাম করতে আরও দুইটা বল ডট হয়ে যায়। সো এইভাবে হয়ে যাচ্ছে। যখন স্বর্ণা এই কাজটা করছে বা অনূর্ধ্ব-১৯ খেলে আসছে, তাদের জন্য সেটা ঠিক আছে। তাদের জন্য ওকে। হয়তোবা উপরের লেভেলের ক্রিকেটটা একটু খেলছে। বাট যারা রেগুলার বাংলাদেশের হয়ে খেলছে তাদের কাছ থেকে এমন ব্যাটিং একটু হতাশ হবেই,' সিনিয়রদের থেকে কাঙ্ক্ষিত পারফরম্যান্স না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
সিনিয়রদের ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিয়ে আরও বলেন, 'স্কিল তো আছে। স্কিলফুল তারা। অবশ্যই পটেনশিয়াল আছে। তাই তো ন্যাশন্যাল টিমে তারা খেলছে। অনেকদিন ধরে। প্রব্লেমটা হচ্ছে, আমার কাছে মনে হয়, এই জায়গা থেকে ইন্ডিভিজুয়ালি প্লেয়ারদেরকে বের হয়ে আসতে হবে। যখন একটা প্লেয়ার ভালো একটা স্টার্ট পায়, সে কেন ২৫ এর পরে আউট হবে। তাকে ইনিংসটা অবশ্যই ক্যারি করতে হবে। শট সিলেকশনের প্রতি আরেকটু চিন্তা ভাবনা করতে হবে। সিচুয়েশনটা কী ডিমান্ড করতেছে।'
'আমরা না অনেক সময় দেখছি না। আমার কাছে মনে হয় ল্যাক অব অ্যাটেনশনও হতে পারে। আমার কাছে মনে হয়, আমার মতো খেলে গেলাম। এমনও হতে পারে। যদি একটু ওভারকাম করতে পারি… স্কিল থাকলে কেন পারফরম্যান্স হবে না। এটা আমাদের সবারই প্রশ্ন। আমার কাছে মনে হয়, যত দ্রুত ক্যামব্যাক করা যায়, তত দ্রুত… সিরিজ যেন ওদেরকে না দেই, সেটাই আমাদের উদ্দেশ্য,' যোগ করেন অধিনায়ক।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে জাতীয় দলে খেলা সোবহানার ব্যর্থতার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, 'সোবহানার বিষয়টা ও কিন্তু অনেক স্কিলফুল ব্যাটার। ও যেভাবে খেলে। সবদিক থেকে শট আছে। ও স্ট্রাগল করছিল। একটা বল ক্যানেক্ট করতে পারছিল না। হয়তো পরের বল হিট করতে যাচ্ছে। টাইমিং উপর চিন্তা করছিল না। এইটা যদি বেটার করে, ওর কাছ থেকে আরও বেটার স্ট্রাইকরেটটা বেটার হয়, তাহলে মিডল অর্ডারে রানটা একটু বেশি আনতে পারব।'
Comments