চেন্নাই থেকে

লড়াইয়ের কোন ঝাঁজই দেখাতে পারল না বাংলাদেশ

দিশাহীন ব্যাটিং পারফরম্যান্সে বড় রান করা যায়নি। চেন্নাইর চিদাম্বর স্টেডিয়ামে ঐতিহ্য অনুযায়ী স্পিনারদের কাছ থেকে যা পাওয়ার কথা ছিলো তাও মেলেনি। দর্শকদের ম্যাড়ম্যাড়ে ম্যাচ উপহার দিয়ে দুর্বল শরীরী ভাষায় লড়াইও করতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল।

শুক্রবার বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচেও বাংলাদেশ হেরেছে বড় ব্যবধানে। আগে ব্যাটিং পেয়ে ২৪৫ রান করার পর প্রতিপক্ষের মাত্র ২ উইকেট নিতে পেরেছেন বোলাররা। ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিতে ৪৩ বল খেলতে হয়নি নিউজিল্যান্ডকে।

৯ মাস পর ফিরে উইলিয়ামসনের ৭৮ করে স্বেচ্ছা অবসরের পর ড্যারেল মিচেল ৬৭ বলে ৮৯ করে ম্যাচ শেষ করে বেরিয়ে যান ছক্কায় উড়িয়ে।

বিশ্বকাপ ভেন্যুগুলোর মধ্যে চেন্নাইর এই মাঠই সবচেয়ে মন্থর, স্পিনারদের জন্য অপেক্ষাকৃত সহায়ক। উপমহাদেশের বাইরের দলকে পেয়ে এই মাঠে স্বপ্ন দেখছিল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে উইকেট ও কন্ডিশনের সুবিধা বরং বেশি কাজে লাগিয়েছে কিউইরা।

আইপিএল খেলার কারণে নিউজিল্যান্ডের অনেক তারকারই বেশ পরিচিত চিপকের মাঠ। সেই অভিজ্ঞতার ঝলক দেখা গেছে ম্যাচে। বাংলাদেশের টেকনিক্যাল পরামর্শক শ্রীধরণ শ্রীরাম এই শহরের মানুষ হলেও তার টোটকায় লাভ হয়নি। হয়ত তার টোটকা প্রয়োগই করতে পারেননি ক্রিকেটাররা।

টস হেরে বাধ্য হয়ে রান ডিফেন্ড করতে হয়েছে। তবে বছরের এই সময়টায় চেন্নাইতে এখনো শিশিরের প্রভাব নেই। পরে বোলিং করাটা তাই বিশাল অসুবিধার কিছু ছিলো না।

বরং এরকম সারফেসে কীভাবে খেলতে হয় তা দেখিয়েছেন ৯ মাস পর ক্রিকেটে ফেরা উইলিয়ামসন। ৫৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই দলের বিপর্যয় ডেকে আনা বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটাররা কিউই কাপ্তানের ব্যাটিং থেকে শিক্ষা নিতে পারেন।

ক্রিজে এসে থিতু হতে নিজেকে সময় দিয়েছেন, পরিস্থিতি পড়েছেন পরে সুযোগ তৈরি করে ডানা মেলেছেন। চেন্নাই সুপার কিংস তারকা ডেভন কনওয়ের জন্য এই মাঠ হোম ভেন্যু। তিনি শুরু থেকেই ছিলেন চনমনে। চাপহীন সময়ে নেমে ড্যারেল মিচেল হয়েছেন আগ্রাসী। তুড়ি মেরে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিতে তার জুড়ি ছিল না এদিন।

বাংলাদেশের হয়ে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ের সুর বেজেছে কেবল  মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে। দলের বিপর্যয়েও কুঁকড়ে না গিয়ে সচল রেখেছিলেন রানের চাকা। তার সঙ্গে ৯৬ রানের জুটি গড়লেও সাকিব ছিলেন না সেরা ছন্দে। পেশির টান পেলেও তার আউটের ধরণ বেশ দৃষ্টিকটু। মুশফিক নিচু বলে বোল্ড হয়ে টেনেছেন ইতি। আটে নেমে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শুরুতে নিজেকে আগলে রাখতেই ব্যস্ত ছিলেন। ওভারের প্রথম বলে স্ট্রাইক দিয়ে দিচ্ছিলেন টেল এন্ডারদের। শেষ দিকে দুই ছয় মেরে তার রান হয়েছে ভদ্রস্থ। দলের অবস্থা সেই জায়গায় আর যেতে পারেনি।

যথেষ্ট পুঁজি না থাকার পরও শুরুতে বেশ ভালো বল করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম। শরিফুল বল ভেতরে ঢুকিয়ে ব্যাটারদের ভুগিয়েছেন বেশ কবার। মোস্তাফিজ তৃতীয় ওভারেই রাচিন রবীন্দ্রকে আউট করে পেয়েছিলেন উইকেটও।

তবে এই দুজনের এনে দেওয়া চাপ আর কখনই রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। সাকিব ১৪ ওভার পরে বল করতে এসে কনওয়েকে ফেরালেও বাকিটা সময় ছিলেন সাদামাটা। সবচেয়ে হতাশাজনক ছিল মিরাজের বোলিং। চেন্নাইর মাঠেও ব্যাটারদের কোন পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি তিনি। তার বোলিংয়ের সময় বেশ চাপমুক্ত দেখা গেছে কিউই ব্যাটারদের। দলের সবচেয়ে খরুচে মিরাজ ওভারপ্রতি রান বিলিয়েছেন ছয়ের উপরে।

আগের ম্যাচের মতন এদিনও তাসকিন আহমেদ রাখতে পারেননি ছাপ। এদিন প্রথম চেঞ্জে এসে কার্যকর হয়নি তার পেস। তার ৭ ওভার থেকে ৫৬ রান নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা।

নিউজিল্যান্ড যেভাবে একপেশে মেজাজে খেলা শেষ করেছে তাতে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস তলানিতে গিয়ে ঠেকার কথা।

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

8h ago