পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

প্রথম ম্যাচে লড়াইটাও জমিয়ে করতে পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে হারতে হারতে সুপার ওভারে গড়ানো নাটকীয় এক জয়। তবে তৃতীয় ম্যাচে দাপট দেখালো মেয়েরা। বোলারদের দারুণ পারফরম্যান্সের পর ব্যাটারদেরও দায়িত্বশীল ব্যাটিং। তাতে পাকিস্তানকে এবার সহজেই হারিয়ে সিরিজ জিতে নিয়েছে টাইগ্রেসরা।

শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। জবাবে ২৬ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে বাংলাদেশের মেয়েরা।

দ্বিপাক্ষিক সিরিজে বাংলাদেশের এটা বাংলাদেশের চতুর্থ সিরিজ জয়। এই পাকিস্তানকে হারিয়েই প্রথম কোনো সিরিজ জিতেছিলো টাইগ্রেসরা। ২০১৪ সালে দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তাদের ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল মেয়েরা। এছাড়া ২০২১ সালে জিম্বাবুয়েতে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে এবং ২০১৬ সালে বৃষ্টির কারণে প্রথম দুই ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ।

এই জয়ে আইসিসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে টপকে সাত নম্বরে উঠেছে বাংলাদেশ। ১২ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ১১। ছয় ম্যাচে সমান ১১ পয়েন্ট অস্ট্রেলিয়ারও। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ১০। ৯ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ভারত। 

এদিন বাংলাদেশের জয়ের ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার ফারজানা হক ও মুর্শিদা খাতুন। ওপেনিং জুটিতেই আসে রেকর্ড ১২৫ রান। যা মেয়েদের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি। এর আগে ২০১১ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শুকতারা রহমান ও শামিমা আক্তার ১১৩ রানের জুটি গড়েছিলেন। আর এ জুটিতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ।

তবে এমন দারুণ সূচনা এনে দেওয়ার পর তিন রানের ব্যবধানে এ দুই সেট ব্যাটার সহ ফাহিমা খাতুনকেও হারায় বাংলাদেশ। তাতে কিছুটা ধাক্কা খেলেও সোবহানা মোস্তারিকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৩৯ রানের জুটিতে জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক নিগার সুলতানা।

নাস্রা সান্ধুর বলে ফারজানা এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ে ওপেনিং জুটি ভাঙে বাংলাদেশের। পরের ওভারে শর্ট মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ তুলে দেন মুর্শিদা। আর অধিনায়ক নিগারের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির খেসারৎ দিয়ে রানআউট হন ফাহিমা।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬২ রানের ইনিংস খেলেন ফারজানা। ১১৩ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৬২ রান করেন তিনি। ১০৬ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৫৪ রান করেন মুর্শিদা। এছাড়া সোবহানা ১৯ ও নিগার ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। পাকিস্তানের পক্ষে ২৭ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট পান সান্ধু।

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেছিল পাকিস্তান। দুই ওপেনার সাদাফ শামস ও সিদ্রা আমিন গড়েন ৬৫ রানের জুটি। শামসকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলে এ জুটি ভাঙেন নাহিদা আক্তার। এরপর মুনিবা আলীকে নিয়ে ২৮ রানের জুটি গড়েন আমিন।

মুনিবাকে ফিরিয়ে এ জুটি ভেঙে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ঘূর্ণির মায়াজাল বিছিয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিতে থাকে দলটি। ৭৩ রান তুলতেই শেষ ৯টি উইকেট হারায় পাকিস্তান। সিদ্রা আমিন এক প্রান্ত ধরে রাখলেও অপর প্রান্তে ব্যাটারদের আসা যাওয়ায় ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।

তবে এক প্রান্তে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন সিদ্রা। ১৪৩ বলে ৮৪ রান তুলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন তিনি। কিন্তু সঙ্গীদের কেউই তেমন তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রানের ইনিংস খেলেন শামস। এ দুই ব্যাটার ছাড়া কেবল মুনিবা (১৪) ও ডায়না বাইগ (১১) দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন।

বাংলাদেশের পক্ষে ১০ ওভার বল করে ২৬ রান খরচ করে ৩টি উইকেট নেন নাহিদা। ৩৫ রানের বিনিময়ে ২টি শিকার রাবেয়া খানের। 

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

4h ago