১ সপ্তাহ পর উদ্ধার হলো পদ্মায় ডুবে যাওয়া ‘রজনীগন্ধা’

‘নদীতে প্রচণ্ড স্রোতের পাশাপাশি কুয়াশা ও কনকনে শীতের কারণে উদ্ধার কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়েছিল। নানান প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে ফেরিটিকে নদীর তলদেশ থেকে ওপরে উঠানো সম্ভব হয়েছে।’
ফেরি রজনীগন্ধা
পদ্মায় ডুবে যাওয়া ‘রজনীগন্ধা’কে পাটুরিয়া ঘাটের কাছে নোঙর করে রাখা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

এক সপ্তাহ পর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধাকে উদ্ধার করে নদীর তীরে আনা হলো।

গতকাল বুধবার রাত পৌনে ১১টায় ফেরিটি উদ্ধার করে পাটুরিয়া ঘাটের পূর্বে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল প্রকল্প এলাকায় নোঙর করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন 'রজনীগন্ধা' উদ্ধারে নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের প্রধান লেফটেন্যান্ট শাহ পরান ইমন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদীতে প্রচণ্ড স্রোতের পাশাপাশি কুয়াশা ও কনকনে শীতের কারণে উদ্ধার কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়েছিল। নানান প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে ফেরিটিকে নদীর তলদেশ থেকে ওপরে উঠানো সম্ভব হয়েছে।'

এ ছাড়াও, পানিতে তলিয়ে যাওয়া দুটি ট্রাকও গতকাল উদ্ধার করা হয়েছে।

গত আট দিনের অভিযানে ডুবে যাওয়া ফেরি, পণ্যবাহী গাড়ির ও নিখোঁজ দ্বিতীয় ইঞ্জিন মাস্টারকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর কিছুই বাকি নেই বলেও জানান তিনি।

লেফটেন্যান্ট শাহ পরান ইমন আরও বলেন, 'ডুবে যাওয়ার পর ফেরিটি উল্টে যায়। এরপর তীব্র স্রোতে ফেরিটি নদীর তলদেশে পলিমাটিতে আটকে পড়ে। ২৪০ টন ওজনের ফেরিটির ওজন ৩০০ টন ছাড়িয়ে যায়। তাই উদ্ধারকারী জাহাজ 'হামজা' ও 'রুস্তম' দিয়ে ফেরিটিকে ওঠানো সম্ভব হয়নি। কারণ, এ দুই জাহাজ দিয়ে ৮০ থেকে ৯০ টন ওজনের বস্তুকে উঠানোর সম্ভব। এ কারণে দুর্ঘটনাস্থলে আনা হয় শক্তিশালী উদ্ধারকারী জাহাজ 'প্রত্যয়'কে।'

তিনি জানান, ডুবে থাকা ফেরির ভেতরে এয়ার লিফটিং ব্যাগ দিয়ে একে হালকা করে নদীর তলদেশে থেকে উপরে উঠানো হয়েছিল। তবে ফেরির তলা ফেটে যাওয়ায় এই উদ্যোগও সফল হয়নি।

পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ থেকে অনুসন্ধানী জাহাজ 'ঝিনাই-১' আনা হয়। এর মাধ্যমে নদীর তলদেশে ফেরিটির সঠিক অবস্থান জানা যায়।

গত মঙ্গলবার রাত ১২টার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ায় আসে ইউটিলিটি ফেরি 'রজনীগন্ধা'। এতে নয়টি পণ্যবাহী গাড়ি ছিল। রাত দেড়টার দিকে ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ঘাটের অদূরে পদ্মায় আটকা পড়ে ফেরিটি।

পরের দিন বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ফেরিটি ডুবে যায়। ফেরিতে থাকা স্টাফ ও যানবাহনের চালক-সহযোগী মিলে ২১ জনের মধ্যে ২০ জনই নিরাপদে ফিরে আসতে পারলেও নিখোঁজ থাকেন ফেরিটির দ্বিতীয় ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ুন কবির।

গত সোমবার বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থলের প্রায় ১২ কিলোমিটার ভাটিতে হরিরামপুর উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকায় পদ্মা থেকে তার ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে বলে জানান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ।

Comments