১৮৮ রানে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস
স্বীকৃত ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিলে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে মাঠে নামা তাইজুল ইসলাম। গড়েছিলেন দারুণ প্রতিরোধ। কিন্তু তার প্রতিরোধ ভাঙে লাঞ্চের পরপরই। এরপর সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও শরিফুলের ব্যাটে কিছুটা আগালেও লঙ্কানদের বড় লিড এড়াতে পারেননি তারা। দুইশর আগেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।
শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে এসে ১৮৮ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। ফলে প্রথম ইনিংসে ৯২ রানের লিড নিল লঙ্কানরা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৮০ রান করেছিল সফরকারীরা।
সকালে আগের দিনের ৩ উইকেটে ৩২ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ প্রথম ঘণ্টাতেই দুই উইকেট হারিয়ে বসে। এরপর লাঞ্চে যাওয়ার আগে একটি। ফিরে এসে তো সেট ব্যাটার তাইজুলকে হারায় দলটি। তাইজুল প্রতিরোধ গড়তে না পারলে কিংবা নবম উইকেটে খালেদ ও শরিফুল জুটি গড়তে না পারলে হয়তো লিডটা আরও বড় হতে পারতো শ্রীলঙ্কার।
এদিন বল হাতে নিয়েই টাইগার শিবিরে তোপ দাগান লাহিরু কুমারা। লাঞ্চের আগের তিনটি উইকেটই তুলে নেন এই পেসার। দারুণ ধৈর্য নিয়ে ব্যাটিং করা মাহমুদুল ইসলাম জয়কে ফেরান বল হাতে নিয়েই। তার অফস্টাম্পের বাইরে রাখা বলে খোঁচা মারতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন জয়। তৃতীয় স্লিপে তার ক্যাচ লুফে নেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। ৪৬ বলে ১২ রান করেন এই ওপেনার।
এরপর স্কোরবোর্ডে ৩০ রান যোগ করতেই শাহাদাত হোসেন দিপুকে তুলে নেন কুমারা। অফস্টাম্পের বাইরে রাখা বলটি কিছুটা ভেতরের দিকে ঢুকছিল। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলতে গেলে বাড়তি বাউন্সে ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় প্রথম স্লিপে। সহজ ক্যাচ লুফে নেন ধনাঞ্জয়া। ২৬ বলে ১৮ রান করেন শাহাদাত।
৮৩ রানে পাঁচ উইকেট হারানো দলের হাল লিটন দাসকে নিয়ে ধরেন তাইজুল। ৪১ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন এ দুই ব্যাটার। কিন্তু বরাবরের মতো আশা জাগিয়ে হতাশ করেন লিটন। কুমারার ভেতরের দিকে ঢোকা লেন্থ ডেলিভারি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে গেলে ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ৪৩ বলে ২৫ রান করেন লিটন।
লাঞ্চের পর টাইগার শিবিরে তোপ দাগান কাসুন রাজিথা। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তাইজুল। কাসুন রাজিথার অফস্টাম্পের বেশ বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন তিনি। ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের হাতে। ৮০ বলে খেলেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস। ৬টি চারে সাজান নিজের ইনিংসটি।
এরপর টাইগারদের শেষ স্বীকৃত ব্যাটার মেহেদী হাসান মিরাজকেও তুলে নেন রাজিথা। তার লেগ স্টাম্পের উপর রাখা লেন্থ বলে ফ্লিক করতে গিয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যায় আকাশে। পয়েন্টে সহজেই সেই ক্যাচ লুফে নেন নিশান মাদুশাঙ্কা। ৩৪ বলে ১১ রান করেন মিরাজ।
এরপর শরিফুল ইসলামের সঙ্গে সৈয়দ খালেদ আহমেদ গড়ে তোলেন মূল্যবান এক জুটি। নবম উইকেটে ৪০ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। প্রভাত জয়াসুরিয়ার এক ওভারে তো তিনটি ছক্কায় ১৯ রান তুলে নেন এ দুই ব্যাটার। তাতেই লঙ্কানদের লিড একশ রানের নিচে নামিয়ে আনেন তারা।
তবে পানি পানের বিরতির পরপরই এ জুটি ভাঙেন বিশ্ব ফার্নান্ডো। শরিফুলকে ফেরান তিনি। তার শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন শরিফুল। নিজেই সেই ক্যাচ ধরেন ফার্নান্ডো। ২১ বলে ১৫ রান করেন শরিফুল। এরপর খালেদকেও তুলে নেন ফার্নান্ডো। ২৮ বলে ২২ রান করেন খালেদ।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে ৪৮ রানের খরচায় ৪টি উইকেট তুলে নেন ফার্নান্ডো। ৩১ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট পান কুমারা। এছাড়া ৫৬ রানে ৩টি শিকার রাজিথার।
Comments