ফোডেন-হালান্ডের নৈপুণ্যে ইউনাইটেডের বিপক্ষে সিটির জয়

ছবি: এএফপি

শুরুতে পিছিয়ে পড়ার পর প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ হাতছাড়ায় হতাশা বাড়ল ম্যানচেস্টার সিটির। তবে দ্বিতীয়ার্ধে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়ে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপাধারীরা। ফিল ফোডেন ও আর্লিং হালান্ডের নৈপুণ্যে শহর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারাল তারা।

রোববার রাতে ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩-১ গোলে জিতেছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। বিরতির আগে সফরকারীদের এগিয়ে দেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড মার্কাস র‍্যাশফোর্ড। বিরতির পর তার জাতীয় দলের সতীর্থ মিডফিল্ডার ফোডেনের জোড়া গোলে সমতা টানার পাশাপাশি স্বাগতিকরা পেয়ে যায় লিড। এরপর যোগ করা সময়ে নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার হালান্ড জাল খুঁজে নিলে তাদের জয় নিশ্চিত হয়ে পড়ে।

এই জয়ে লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সঙ্গে ব্যবধান ১ পয়েন্টে নামিয়ে আনল সিটি। দুইয়ে থাকা দলটি অর্জন করেছে ২৭ ম্যাচে ৬২। সমান ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট পেয়েছে অলরেডরা। ইউনাইটেড ২৭ ম্যাচে ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে।

ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে গোটা ম্যাচেই দাপট ছিল সিটির। ৭৪ শতাংশ সময় বল দখলে রাখে তারা। গোলমুখে ২৭টি শট নিয়ে দলটি লক্ষ্যে রাখে আটটি। বিপরীতে, ইউনাইটেডের নেওয়া স্রেফ তিনটি শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল একটি।

খেলার ধারার বিপরীতে অষ্টম মিনিটে উল্লাসে মাতে ইউনাইটেড। গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানার উঁচু করে বাড়ানো বল পেয়ে ব্রুনো ফার্নান্দেস খুঁজে নেন র‍্যাশফোর্ডকে। ২৫ গজ দূর থেকে জোরালো শট নেন তিনি। সিটির গোলরক্ষক এদারসনকে পরাস্ত করে ক্রসবার কাঁপিয়ে বল পৌঁছে যায় জালে।

১৭তম মিনিটে ব্যবধান বাড়াতে পারত এরিক টেন হাগের দল। মাঝমাঠের সামনে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন র‍্যাশফোর্ড। কেবল গোলপোস্টের নিচে থাকা এদারসন ছিলেন বাধা। কিন্তু হেড করে বল নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে গড়বড় করে ফেলেন র‍্যাশফোর্ড। ডি-বক্সের ধারেকাছেও যেতে পারেননি তিনি। পেছন থেকে এসে আলগা বল বিপদমুক্ত করেন কাইল ওয়াকার।

গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে সিটিজেনরা। দুই মিনিট পর সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন ফোডেন। কেভিন ডি ব্রুইনার পাসে ওনানাকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কর্নারের বিনিময়ে তার প্রচেষ্টা রুখে দেন ইউনাইটেডের গোলরক্ষক। ৩৩তম মিনিটে হালান্ডের হেড চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। পরের মিনিটে রদ্রির ভলি ব্যর্থ করে দেন ওনানা।

প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে হালান্ডের অবিশ্বাস্য মিসে স্কোরলাইন ১-১ করতে পারেনি সিটি। রদ্রির ক্রসে ডি-বক্সের ডানদিক থেকে হেড করে বল একদম গোলমুখে ফেলেন ফোডেন। ওনানা সময়মতো পিছিয়ে আসতে পারেননি। ফলে অপেক্ষা ছিল কেবল ফাঁকা জালে হালান্ডের বল পাঠানোর। কিন্তু গোটা স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে দিয়ে তার আলতো ভলি চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।

আক্ষেপের ঝুলি বন্ধ করে দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে সিটি। ইউনাইটেডকে কোনো সুযোগই দেয়নি তারা। একে একে তারা আদায় করে নেয় তিনটি গোল। প্রথমার্ধে বেশ কিছু দারুণ সেভ করা ওনানা এই দফায় আর পারেননি দলকে বাঁচাতে।

র‍্যাশফোর্ডের মতোই দর্শনীয় শটে ৫৬তম মিনিটে লড়াইয়ে সমতা টানেন ফোডেন। রদ্রির পাসে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠান তিনি। ৮০তম মিনিটে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলটি পান ফোডেন। বদলি নামা হুলিয়ান আলভারেজের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে তিনি ঢুকে পড়েন ডি-বক্সে। এরপর গড়ানো শটে ভেদ করেন নিশানা।

এগিয়ে যাওয়ায় পাওয়া আত্মবিশ্বাসে আরও দাপুটে হয়ে ওঠে গার্দিওলার দল। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে নিজের আগের ভুলের ক্ষতে প্রলেপ দেন হালান্ড। সোফিয়ান আমরাবাতের কাছ থেকে বল কেড়ে ডি-বক্সে ঠেলে দেন রদ্রি। ঠাণ্ডা মাথায় বাঁ পায়ের কোণাকুণি শটে বাকিটা সারেন হালান্ড। প্রিমিয়ার লিগের গোলদাতাদের তালিকায় শীর্ষে থাকা তারকার গোল সংখ্যা বেড়ে হলো ১৮টি।

Comments

The Daily Star  | English
Domestic violence killing women in Bangladesh

Domestic violence in Bangladesh: When numbers speak of the silence

When we are informed that 133 women have been killed by their husbands in seven months, it is no longer just a number.

8h ago