কেএনএফ-শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব

কেএনএফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক। ছবি: স্টার

দেশের পার্বত্য অঞ্চলে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএফ) ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সংঘাত নিষ্পত্তির জন্য প্রতিষ্ঠা হওয়া শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফের মধ্যে দ্বিতীয় দফা ভার্চুয়াল সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১০টায় বান্দরবান জেলা পরিষদের সভাকক্ষে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র ও বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যা দ্য ডেইলি স্টারকে বৈঠকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

৩ ঘণ্টার এই সংলাপে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষ থেকে কেএনএফের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে, গত ১৯ জুলাই শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের মধ্যে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কেএনএফ যেসব দাবি তুলেছিল, সেগুলো লিখিত আকারে পাঠাতে বলা হয়েছিল। তারা এখনো পাঠাতে পারেনি। তারা সেগুলো সিদ্ধান্ত নিয়ে পাঠানোর কথা বলেছে। এ ছাড়া কেএনএফের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সে বিষয়েও তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানোর কথা বলেছে।'

এর বাইরে কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'তারা (কেএনএফ) আগের বিষয়গুলো তুলে ধরেছে। আমরা বলেছি তাদের দাবিগুলো লিখিত আকারে জমা দিতে। কারণ ডকুমেন্ট ছাড়া আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব না। আরও বলেছি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো প্রস্তাবনা নিয়ে সংলাপে বসা সম্ভব না।'

'আমাদের মূল কাজ আস্থা অর্জন করা, তাদের সঙ্গে সংলাপের প্রক্রিয়া চালিয়ে সমাধানের জন্য তাদের দাবিগুলো সরকারের কাছে তুলে ধরা,' যোগ করেন তিনি।

দ্বিতীয় দফা সংলাপে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লালজারলম বম এবং সাধারণ সম্পাদক লালথাং জেল বম, ধর্মীয় গুরু পাকসিম বম, কৃপা ত্রিপুরা, খুমী সোস্যাল কাউন্সিলের উপদেষ্টা লেলুং খুমী, অ্যাডভোকেট বাসিংথুয়াই মারমা, বাংলাদেশ মারমা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মংচিংনু মারমা, সাংবাদিক বুদ্ধজ্যেতি চাকমা ও উজ্জ্বল তঞ্চঙ্গ্যা।

কেএনএফের পক্ষে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মইয়া ওরফে লালজং সই বম, মেজর লিয়ানা ওরফে জেরসিং লিয়ান বম, কর্নেল ভাপুয়া ওরফে লালসাংলম বম এবং মেজর স্টে ওয়াড ওরফে লালসাং রেস বম সংলাপে অংশ নেন বলে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি জানিয়েছে।

২০২২ সালের শুরুর দিকে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানা যায়।

সংগঠনটি বম, পাংখোয়া, লুসাই, খিয়াং, খুমি ও ম্রোদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।

রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাইছড়ি, বিলাইছড়ি ও বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদমসহ ৯টি উপজেলা নিয়ে 'কুকি-চিন রাজ্য' গঠনের দাবি এই সংগঠনের এবং তারা একপর্যায়ে সম্প্রতি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র সংঘাতে জড়ায়।

এতে এসব এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল করতে ৩০ মে বান্দরবান জেলার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি করা হয় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। 

১৮ সদস্যের এই কমিটির আহ্বায়ক বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্য শৈ হ্লা মারমা এবং সদস্যসচিব বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লালজারলম বম। জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যাকে কমিটির মুখপাত্র হিসাবে রাখা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
IPO drought in Bangladesh 2025

One lakh stock accounts closed amid IPO drought in FY25

The stock market has almost closed the books on the fiscal year (FY) 2024-25 without a single company getting listed through an initial public offering (IPO), a rare event not seen in decades.

12h ago