নারায়ণগঞ্জে র্যাবের অভিযানে ১৭ ‘কিশোর গ্যাং’ সদস্য গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিশেষ অভিযানে তরুণ বয়সী ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
আজ সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির উপপরিচালক মেজর সানরিয়া চৌধুরী জানান, রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মিজমিজি এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা দুটি অপরাধী দলের সদস্য।
গ্রেপ্তার হয়েছেন 'টেনশন গ্রুপ' এর দলনেতা রাইসুল ইসলাম সীমান্ত (২২), আরিফুল ইসলাম (২৬), হুমায়ুন হোসেন (২৪), সাজ্জাদ হোসেন (২৬), মো. রাব্বি (২৫), রোবায়েত ইসফাক প্রিতম (২৯), 'ডেভিল এক্সো গ্রুপ' এর দলনেতা মো. সারিব (১৯), মো. আশিক (১৯), মো. নাঈম (১৯), তুহিন হোসেন (১৮), রোসমান (১৯), মো. শাহাদৎ (১৯), মো. সৌরভ (২০), মো. মাহিন (২০), মো. তুষার (২০), মো. সৌরভ (১৯) ও মো. আরিফ (১৯)।
সংবাদ সম্মেলনে সানরিয়া চৌধুরী জানান, গত বছরের ৩১ আগস্ট, ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জে মধ্যরাতে পরিচিত কিশোর গ্যাং টেনশন গ্রুপের নেতা সীমান্ত ও তার বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ ছাড়াও তাদের সক্রিয় এলাকায় উঠতি বয়সী ছাত্রদের টার্গেট করে মাদকদ্রব্য সেবনে প্ররোচিত করে তাদের গ্রুপে যোগদান করিয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদের দেওয়া তথ্যের বরাতে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, রাইসুল ইসলাম সীমান্ত টেনশন গ্রুপের দলনেতা এবং মো. সারিব ডেভিল এক্সো গ্রুপের দলনেতা। গ্রেপ্তার আসামিরা ছিনতাই এবং বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মালবাহী ও যাত্রীবাহী পরিবহণে নিয়মিতভাবে চাঁদাবাজি করে। আসামিরা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পরিকল্পিতভাবে দলবদ্ধ হয়ে শক্তির মহড়া বা দাপট দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে। এলাকাবাসী তাদের হিংস্রতা, অত্যাচার ও নির্যাতনের ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
টেনশন গ্রুপের দলনেতা রাইসুল ইসলাম সীমান্ত ও সদস্য রোবায়েত ইসফাক প্রিতম এবং ডেভিল এক্সো গ্রুপের সদস্য মো. আশিক ও মো. নাঈম বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা ও ধর্ষণসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
গ্রেপ্তার সীমান্ত সিদ্ধিরগঞ্জে থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা শফিকুল ইসলামের ছেলে এবং প্রিতম জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবির ছেলে।
এর আগে ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে রবির বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। বাসায় রবিকে না পেয়ে তার ছেলে প্রিতমকে আটক করে নিয়ে যায়। পরদিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় বিস্ফোরক আইনে পুলিশের করা পুরোনো এক মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে প্রিতমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
র্যাবের অভিযানে ছেলের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলাম রবি বলেন, 'আমার ছেলে সারাদিন রোজা রেখে সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে ইফতারের জন্য বের হয়। পরে শুনি ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব, তারা সবাই ইফতারের ওই আয়োজনে ছিল। আমার ছেলের তো কিশোর না, তাকে কীভাবে কিশোর গ্যাং-এর সদস্য বলা হচ্ছে?'
Comments