উইলের সেঞ্চুরি ও মঈনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জিতল কুমিল্লা

আগে ব্যাট করে তো বিপিএলে দলীয় পুঁজির রেকর্ড গড়ে কুমিল্লা

উইল জ্যাকস করলেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ফিফটি তুলে নেন লিটন দাসও। সুযোগ পেয়েই দারুণ বোলিংয়ে নিজের জাত চেনান রিশাদ হোসেন। তাদের সঙ্গে ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলীর ঝলক। ব্যাট হাতে শেষ দিকে ঝড় তুলে দলকে বড় পুঁজি এনে দিতে রেখেছেন কার্যকরী ভূমিকা। এরপর বল হাতেও বিছান ঘূর্ণির মায়াজাল। তুলে নেন হ্যাটট্রিকও। তাতে দারুণ এক জয় পেয়েছে কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিপিএলে দিনের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৭৩ রানে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৩৯ রান সংগ্রহ করে কুমিল্লা। যা বিপিএলে যৌথভাবে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড। এর আগে ২০১৯ সালের বিপিএলে ২৩৯ রানের পুঁজি গড়েছিল রংপুর রাইডার্সও। একই মাঠে সেই ম্যাচেও প্রতিপক্ষ ছিল তৎকালীন চট্টগ্রামের ফ্র্যাঞ্চাইজি- চট্টগ্রাম ভাইকিংস। জবাবে ১৬.৩ ওভারে ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় চট্টগ্রাম।

অথচ রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল চট্টগ্রাম। দুই ওপেনার জশ ব্রাউন ও তানজিদ হাসানের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬১ রান তোলে দলটি। ৮০ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। এরপর তানজিদকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। ২৪ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪১ রান করেন এই ওপেনার।

ওপেনিং জুটি ভাঙলেও আগ্রাসন থামায়নি চট্টগ্রাম। মোস্তাফিজের সেই ওভারেই একটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান তিনে নামা টম ব্রুস। তবে পরের ওভারেই ব্রাউনকে হারায় তারা। রিশাদ হোসেনের বলে লিডিং এজ হয়ে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান এই ওপেনার। ২৩ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৬ রান করেন তিনি।

চট্টগ্রাম অবশ্য বড় ধাক্কা খায় রিশাদের পরের ওভারে। সে ওভারে ব্রুস ও শাহাদাত হোসেনকে ফেরান এই লেগস্পিনার। এর পরের ওভারে কার্টিস ক্যাম্ফারকে ফেরান মোস্তাফিজ। ফলে দলীয় ১১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বন্দর নগরীর দলটি।

এরপর উইকেটে নেমে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন সৈকত আলী। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়ে তুলে নিয়েছিলেন দারুণ এক ফিফটি। এদিন মিডল অর্ডারে ব্যাট করলেও দারুণ খেলছিলেন। ১১ বলে ১টি চার ও ৫টি ছক্কায় খেলেন ৩৬ রানের ইনিংস। যেখানে ৩টি ছক্কা মেরেছেন মোস্তাফিজের বলে।

এরপর চট্টগ্রাম অধিনায়ক শুভাগত হোমকে ফেরান রিশাদ। এরপর মঈনের ঘূর্ণি। সৈকত ফেরানো এই স্পিনার পরে তুলে নেন চলতি আসরের দ্বিতীয় হ্যাট্রিক। টানা তিন বলে তিনি আউট করেন শহিদুল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন ও বিলাল খানকে। তাতে বড় জয়ই পায় কুমিল্লা। মঈন ও রিশাদ দুইজনই পান চারটি করে উইকেট।

এর আগে টস জিতে কুমিল্লাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় চট্টগ্রাম। শুরুটাও ভালো হয় তাদের। ইনিংসের প্রথম ওভারে কোনো রানই তুলতে পারেনি কুমিল্লা। দারুণ বোলিংয়ে মেইডেন আদায় করে নেন নিহাদুজ্জামান। তবে পরের ওভারেই আগ্রাসী হন লিটন। তার সঙ্গে খোলস ভেঙে ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করেন উইলও। তাতেই এগিয়ে যেতে থাকে কুমিল্লা। পাওয়ার প্লেতে ৬২ রান করে দলটি।

২৬ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নেন লিটন। তবে এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। শহিদুল ইসলামের শিকার হলে ভাঙ্গে ৮৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। তিনে নেমে এদিন খালি হাতে ফেরেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান তাওহিদ হৃদয়। চারে নেমে দ্রুত ফিরেছেন ব্রুক গেস্টও।

২৫ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারালেও নিজের মতো আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়ে যান জ্যাক। তাতে হুহু করে বাড়তে থাকে রান। মঈনের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ১২৮ রানের জুটি গড়েন এই তরুণ। শেষ পাঁচ ওভারে ৮২ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। তাতেই রেকর্ড পুঁজি মিলে দলটির।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০৮ রানের হার না মানা এক ইনিংস খেলেন উইল। মাত্র ৫৩ বলে ইনিংসটি সাজান ৫টি চার ও ১০টি ছক্কায়। ৩১ বলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬০ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক লিটন। আর মাত্র ২৪ বলে ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় অপরাজিত ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন মঈন।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago