কেজি দরে তরমুজ বিক্রি কমছে যে কারণে

তরমুজ
ছবি: এমরান হোসেন/স্টার

গত কয়েক বছর ধরে তরমুজের মৌসুম শুরু হলেই আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় কেজি দরে বিক্রি নিয়ে। ক্রেতারা তরমুজ কিনতে চান আকৃতিভেদে তাদের চাহিদার সঙ্গে মিলিয়ে। কিন্তু, বিক্রেতারা চান কেজি দরে বিক্রি করতে।

এ বছরও বাজারে তরমুজ আসার পর কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। রোজার শুরুর দিকে কেজিপ্রতি তরমুজ ৮০ টাকায় বিক্রি হয় ঢাকার বিভিন্ন বাজারে।

তবে, এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের টানাপোড়েনের মধ্যে সম্প্রতি ঢাকায় বিভিন্ন বাজারে তরমুজ আকৃতিভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি শুরু হয়েছে।

কারওয়ান বাজারে তরমুজ কিনতে এসেছিলেন সাদ্দাম হোসেন। পেশায় দোকানদার সাদ্দাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তরমুজ কিনব, এইটা মাপামাপির কী আছে। আমি একটি তরমুজ কিনেছি ১০০ টাকায়। ওজনে ৪-৫ কেজি হবে। ৩০ টাকা কেজি দরে কিনলে আমার লাগত ১২০-১৫০ টাকা। কেজি দরে কিনলে ঠকতে হতো।'

এদিকে, গত প্রায় ২০ দিন ধরেই 'শ' হিসাবে (১০০ পিস) তরমুজ বিক্রি করছে কারওয়ান বাজারের ফলের আড়ত সোনার বাংলা বাণিজ্যালয়।

প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার আওলাদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তারা প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার তরমুজ বিক্রি করেন। একজন খুচরা বিক্রেতার কাছে সর্বনিম্ন ৫০টি তরমুজ বিক্রি করা হয়। আকারভেদে তরমুজের দাম ভিন্ন হয়।

ম্যানেজার আওলাদ বলেন, 'আগে কেজিতেও বিক্রি করেছি আমরা। কেজি দরে বিক্রি করা আমাদের জন্য সুবিধাজনক। কিন্তু সমালোচনা এড়াতে আমরা এবার কেজিতে বিক্রি করছি না।'

কারওয়ান বাজারের সব আড়ৎদারই এখন আকার ভেদে বিভিন্ন দামে তরমুজ বিক্রি করছে বলে জানান তিনি।

আরও জানা গেল, কারওয়ান বাজার অন্তত ৩০ জন খুচরা ব্যবসায়ী তরমুজ বিক্রি করেন, যাদের বেশিরভাগই এখন আর কেজি দরে নয় পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রি করেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, সরবরাহ বেশি থাকায় এবং আবহাওয়া তুলনামূলক ঠান্ডা থাকায় তরমুজের চাহিদা কম। এ কারণে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী তারা আকারভেদে ভিন্ন ভিন্ন দামে তরমুজ বিক্রি করছেন, কেজি দরে নয়।

তরমুজের খুচরা বিক্রেতা সাকির ঢালি আজ বুধবার ভোরে কারওয়ান বাজার আড়ত থেকে ২০০টি তরমুজ কেনেন ২৪ হাজার টাকায়।

তিনি ডেইলি স্টারকে জানান, বিকেলের মধ্যে তিনি ১৫০টি বিক্রি করতে পেরেছেন। সবগুলোই আকৃতিভেদে বিভিন্ন দামে।

সাকির বলেন, 'তরমুজগুলো সাড়ে ৪ কেজি থেকে ৭ কেজির মধ্যে। কিন্তু আগে বেশি ওজনেরগুলো বিক্রি হয়। ছোটগুলোর চাহিদা তুলনামূলক কম।'

তিনি আরও জানান, তরমুজগুলো তিনি তিন ভাগে ভাগ করেন। আকারে বড় ৫০টি প্রতিটি ২০০ টাকায়, মাঝারি ১০০টি প্রতিটি ১৫০ টাকায় ও ছোট ৫০টি তরমুজ ১০০ টাকা করে বিক্রি করেন তিনি।

এই ব্যবসায়ী বলেন, 'তরমুজের আকারের কারণে আমাদের একটু সমস্যায় পড়তে হয়। বড় তরমুজের মধ্যে মাঝারি আকৃতির কিছু ঢুকে যায়। বা কখনো ছোট তরমুজে মধ্যে বড় তরমুজ ঢুকে যায়।'

তবে এখনো কিছু এলাকায় কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। খুচরা ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া শেওড়াপাড়া-কাজীপাড়া এলাকায় ভ্যানে তরমুজ বিক্রি করেন। আজ বুধবার ৩৫ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করতে দেখা যায় তাকে।

জানতে চাইলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ক্রেতাদের তরমুজের ওজন সম্পর্কে ধারণা কম। ৭ কেজি ওজনের তরমুজ তারা বলে ৪-৫ কেজি। তাই আমি ঝামেলা এড়াতে তাদের ওজন দেখিয়ে কেজি দরে বিক্রি করছি। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা কারও ঠকে যাওয়ার ভয় থাকে না।'

Comments

The Daily Star  | English

Interest payments, subsidies soak up almost half of budget

Interest payments and subsidies have absorbed nearly half of Bangladesh’s total budget expenditure in the first seven months of the current fiscal year, underscoring growing fiscal stress and raising concerns over public finances.

2h ago