ঠাণ্ডাজনিত রোগ, বরিশালে হাসপাতালে ধারণক্ষমতার ৭ গুণ শিশু ভর্তি

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড। ছবি:টিটু দাস/স্টার

তিন মাস বয়সী আফিয়া ঠাণ্ডাজনিত রোগে ভুগছে। ভোলার চরফ্যাশন থেকে ৩ দিন আগে তার পরিবার তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করে।

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের চার বছর বয়সী জালিশ মাহামুদকেও ৩ দিন আগে এখানে ভর্তি করা হয় শ্বাসকষ্টের সমস্যার কারণে।

বরগুনা থেকে তিন বছর বয়সী তানিয়াকে নিয়ে তার বাবা-মা এ হাসপাতালে এসেছেন উন্নত চিকিৎসার জন্য।

হাসপাতালটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় শিশু ওয়ার্ড রোগীতে পরিপূর্ণ। শুধু পরিপূর্ণ নয়, ধারণক্ষমতার সাত গুণ রোগী বর্তমানে ভর্তি আছে, যাদের বেশিরভাগই ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এখানে শিশু ওয়ার্ডে বেড বরাদ্দ আছে ৩৫টি। কিন্তু, শিশু ওয়ার্ডসহ শিশু বিভাগের অধীনে ভর্তি আছে ২৪১ জন। সংকটাপন্ন ৪৫ শিশু আছে স্পেশাল কেয়ার নিওনাটাল ইউনিটে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্তদের মধ্যে শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের সংখ্যাই বেশি। শুধু ডায়রিয়া ওয়ার্ডেই শিশুর সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়ে গেছে।

শিশু ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান উত্তম কুমার সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুই ও তিন তলা ছাড়াও  আরও কয়েকটি ইউনিট নিয়ে শিশু বিভাগ। এখানে ধারণক্ষমতার অন্তত ৭ গুণ রোগী নিয়ে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ৮ জন নিউমোনিয়া রোগী, সংকটাপন্ন অন্তত ৪৫ জন।'

'বিভাগের একমাত্র মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হওয়ায় আশপাশের জেলা ও উপজেলা ছাড়াও বিভাগের বাইরে থেকেও প্রতিদিন এখানে শত শত রোগী আসে,' বলেন তিনি।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, 'ভর্তি রোগীর দ্বিগুণ রোগী প্রতিদিন আউটডোরে চিকিৎসা নেয়। শিশুদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা গেলে এই চাপ কিছুটা কমতে পারে।'

মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, '৫০০ বেডের হাসপাতালে আমরা ৫ গুণ বেশি রোগীর সেবা দিতে বাধ্য হচ্ছি। নতুন ভবন তৈরি হয়ে গেলে এ সমস্যা কেটে যাবে।'

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিস সূত্র জানায়, গত ৭ দিনে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ১ হাজার ২৯৯ জন শিশু ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই সময়ে ঠাণ্ডাজনিত রোগ বেড়ে যায়। আমরা এজন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিভাবকদের সচেতন করছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Hasina’s final days before the fall

A desire to cling to power, intolerance for dissent and failure to see the writing on the wall were what eventually unravel Sheikh Hasina’s iron-fisted rule of 15 years.

7h ago