মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে আরও ৫ চিকিৎসক গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত

মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে খুলনায় আরও ৫ চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

আজ সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানায়, খুলনার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মেডিকেল প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম মূলহোতা ডা. তারিমসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তারা হলেন—খুলনা শহরের মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টার 'থ্রি ডক্টরস' এর মালিক ডা. মো. ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম (৪০), ডা. লুইস সৌরভ সরকার (৩০), ডা. মুসতাহিন হাসান লামিয়া (২৫), ডা. শর্মিষ্ঠা মণ্ডল (২৬) ও ডা. নাজিয়া মেহজাবিন তিশা (২৪)।

এর আগে সোমবার দুপুরে খুলনায় এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. লুইস, ডা. তিশা, ডা. শর্মিষ্ঠা ও ডা. লামিয়ার পরিবারের সদস্যরা জানান, গত শুক্রবার থেকে এই ৪ চিকিৎসক নিখোঁজ। পরিবারের পক্ষ থেকে ঢাকায় সিআইডি সদর দপ্তরে গেলেও তারা কোথায় আছেন এবং কেন তাদের আটক করা হয়েছে সে বিষয়ে কর্মকর্তারা কোনো তথ্য দেননি বলে অভিযোগ করেন তারা।

জানতে চাইলে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, গত শনি ও রোববার খুলনার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪ চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানায়, ডা. মো. ইউনুচ উজ্জামান খাঁন তারিম (৪০) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক। তিনি নিজেকে 'ডাক্তার তৈরির কারিগর' হিসেবে পরিচয় দেন। মেডিকেল প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে অবৈধভাবে কয়েকশ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন ডা. তারিম। তার এবং তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে প্রায় ২৫ কোটি টাকার লেনদেন পাওয়া গেছে। তিনি হাসপাতাল, ফ্ল্যাট, জমি, মাছের ঘের, হোটেল শেয়ারসহ বিপুল সম্পদ গড়েছেন।

ডা. তারিমের বিরুদ্ধে একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এর আগেও প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে বলে জানায় সিআইডি।

ডা. লুইস সৌরভ সরকার (৩০) খুলনা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তিনি মেডিকেল ভর্তি কোচিং 'থ্রি ডক্টরস' এর শিক্ষক। বর্তমানে একটি বেসরকারি এনজিওতে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত।

ডা. মুসতাহিন হাসান লামিয়া (২৫) ২০১৫-১৬ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় ১১ তম স্থান অর্জন করেন। তিনি 'থ্রি ডক্টরস' কোচিং সেন্টারের পরিচালক ডা. তারিমের স্পেশাল ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাকে বাসায়ও প্রাইভেট পড়াতেন ডা. তারিম। তারিমের কাছ থেকে প্রশ্ন পেয়ে তিনি মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি পরীক্ষায় ১১ তম হওয়ার পরও তিনি ৪টি ফাইনাল প্রফেশনাল এক্সামিনেশনের সব বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন। পরবর্তীতে একাধিকবারের চেষ্টায় তিনি পাশ করেছেন। লামিয়ার ভর্তির জন্য তার স্বামী শেখ ওসমান গনি ও ডা. তারিমের মাঝে প্রায় ১৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বলে সিআইডি জানায়।

অন্যদিকে ডা. শর্মিষ্ঠা মন্ডল (২৬) ও ডা. নাজিয়া মেহজাবিন তিশা দুজনই ডা. তারিমের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন কিনে ২০১৫-১৬ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়।

সিআইডি জানায়, মিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৬টি মোবাইল, ২টি ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড জব্দ করা হয়েছে।

এর আগে, গত ১৩ আগস্ট মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত ৭ ডাক্তারসহ প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সাইবার টিম।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago