নারায়ণগঞ্জ বার নির্বাচন: দোতলায় ভোটগ্রহণ, নিচতলায় ধস্তাধস্তি

ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়েন অ্যাডভোকেট ইখতিয়ার হাবীব। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণের শেষ মুহূর্তে কারচুপির অভিযোগ তোলায় আপ্যায়ন সম্পাদক পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট ইখতিয়ার হাবীবের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ওই প্রার্থী অচেতন হয়ে পড়েন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে আইনজীবী সমিতির ভবনের নিচতলায় এই ঘটনা ঘটে। দোতলায় তখন ভোটগ্রহণ চলছিল।

সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৬টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বিনা ভোটে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। একমাত্র আপ্যায়ন সম্পাদকের পদের জন্য ভোটগ্রহণ হয়েছে।

এই পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী মানজুদুল রশিদ রিফাতের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইখতিয়ার হাবীব।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোটগ্রহণের শেষ মুহূর্তে ইখতিয়ার হাবীব ভোটকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সামনে কারচুপির অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, সভাপতি প্রার্থী মোহসীন মিয়ার নেতৃত্বে জাল ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরানো হচ্ছে। এ নিয়ে আপত্তি তোলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা। এক পর্যায়ে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। অ্যাডভোকেট ইখতিয়ার হাবীবকে ধস্তাধস্তি করে আইনজীবী সমিতির ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যেতে চাইলে এক পর্যায়ে অসুস্থ বোধ করার কথা জানান তিনি। পরে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে গাড়িতে তুলে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

এই সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়াও উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, একজন প্রার্থী হঠাৎ উত্তেজনায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

কারচুপির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারাদিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে। একটিমাত্র পদেই ভোটগ্রহণ হয়েছে। কোনো ধরনের কারচুপি হয়নি। ওই প্রার্থী কেন এমন অভিযোগ করেছেন জানি না।

গত ১১ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নাম ঘোষণা করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সামসুল ইসলাম ভূঁইয়ার নাম ঘোষণা করলে এই কমিশন প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।

তাদের অভিযোগ, সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি আগেও যখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তখন ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষপাতিত্ব করারও অভিযোগ করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে বিএনপি সমর্থক কোনো আইনজীবী প্রার্থী হননি।

আজ ভোটগ্রহণের দিনও বিএনপিপন্থী কোনো আইনজীবীকে ভোটকেন্দ্রের আশেপাশে দেখা যায়নি। একটিমাত্র পদে ভোটগ্রহণ হওয়ায় নির্বাচনী কোনো আমেজও ছিল না।

Comments

The Daily Star  | English

Freedom fighter’s definition: Confusion, debate over ordinance

Liberation War adviser clarifies that Sheikh Mujib, Tajuddin, others in Mujibnagar govt are freedom fighters

14h ago