জিম্মিদের মুক্তির আগে গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধ চায় হামাস
জিম্মি দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি হামাসের 'শুভেচ্ছা' ইঙ্গিত বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য গাজী হামাদ।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গাজী হামাদ আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'কাতারের মধ্যস্থতায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।'
দুই জিম্মিকে মুক্তির বিনিময়ে হামাস কিছু পেয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'হামাস যে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এর প্রমাণ দিতেই এটি হামাসের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছার একটি ইঙ্গিত।'
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর এই সদস্য বলেন, 'জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি ইতিবাচকভাবে সম্পন্ন করতে চায় হামাস, তবে তার আগে ইসরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে।'
হামাস জিম্মিদের সঙ্গে 'মার্জিত ও সম্মানের' আচরণ করছে বলেও জানান তিনি।
ইসরায়েলের বলছে, গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলের শহরগুলোতে হামলার পর ২০৩ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।
বিবিসি জানায়, ইতোমধ্যে জিম্মি দুই মার্কিন নাগরিকের মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, জিম্মি দুই মার্কিন নাগরিক (মা জুডিথ রানান এবং মেয়ে নাটালি) হামাসের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গাল হিরশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গাজা সীমান্তে তাদের গ্রহণ করেছেন। এ মুহূর্তে তারা ইসরায়েলের কেন্দ্রস্থলে একটি সামরিক ঘাঁটিতে যাচ্ছেন, যেখানে তাদের পরিবারের সদস্যরা অপেক্ষা করছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, 'এখনো ১০ জন মার্কিন নাগরিক হামাসের হাতে জিম্মি রয়েছেন।'
এদিকে জিম্মি দুই মার্কিন নাগরিকের মুক্তির খবরে 'আনন্দে আত্মহারা' বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'আমাদের নাগরিকরা গত ১৪ দিন এক ভয়ানক অগ্নিপরীক্ষার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছেন। আমি আনন্দে আত্মহারা যে, তারা শিগগির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হবেন, যারা ভয়ে জর্জরিত ছিল।'
জিম্মি দুই মার্কিন নাগরিকের মুক্তির জন্য কাতার ও ইসরায়েলের প্রচেষ্টায় কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন বাইডেন।
তাদের মুক্তির মধ্য দিয়ে গাজায় মানবিক ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। বাইডেন শুক্রবার বলেছেন, 'আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রথম ২০টি ট্রাক গাজায় পৌঁছাবে।'
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলায় ৪ হাজার ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত ১৩ হাজারের বেশি মানুষ।
নিহতদের মধ্যে শিশু ১ হাজার ৫২৪, আর নারী ১ হাজারের বেশি। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ১১ সাংবাদিকও। এ ছাড়া, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের হামলায় গতকাল ৫ শিশুসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েল বলছে, হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত ৪ হাজার ৬২৯ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬৩ জন সেনা ও পুলিশ সদস্য।
Comments