‘স্বামীর মারধরে’ আইসিইউতে স্কুলশিক্ষক

প্রতীকী ছবি

শক্ত কিছু দিয়ে একজন বয়স্ক নারীকে পেটাচ্ছেন একজন বয়স্ক লোক। লোকটিকে থামানোর চেষ্টা করছেন একজন কম বয়সী নারী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, তা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন অনেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারীর নাম সুদীপ্তা রায় ঘোষ (৬৭), পেশায় শিক্ষক। যিনি পেটাচ্ছেন তিনি তার স্বামী সুনীল রঞ্জন ঘোষ (৭০), রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী।

ফেসবুকে অমল কুমার নামে একটি প্রোফাইল থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে। পোস্টদাতা নিজেকে সুদীপ্তা রায়ের ভাই বলে দাবি করেন। তিনি জানান, সুদীপ্তা রায় ঢাকার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক।

সুদীপ্তা ঘোষের স্বামী সুনীল ঘোষ বাংলাদেশ টেলিভিশনের সংগীত পরিচালক। বাড়িতে রবীন্দ্রসংগীত শেখাতেন। আগে বরিশালে কৃষি ব্যাংকে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন। হৃদ্‌রোগ হওয়ার পর ২০০৭ সালে চাকরি ছেড়ে পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন।

এই দম্পতির একমাত্র সন্তান শঙ্খময় ঘোষ একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করে এখন ঢাকার একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তার স্ত্রীও চিকিৎসক। তাদের একটি শিশুসন্তান রয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, সুদীপ্তা রায়ের '৫ কোটি টাকা' পেতে স্বামী সুনীল রঞ্জন ঘোষ ও ছেলে শঙ্খময় ঘোষ গত ১৬ জুলাই তাকে মারধর করেন। মারধরে অসুস্থ হয়ে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।

গতকাল রোববার সরেজমিনে পপুলার হাসপাতালে গেলে সুদীপ্তার পরিবারের কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হাসপাতাল কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যিনি অসুস্থ হয়েছেন তার ছেলে চিকিৎসক, তিনিই ভর্তি করেছেন। রোগী আইসিইউতে ভর্তি। নৈতিকতা বিবেচনায় এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না।'

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুদীপ্তার স্বামী সুনীল রঞ্জন। তার দাবি, মারধরে নয়, রাগ হয়ে প্রেশার, অ্যাজমা আর ঘুমের ওষুধ বেশি মাত্রায় খেয়ে ফেলার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সুদীপ্তা।  

অন্যদিকে '৫ কোটি টাকা নিতে চাওয়া'র অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ডা. শঙ্খময় ঘোষ।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার বাবা-মায়ের মধ্যে সমস্যা আছে, তাদের মধ্যে প্রায়ই কলহ চলে। কিন্তু ৫ কোটি টাকার তথ্য ভিত্তিহীন। আমরা ভাড়াবাসায় থাকি। এত টাকা কোথায় পাব? আর যদি এত টাকা থাকেও একমাত্র সন্তান হিসেবে সেটা তো আমারই পাওয়ার কথা। এর জন্য ঝামেলা করতে হবে কেন?'

সুদীপ্তা রায় ঘোষের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখন আগের চেতে ভালো। কথা বলতে পারছেন, লিখতে পারছেন।'

তার মা মুক্তিযোদ্ধা কি না জানতে চাইলে শঙ্খঘোষ বলেন, 'তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। অনেক জার্নালে তার নামও আছে। কিন্তু এখনো সার্টিফিকেট পাননি।'

এ ঘটনায় সুদীপ্তা ঘোষের ভাই মামলা করবেন বলে জানালেও এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।

ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম বলেন, 'এ ঘটনায় এখনো মামলা-জিডি হয়নি। আমরা ভিডিও দেখেছি। এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।'

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

46m ago