৭ বছরে ১ লাখ ৭৩ হাজার অগ্নিকাণ্ড, মৃত্যু প্রায় ৩ হাজার

প্রতীকী ছবি

নিরাপত্তা বিধিমালার দুর্বল প্রয়োগে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেড়েই চলেছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুসারে, গত বছর তার আগের বছরের তুলনায় অন্তত ২৭ হাজার ৬২৪টি অগ্নিকাণ্ডে ১০২ জন নিহত ও ২৮১ জন আহত হয়েছে।

এছাড়াও গত সাত বছরে আগুনে সারা দেশে ২ হাজার ৮৮৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং এসময়ে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭০৯টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, এর মধ্যে ৬৪ হাজার ৪৪৭টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে।

বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক আলী আহমেদ খান বলেন, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে।

তিনি বলেন, অগ্নিনির্বাপণ বিধিমালা না মেনে অপরিকল্পিত নির্মাণ প্রকল্প অনেক সময় এমন ট্র্যজেডির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

তিনি আরও বলেন, যারা এসব নীতির সঙ্গে জড়িত সেসব সরকারি সংস্থাগুল্রকে নিয়ম প্রয়োগে আরও কঠোর হতে হবে।

'অমান্যকারীদের যথাযথ শাস্তি দেওয়া উচিত এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।'

বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ শপিং মলে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি আগুনে ৪৬ জন প্রাণ হারান। মারাত্মক ঝুঁকির কথা জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস সাত তলা ভবনের মালিকদের তিনটি নোটিশ দিলেও আইনগত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ২৪ হাজার ১৯৩টি ভবন পরিদর্শন করে ৭ হাজার ৮০১টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৮০৩টি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর আদিল মোহাম্মদ খান বলেছেন, সরকারি সংস্থাগুলো নিরাপত্তা বিধি প্রয়োগে আন্তরিক নয়।

এই পরিস্থিতির জন্য ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন, রাজউক ও স্থপতিরাই অনেকাংশে দায়ী।

সরকারি সংস্থাগুলো শুধু নোটিশ দেয় কিন্তু আইনি ব্যবস্থা নেয় না। এ কারণে ট্র্যাজেডির সংখ্যা বাড়তে থাকে, তিনি বলেন।

ফায়ার সার্ভিসের সাবেক প্রধান আলী আহমেদ পরামর্শ দেন, প্রতিটি ভবনে ফার্স্ট রেসপন্ডারদের নিজস্ব টিম থাকা উচিত।

ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তার মতে, কর্মকর্তারা প্রায়শই নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন না কারণ তারা দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া জুড়ে আদালতের শুনানিতে অংশ নিতে চান না। এছাড়া কিছু ভবন মালিক ক্ষমতাবান হওয়ায় তারা পরিদর্শকদের হয়রানি করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও নেই।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের পরিদর্শকরা নোটিশ দিয়ে থাকেন। এরপর আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতে গিয়ে মামলা করি। আমাদের সীমাবদ্ধতা একটাই, সিটি করপোরেশন ও রাজউকের মতো ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের নেই। এজন্য আমরা অন্যান্য সংগঠনের তুলনায় কম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি।'

Comments

The Daily Star  | English

Pakistan minister denies nuclear body meeting after offensive launched on India

Pakistan's military said earlier that the prime minister had called on the authority to meet. The information minister did not respond immediately to a request for comment.

1h ago