শান্তি সম্মেলন

দুই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ভিত্তিতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান চায় আরব বিশ্ব

মিসরের রাজধানী কায়রোর শান্তি সম্মেলনে পশ্চিমা, ইউরোপীয় ও আরব বিশ্বের নেতারা। ছবি: রয়টার্স

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘাত নিরসনে মিসরের রাজধানী কায়রোর শান্তি সম্মেলনে জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহ পশ্চিমা ও ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, আমাদের অঞ্চল একটি শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছে।

এসময় তিনি ইংরেজিতে বক্তব্য রাখেন বলে জানায় সিএনএন।  

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করা, জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদান, ফিলিস্তিনি জনগণের স্থানান্তর প্রত্যাখ্যান এবং দুই-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ভিত্তিতে একটি স্থায়ী সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন জর্ডানের রাজা।

তিনি বলেন, 'গাজা, পশ্চিম তীর ও ইসরায়েলে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনায় আমি ক্ষুব্ধ ও শোকাহত। সব বেসামরিক ব্যক্তির জীবনই গুরুত্বপূর্ণ।'

'গাজায় যে নিরবচ্ছিন্ন বোমা হামলা চলানো হচ্ছে, আমরা বলেছি যে- এটা নিষ্ঠুর এবং অসংবেদনশীল- প্রতিটি স্তরেই। এটা অবরুদ্ধ ও অসহায় মানুষের সম্মিলিত শাস্তি। এটা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এটা যুদ্ধাপরাধ', বলেন আবদুল্লাহ।

তিনি 'বৈশ্বিক নীরবতা' পালন এবং পূর্ববর্তী সংঘাতের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী না করায় নেতাদের সমালোচনা করেন।

জর্ডানের রাজা বলেন, 'গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপের পর দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও এখনো বিশ্বের বেশিরভাগ অংশই নীরবতা পালন করছে। উপরন্তু আরব বিশ্বকে প্রকটভাবে এবং স্পষ্ট শুনতে হচ্ছে যে, ফিলিস্তিনিদের জীবন ইসরায়েলিদের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের জীবন অন্যদের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ।'

'ইসরায়েল আক্ষরিক অর্থেই গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষুধার্ত রেখেছে, কিন্তু কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনিরা আশা, স্বাধীনতা এবং ভবিষ্যতের অনাহারে ভুগছে', বলেন তিনি।

বিষয়টিকে 'দখলদারত্বের অনাচার' বলেও অভিহিত করেছেন আবদুল্লাহ।

তিনি বলেন, 'ইসরায়েলের নেতৃত্বকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, তাদের নিরাপত্তা উদ্বেগের কোনো সামরিক সমাধান নেই। তারা ৫০ লাখ ফিলিস্তিনিকে নিজেদের দখলে রাখতে পারে না, তাদের বৈধ অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে না এবং ফিলিস্তিনিদের জীবন ইসরায়েলিদের চেয়ে কম মূল্যবান নয়।'

জর্ডানের রাজা বলেন, 'কট্টরপন্থী ইসরায়েলি নেতৃত্ব শান্তির পরিবর্তে কেবল নিরাপত্তার ওপর দৃষ্টিপাত করেছে, যা উভয় পক্ষের চরমপন্থিদের ক্ষমতায়ন করেছে।'

'ইসরায়েলের জনগণের প্রতি আমাদের সম্মিলিত ও ঐক্যবদ্ধ বার্তাটি হলো- আমরা আপনাদের এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য শান্তি ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ চাই, যেখানে আপনাদের সন্তান এবং ফিলিস্তিনি শিশুদের আর ভয়ের মধ্যে বসবাস করতে হবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হিসেবে আমাদের কর্তব্য হলো একটি অর্থপূর্ণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করার জন্য যা যা করা দরকার তা করা, যা আমাদের দুই-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ভিত্তিতে একটি ন্যায্য এবং টেকসই শান্তিতে নিয়ে যেতে পারে', বলেন তিনি।

জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহ আরও বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্য এবং সমগ্র বিশ্বের জনগণের জন্য একটি নিরাপদ এবং নিশ্চিত ভবিষ্যতের এখন একটাই পথ- ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলিমদের জন্য- এই বিশ্বাসের সঙ্গে শুরু করা যে, প্রতিটি মানুষের জীবন সমান মূল্যের। দুটি রাষ্ট্র, ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েল, নদী থেকে সমুদ্র পর্যন্ত ভূখণ্ড এবং শান্তি ভাগাভাগি করবে। আমাদের এখনই কাজ করার সময়।'

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

4h ago