টিএমএসএসের ‘অভয়ারণ্যের’ জন্য কেনা ১১ হরিণের ৬টি পথেই মারা গেল

রোববার ঢাকা থেকে গাড়িতে করে ৫টি হরিণ আনার সময় ৪টি পথেই মারা যায়। ছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের (টিএমএসএস) 'পশু অভয়ারণ্যের' জন্য আলাদা চালানে আনা ১১টি হরিণের মধ্যে ৬টি পথেই মারা গেছে। আরেকটি হরিণের মৃত্যু হয়েছে 'অভয়ারণ্যে' পৌঁছানোর পর।

সর্বশেষ গতকাল রোববার ঢাকা থেকে গাড়িতে করে ৫টি হরিণ আনার সময় ৪টি পথে মারা যায়। টিএমএসএস কর্তৃপক্ষের ধারণা, বেশিমাত্রায় চেতনানাশক দেওয়ার কারণে হরিণগুলো মারা গেছে। এ জন্য তারা জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন।

বগুড়ার নওদাপাড়া এলাকায় টিএমএসএসের বিনোদন পার্কে সম্প্রতি এই 'পশু অভয়ারণ্যটি' গড়ে তোলা হয়েছে। টিএমএসএস কর্তৃপক্ষ যেটাকে 'চিড়িয়াখানাও' বলছে। চলতি বছর সেখানে হরিণ পালনের লাইসেন্স পায় টিএমএসএস।

এই 'অভয়ারণ্যের' নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাকিম শাহী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল সন্ধ্যার দিকে ঢাকার মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে আমরা ৫টি হরিণ কিনি। এর মধ্যে ৪টি হরিণ পথে আসতে আসতে গাড়িতেই মারা গেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এখনো মৃত হরিণগুলোর পোস্টমর্টেম করা হয়নি। তবে আমাদের ধারণা গাড়িতে তোলার আগে হরিণগুলোকে যে এনেসথেসিয়া দেওয়া হয়েছে, তার অতিরিক্ত প্রয়োগের কারণেই হরিণগুলো মারা গেছে।'

মোস্তাকিমের কাছ থেকে জানা যায়, এর আগে গত ২৮ মে মিরপুর জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে প্রতিটি ৫০ হাজার টাকায় মোট ৬টি হরিণ কেনেন তারা। কিন্তু এনেসথেসিয়া দিয়ে গাড়িতে তোলার পর সেখানেই ২টি হরিণ মারা যায়। বগুড়ায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে গাড়িতে মারা যায় আরেকটি হরিণ।

পরে জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ টিএমএসএসকে ২টি হরিণ বিনামূল্যে দেয় বলে জানান মোস্তাকিম।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক মো. রফিকুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। জানা যায়, এই মুহূর্তে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

তবে জাতীয় চিড়িয়াখানা ভেটেরিনারি সার্জন নাজমুল হুদার ভাষ্য, 'চিত্রা হরিণ এমনিতেই অনেক সেনসেটিভ। গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় এগুলো যদি লাফালাফি করে এবং মাথায় আঘাত পায় তাহলে এগুলো মারা যায়। অতিরিক্ত কোন এনেসথেসিয়া দেওয়া হয় না। গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় এভাবে হরিণ মারা যাওয়ার ঘটনা প্রায় ঘটে। দেখা যায় ১০টি পাঠালে ৩টিই মারা যায়।'

তাহলে কি জেনেশুনে হরিণ হত্যা করা হচ্ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল হুদা বলেন, 'রাস্তাঘাট খারাপ হলে এমন হয়। সাবধানে নিয়ে গেলে এমন হয় না।'

পরিবহন করার সময় হরিণ মারা যাওয়ার বিষয়ে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ আদনান আজাদের বক্তব্যও প্রায় একই রকম। তিনি ডেইলে স্টারকে বলেন, 'মূলত পরিবহনের সময় এমন সমস্যা হয়ে থাকে। মানুষ খুব ছোট হরিণ নিতে চায় না। বড় খাঁচা নেয়। দেখা যায় বেশি লাফালাফির কারণে অনেক হরিণ পথেই মারা যায়। তবে টিএমএসএসের হরিণগুলো ঠিক কি কারণে মারা গেছে সেটা পোস্টমর্টেমের মাধ্যমেই জানা যাবে।'

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের আইনে উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করে, নির্ধারিত ফি দিয়ে এবং বনবিভাগের অনুমতি ও লাইসেন্স নিয়ে খামারে হরিণ পালনের অনুমোদন আছে।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

1h ago