ভারত-নিউজিল্যান্ড সেমির পিচের সমালোচকদের নির্বোধ বললেন গাভাস্কার
ভারত ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সেমিফাইনালের আগে বিতর্ক তৈরি হয় পিচ নিয়ে। আয়োজক ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ও মুম্বাইয়ের ভেন্যু কিউরেটরের সুপারিশে নতুন পিচে খেলানোর বদলে ম্যাচটি সরিয়ে নেওয়া হয় আগের ব্যবহৃত পিচে। এই সিদ্ধান্তের সমালোচকদের কটাক্ষ করে নির্বোধ বললেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার সুনিল গাভাস্কার।
গতকাল বুধবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের প্রথম সেমিতে ব্যবহৃত উইকেটেই সব মিলিয়ে হয় ৭২৪ রান। ভারতের ৪ উইকেটে ৩৯৭ রানের জবাবে নিউজিল্যান্ড অলআউট হয় ৩২৭ রানে। ৭০ রানের বড় জয়ে আসরের ফাইনাল নিশ্চিত করে রোহিত শর্মার দল।
ম্যাচের পর ভারতীয় গণমাধ্যম স্টার স্পোর্টসের একটি আয়োজনে সাবেক তারকা গাভাস্কার একহাত নেন পিচ পরিবর্তনের সমালোচনাকারীদের, 'পিচ বদলানো নিয়ে যারা কথা বলছিল, তারা সব নির্বোধ। থামো তোমরা। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ে ভিত্তিহীন সমালোচনা বন্ধ করো। মনোযোগ আকৃষ্ট করার বা যে কারণেই হোক না কেন, মানুষ অনেক কথাই বলেছে। সবই আজেবাজে কথা।'
দুই দলের মোট তিনজন ব্যাটার পান সেঞ্চুরি। ভারতের বিরাট কোহলির রেকর্ড ৫০তম ওয়ানডে সেঞ্চুরির পাশাপাশি আগ্রাসী শতক হাঁকান শ্রেয়াস আইয়ার। নিউজিল্যান্ডের হয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগারে পৌঁছান ড্যারিল মিচেল। তবে রান উৎসবের ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামি। ৫৭ রান খরচায় তিনি শিকার করেন ৭ উইকেট। অথচ পুরনো উইকেটে খেলা হলে সাধারণত স্পিনাররা সুবিধা পেয়ে থাকেন।
সেমিফাইনালের আগে ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো জানায়, ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল ওয়াংখেড়ের ৭ নম্বর উইকেটে। ওই উইকেটে বিশ্বকাপের আর কোনো ম্যাচ হয়নি আগে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত পাল্টে খেলা ৬ নম্বর পিচে নেওয়া হয়। সেখানে আগে হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড ও ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ। সূত্রের বরাতে ইএসপিএনক্রিকইনফো আরও জানায়, এবারের আসরে ওয়াংখেড়েতে বরাদ্দ পাঁচ ম্যাচের জন্য পিচের ধারা ছিল ৬-৮-৬-৮-৭। কিন্তু ৭ নম্বর পিচ আর ব্যবহৃত হয়নি।
গাভাস্কারের যুক্তি, ম্যাচের আগেই পরিবর্তন করায় দুই দলের জন্যই সমান সুযোগ ছিল পিচ মূল্যায়ন করার, 'যদি এটা বদল করা হয়েও থাকে, এটা করা হয়েছিল টসের আগেই এবং উভয় দলের জন্যই। দুই ইনিংসের মাঝে এটা পাল্টানো হয়নি, টসের পর এটা পাল্টানো হয়নি। যদি কোনো দল যথেষ্ট ভালো হয়, ওই পিচে খেলেই তারা জিতবে। ভারত সেটা করে দেখিয়েছে। তাই পিচ নিয়ে কথা বলা বন্ধ করো।'
বিশ্বকাপের জন্য আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, পিচ বাছাই ও প্রস্তুত করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মাঠ কর্তৃপক্ষের। ওয়াংখেড়ের ক্ষেত্রে মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন তা পালন করে। স্থানীয় আয়োজকদের সঙ্গে আইসিসির স্বাধীন পিচ পরামর্শক হিসেবে যুক্ত আছেন অ্যান্ডি অ্যাটকিনসন। তাছাড়া, নকআউট ম্যাচ সতেজ পিচে খেলানোর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই আইসিসির। কেবল সম্ভাব্য সেরা পিচ ও আউটফিল্ড ব্যবহারের কথা উল্লেখ আছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইল জানায়, আচমকা পিচ পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে অ্যাটকিনসন হতাশ। ফাঁস হওয়া একটি ই-মেইলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন, ফাইনালের ভেন্যু আহমেদাবাদের পিচও নিজেদের পছন্দ মতো বেছে নেওয়ার চিন্তায় হাঁটছে আয়োজক ভারত।
৭৪ বছর বয়সী গাভাস্কার এই প্রসঙ্গে যোগ করেন, 'ইতোমধ্যে আহমেদাবাদের পিচ নিয়ে তারা (সমালোচকদের) কথা বলছে। অথচ (অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার) দ্বিতীয় সেমিফাইনালই এখনও হয়নি। অথচ তারা আহমেদাবাদের পিচ পরিবর্তন নিয়ে সরব হয়েছে। যতসব আজেবাজে কথা।'
Comments