ভারতের ৪৮ বছরের রেকর্ড ভেঙেই থামল শ্রীলঙ্কা

ছবি: ফিরোজ আহমেদ/স্টার

তাইজুল ইসলামের বলে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলেছিলেন কামিন্দু মেন্ডিস। কিন্তু বল চলে যায় সোজা বোলারের হাতে। ওইদিকে উইকেট ছেড়ে বের হয়ে যান আসিথা ফার্নান্ডো। ফিরতে গিয়েও পারেননি। ফলে অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। কিন্তু এর আগে দলটি গড়ে নতুন এক রেকর্ড। কোনো সেঞ্চুরি ছাড়া টেস্টের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের পুঁজি গড়ে দলটি।

রোববার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের দ্বিতীয় দিনে এসে ৫৩১ রানে অলআউট হয়েছে শ্রীলঙ্কা। ইনিংসে দলের হয় ছয় ব্যাটার ফিফটি পেলেও কোনো সেঞ্চুরি হয়নি।

এর আগে ১৯৭৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো সেঞ্চুরি ছাড়া ৯ উইকেটে ৫২৪ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছিল ভারত। সেই ম্যাচেও ভারতের ছয় ব্যাটার ফিফটি করেছিলেন। এতো দিন এটাই ছিল সেঞ্চুরি ছাড়া সর্বোচ্চ পুঁজির ইনিংস।

তবে সিলেট টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি তোলা কামিন্দু এদিনও তিন অঙ্কের দেখা প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন। কিন্তু সতীর্থদের ব্যর্থতায় ৯২ রানের থামতে হয় তাকে। তবে তার ইনিংসটিই দলের সর্বোচ্চ। ১৬৭ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস।

এদিনও শ্রীলঙ্কার এমন দাপুটে ব্যাটিং সম্ভব হয়েছে মূলত ক্যাচ মিসের মহড়ায়। ক্যাচ ড্রপ করায় প্রথম দিনের চেয়ে এদিন আরও এক কাঠি সরেস ছিলেন টাইগাররা। এদিন চারটি সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন তারা। যার একটি তো তিনজন মিলে। তাতে আক্ষেপটাই দীর্ঘায়ত হয় স্বাগতিকদের।

সকালে আগের দিনের ৪ উইকেটে ৩২৪ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও দিনেশ চান্দিমাল। পঞ্চম উইকেট জুটিতে আগের দিনই ২৫ রানের জুটি গড়া এ দুই ব্যাটার স্কোরবোর্ডে যোগ করেন আরও ৬১ রান। শুরতেই ভাঙতে পারতো এ জুটি। খালেদের বলে ব্যক্তিগত ২৫ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন ধনাঞ্জয়া। তবে স্লিপে নিচু হওয়া ক্যাচ ধরতে পারেননি মিরাজ।

তবে চান্দিমালকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। টার্ন ও বাউন্সে তাকে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গ্লাভসবন্দী করেন তিনি। ৫৯ রান করেন চান্দিমাল। এরপর ধনাঞ্জয়ার সঙ্গে জুটি বাঁধেন কামিন্দু মেন্ডিস। সিলেট টেস্টের মতো এদিনও ভালো জুটি গড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। ৩৬ রানের জুটিও গড়েন। দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভারেই এই জুটি ভাঙেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ধনাঞ্জয়াকে ফেলেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। রিভিউ নিয়েছিলেন লঙ্কান অধিনায়ক। তবে আম্পায়ার্স কলে টিকে থাকে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। ৭০ রান করেন ধনাঞ্জয়া।

অধিনায়কের বিদায়ের পর জয়াসুরিয়াকে হাল ধরেন কামিন্দু। সপ্তম উইকেটে ৬৫ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। এ জুটি আগেই ভাঙার বেশ কিছু সুযোগ এসেছিল টাইগারদের সামনে। জয়াসুরিয়া যখন ৬ রানে তখন শান্ত, শাহাদাত এবং জাকির মিলেও ধরতে পারেননি ক্যাচ। এরপর ব্যক্তিগত ২৪ রানে তাইজুল ইসলামের গুড লেন্থে রাখা বলে ব্যাটের ভেতরের দিকের কানায় লাগলেও গ্লাভসে জমাতে পারেননি উইকেটরক্ষক লিটন। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলে বিদায় করেছেন সাকিব। তবে এর আগে খেলেছেন ক্যারিয়ার সেরা ২৮ রান।

অন্যদিকে এক প্রান্ত আগলে রেখে বাংলাদেশের হতাশা বাড়াতে থাকেন কামিন্দু। জীবন পান তিনিও। ব্যক্তিগত ৬০ রানেই থামতে পারতেন। তাইজুলের বলে স্লগসুইপ করতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সহজ ক্যাচ ধরতে পারেননি হাসান মাহমুদ। এরপর বিশ্ব ফার্নান্ডোকে রানআউট করেন শান্ত। লাহিরু কুমারাকে বোল্ড করে দেন মিরাজ। আর কুমারার রানআউটে শেষ হয় তাদের ইনিংস।

Comments

The Daily Star  | English

RMG leaders urge rate cuts, energy fixes as US tariffs loom

Industry leaders urged the government to urgently address these domestic constraints.

1h ago