অ্যামাজনে সবচেয়ে বড় প্রজাতির সাপের সন্ধান
অ্যামাজন বনে কাজ করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা একটি নতুন প্রজাতির সাপ আবিষ্কার করেছেন, যাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বলে দাবি করা হচ্ছে।
আজ শুক্রবার সিএনএনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল স্থানীয় ওয়াওরানি আদিবাসীদের আমন্ত্রণ পেয়ে ইকুয়েডরীয় আমাজন বনে যান নর্দার্ন গ্রিন অ্যানাকোন্ডা (ইউনেক্টেস আকাইমা) অনুসন্ধানে। যে সাপটি আগে নথিভুক্ত ছিল না।
সেই দলের নেতৃত্ব দেওয়া জীববিজ্ঞানী অধ্যাপক ব্রায়ান ফ্রাই এক বিবৃতিতে জানান, তারা বাইহুয়েরি ওয়াওরানি টেরিটরির বামেনো অঞ্চলে স্থানীয় শিকারিদের সঙ্গে ১০ দিনের অভিযানে যোগ দেন। নদীপথ ধরে হাঁটার সময় তারা অগভীর পানিতে বেশ কয়েকটি অ্যানাকোন্ডাকে শিকারের অপেক্ষায় লুকিয়ে থাকতে দেখেন।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের আসন্ন সিরিজ 'পোল টু পোল উইথ উইল' এর চিত্রগ্রহণের কাজে অপ্রত্যাশিত এই আবিষ্কারের ঘটনা ঘটে।
এ সম্পর্কে অধ্যাপক ব্রায়ান ফ্রাই বলেন, 'সাপগুলোর আকার ছিল অবিশ্বাস্য, একটি স্ত্রী সাপ ৬ দশমিক ৩ মিটার (২০ দশমিক ৭ ফুট) লম্বা ছিল।'
স্থানীয়দের কাছে এই এলাকায় ৭ দশমিক ৫ মিটার (২৪ দশমিক ৬ ফুট) লম্বা এবং ৫০০ কেজি ওজনের সাপ দেখতে পাওয়ার কথা শুনেছেন বলেও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাজ্যের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম অনুসারে, গ্রিন অ্যানাকোন্ডা হলো বিশ্বের সবচেয়ে ভারী সাপ। এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে ভারী সাপের ওজন ২২৭ কেজি (৫০০ পাউন্ড)। যা লম্বায় ছিল ৮ দশমিক ৪৩ মিটার এবং ১ দশমিক ১১ মিটার (৩ দশমিক ৬ ফুট) প্রশস্ত।
অন্য একটি প্রজাতি যাকে রেটিকুলেটেড পাইথন বলা হয়, ৬ দশমিক ২৫ মিটারের (২০ দশমিক ৫ ফুট) বিশ লম্বা হতে পারে, তবে ওজনে হালকা।
প্রাণী গবেষকরা জানান, নতুন আবিষ্কৃত নর্দার্ন গ্রিন অ্যানাকোন্ডা প্রজাতি প্রায় ১০ মিলিয়ন বছর আগে সাউদার্ন গ্রিন অ্যানাকোন্ডা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তারা জিনগতভাবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ আলাদা।
অধ্যাপক ব্রায়ান ফ্রাই বলেন, 'এ পরিপ্রেক্ষিতে বলতে গেলে মানুষ ও শিম্পাঞ্জি জিনগতভাবে মাত্র ২ শতাংশ আলাদা।'
এমডিপিআই ডাইভারসিটি জার্নালে সাপের নতুন প্রজাতি আবিষ্কারের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তবে অ্যামাজনে টিকে থাকতে গিয়ে সাপটিকে হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
অধ্যাপক ব্রায়ান ফ্রাই বলেন, 'কৃষি সম্প্রসারণের জন্য আমাজনে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলের ২০-৩১ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে হতে পারে ৪০ শতাংশ।'
Comments