চাঙা হচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি

মে মাসে ঘুরে দাঁড়াতে পারে পোশাক রপ্তানি

তৈরি পোশাক
২০২৭ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন পোশাক বাজারের শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নে শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ ও আফ্রিকায় শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ পেতে পারে বাংলাদেশ। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিপর্যয় থেকে ধীরে ধীরে চাঙ্গা হচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো বিদেশি ক্রেতাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়ায় আগামী মে থেকে দেশের পোশাক রপ্তানি ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরের রপ্তানি তথ্যে পোশাকের রপ্তানি পুনরুজ্জীবিত হওয়ার লক্ষণ এরই মধ্যে দেখা যাচ্ছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারিতে পোশাক রপ্তানি তিন দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে দুই হাজার ৮৩৬ কোটি ডলার হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় সংগঠন ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশনের (এনআরএফ) প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী ম্যাথিউ শায় গত সপ্তাহে বলেছিলেন যে, খুচরা বিক্রেতারা ছুটি থেকে ফিরেছেন।

তিনি আশা করেন যে এবার বিক্রির প্রবৃদ্ধি তিন শতাংশ থেকে চার শতাংশ হবে।

মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত বছরগুলোর তুলনায় টেকসই প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

তার মতে, এই প্রবৃদ্ধি এটাই প্রমাণ করে যে খুচরা বিক্রেতারা ক্রেতাদের প্রত্যাশা পূরণ করছে। এর মাধ্যমে মার্কিন অর্থনীতির ক্ষমতা দেখা যাচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জের প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো থেকে খোঁজ-খবর বাড়ছে। এটা এই ইঙ্গিত দেয় যে রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে না বাড়লেও তা কিছুটা হলেও বাড়তে পারে।'

আগামী মে থেকে রপ্তানি বাড়তে পারে বলে আশা করেন তিনি।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর কাছ থেকে কার্যাদেশ কম ছিল।'

তিনি আরও বলেন, 'যেহেতু কার্যাদেশ এখন বাড়ছে, আশা করা যায় আগামী এপ্রিল বা মের দিকে এটি আরও বাড়বে। রপ্তানি আগের মতো চাঙা হবে। কারণ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও মূল্যস্ফীতি থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউরোপের এক বড় ক্রেতা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে না বাড়ালেও তা কমানোর সুযোগ নেই।'

ডাচ ডিজাইনিং প্রতিষ্ঠান জি-স্টারের রিজিওনাল অপারেশন ম্যানেজার শফিউর রহমান মনে করেন, আন্তর্জাতিক খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী জুন থেকে তৈরি পোশাকের বাজার চাঙা হতে পারে।

তিনি বলেন, 'বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোয় ২০২৫ সাল পোশাক শিল্পের জন্য ভালো বছর হবে।'

রপ্তানিকারকরা মনে করছেন, পাশ্চাত্যে মূল্যস্ফীতি কমে যাওয়ায় এবং মানুষ খরচ করতে শুরু করায় আগামী মাসগুলোয় তৈরি পোশাকের চালান বাড়বে।

বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক কেনার জন্য ক্রেতারা বেশ খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।

নভেম্বর ও ডিসেম্বরে উৎসবের মৌসুমে বেশি বিক্রি হওয়ায় স্টোরগুলোয় মজুদ কমেছে।

ফারুক হাসান বলেন, 'মজুদ কমে যাওয়ায় খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো কাজের অর্ডার দিচ্ছে।'

তিনি মনে করেন, দেশের পোশাক নির্মাতা ও সরবরাহকারীরা বছরের পর বছর ধরে বাজার ও পণ্যে বৈচিত্র্য আনছেন। এখন তারা এর সুফল পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, 'অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় সরবরাহকারীরা দামি পোশাক তৈরি করায় ক্রেতাদের কাছ থেকে সেগুলোর ভালো দাম পাচ্ছেন।'

পোশাক সরবরাহকারীরা কমপ্লায়েন্সের ক্ষেত্রেও উন্নতি করেছে। পরিবেশবান্ধব উদ্যোগের ফলে এই খাত ও দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে।

বিজিএমইএ প্রধান আরও বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের আস্থা বাড়ছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

2h ago