ঋণ অবলোপন নীতিমালা আরও শিথিল করল বাংলাদেশ ব্যাংক

খেলাপি ঋণ
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ 'কৃত্রিমভাবে' কমিয়ে আনার রোডম্যাপের অংশ হিসেবে ঋণ অবলোপন নীতিমালা আরও শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংকগুলো যদি মনে করে যে ঋণ উদ্ধারের কোনো বাস্তব সম্ভাবনা নেই, তবে তারা তাদের ব্যালেন্স শিট থেকে ঋণ সরিয়ে নিতে 'অবলোপন নীতিমালা' ব্যবহার করে।

তারপর অবলোপন করা ঋণকে অফ-ব্যালেন্স রেকর্ডে পাঠানো হয়। এর ফলে ব্যাংকগুলো তাদের খাতায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম দেখাতে পারবে। তবে ব্যাংকের দায় থেকে যাবে।

গতকাল রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন গাইডলাইনে বলা হয়—দুই বছর ধরে খেলাপি ও লোকসানে থাকা ঋণ এখন ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিট থেকে মওকুফের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আগে এই সময় সীমা ছিল তিন বছর।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আগের সময়সীমা পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে তিন বছর করেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এটি মোট বকেয়া ঋণের নয় শতাংশ।

নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে—ঋণদাতাদের পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত খেলাপি ঋণ অবলোপনের জন্য অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করতে হবে না। আগে এর পরিমাণ ছিল দুই লাখ টাকা।

ব্যাংকগুলো মামলা না করেই মৃত ব্যক্তির নামে থাকা খেলাপি ঋণ অবলোপন করতে পারবে।

আগে নিয়ম ছিল কোনো আইনি ব্যবস্থা না নিলে ঋণ অবলোপনের আগে ব্যাংকগুলোকে অর্থ ঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর অধীনে মামলা করতে হবে।

শুধু রিটেইনড ডেফার্ড ইন্টারেস্ট কেটে খেলাপি ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন রাখতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়েছে—খেলাপি ঋণ অবলোপনের জন্য কোনো ঋণ হিসাব আংশিক অবলোপন করা যাবে না এবং পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন বাধ্যতামূলক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে—২০০৩ সালে এ সুবিধা চালুর পর থেকে এ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিট থেকে ৬৮ হাজার ২৩ কোটি টাকা অবলোপন করা হয়েছে।

নতুন এই শিথিলতার ফলে আগামীতে খেলাপি ঋণ অবলোপনের প্রবণতা বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।

ঋণ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া দ্রুত করতে ইসলামি ব্যাংকগুলোর জন্য রাইট-অফ লোন রিকভারি ইউনিট গঠন করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বিজ্ঞপ্তি জারির ১৫ দিনের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে এই ইউনিট গঠন করতে বলা হয়েছে।

ব্যাংকগুলোকে ইউনিটের প্রধান হিসেবে এমন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিতে হবে যিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে দুই পদের বেশি নিচে হবেন না।

অবলোপিত ঋণের আদায় করা পরিমাণের প্রায় পাঁচ শতাংশ অর্থ আদায় প্রক্রিয়ায় জড়িত কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রণোদনা হিসেবে বিতরণ করা হবে।

প্রদত্ত অর্থের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ব্যবস্থাপনা পরিচালককে প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English
US tariff cut helps Bangladesh garment industry

Will Bangladesh benefit from higher US tariffs on China, India?

The Trump administration’s imposition of higher reciprocal tariffs on India and China, two of Bangladesh’s main competitors in the global readymade garments sector, is definitely a boon for Bangladesh, according to local exporters.

12h ago