মেয়ার্সের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সিলেটকে হারাল বরিশাল

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দলীয় ৪০ রানেই সিলেট স্ট্রাইকার্সের প্রথম সারির ছয় ব্যাটার তখন সাজঘরে। ওভারও অর্ধেক শেষ। এরপর দারুণ প্রতিরোধ গড়েন আরিফুল হক ও বেনি হাওয়েল। জয়ের সম্ভাবনাও জাগান। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি। হারতেই হয় তাদের। কাইল মেয়ার্সের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে দারুণ এক জয় তুলে প্লে-অফের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ফরচুন বরিশাল।

শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ১৮ রানে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮৩ রান করে তারা। জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানের বেশি করতে পারেনি মোহাম্মদ মিঠুনের দল।

মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার হলেও এদিন বল হাতেই সিলেটকে বড় ক্ষত উপহার দেন মেয়ার্স। দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরুতেই সিলেটকে কোণঠাসা করে দেন এই ক্যারিবিয়ান। এর আগে ব্যাট হাতে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে দলকে এনে দেন লড়াইয়ের পুঁজি। অথচ আসরে এদিনই প্রথম খেলতে নামেন তিনি।

১৮৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই চাপে পড়ে যায় সিলেট। মেয়ার্সের করা প্রথম ওভারে খালি হাতে ফেরেন হ্যারি ট্যাক্টর ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ফুলার লেন্থের বলে কিছুটা ইনসুইং হলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান ট্যাক্টর। আর ব্যাটের বাইরে দিকের কানায় লেগে স্লিপে সৌম্য সরকারের দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হন শান্ত।

শূন্য রানে দুই উইকেট হারানোর দলটির বিপদ আরও বাড়ে জাকির হাসানের রানআউটে। সরাসরি ফিল্ডার বরাবর বল গেলেও ঝুঁকিপূর্ণ রান নিতে চেয়েছিলেন এই ওপেনার। এরপর উইকেটে নেমেই আগ্রাসী ব্যাট চালাতে থাকেন মোহাম্মদ মিঠুন। একটি করে চার ও ছক্কা মারতে পারলেও আরও একটি মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন সৈয়দ খালেদ আহমেদের হাতে।

স্কোরবোর্ডে আর দুই রান যোগ হতে ফিরে যান এক প্রান্ত আগলে ব্যাট করতে থাকা অ্যাঞ্জেলো পেরেরাও। অবশ্য বেশ খানিকটা দৌড়ে দারুণ ক্যাচ লুফে নেন খালেদ। হতাশ করেন রায়ান বার্লও। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ফলে ৪০ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বড় বিপদে পড়ে সিলেট।

এরপর আরিফুল হককে নিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন বেনি হাওয়েল। ৫২ বলের ১০৮ রানের জুটিও গড়েন তারা। যা অষ্টম উইকেটে বিপিএলের সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ডও বটে। কিন্তু তাদের চেষ্টা কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ১৮ রান দূরে থাকতেই থামে তাদের ইনিংস।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন হাওয়েল। ৩১ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ৪টি ছক্কা। ৩২ বলে ৫৩ রান করেন হাওয়েল। টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। বরিশালের পক্ষে ৪ ওভার বল করে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৩টি উইকেট তুলে নেন মেয়ার্স।

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামা বরিশালের বড় ইনিংসের ভিত মুশফিককে নিয়ে গড়ে দেন মেয়ার্স। চতুর্থ উইকেটে ৮৪ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। এ দুই ব্যাটার যখন ব্যাটিংয়ে ছিলেন তখন মনে হয়েছিল দুইশ রানের বেশি হবে বরিশালের পুঁজি। তবে শেষদিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সিলেট।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিক। ৩২ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কায় এই রান করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ৩১ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলেন মেয়ার্স। মুশফিকের মতোই সমান ৩টি করে চার ও ছক্কা মারেন তিনিও। শেষদিকে ৭ বলে ২টি ছক্কায় ১৫ রানের ক্যামিও খেলেন মিরাজ। সিলেটের পক্ষে ৪৮ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান তানজিম হাসান সাকিব।

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

21h ago