অনন্ত জলিল-বর্ষার জীবনের অজানা কথা

ছবি: শেখ মেহেদি মোর্শেদ/স্টার

চিত্রনায়ক, প্রযোজক, ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল ও তার স্ত্রী, চিত্রনায়িকা বর্ষা তাদের বিবাহিত জীবনের ১২ বছর পার করেছেন।

সম্প্রতি এই দুই তারকা এসেছিলেন দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে। ম্যাচিং পোশাকে স্টুডিওতে ছবি তুলেছেন, আড্ডায়-আনন্দে সময় কাটিয়েছেন। এই দুই তারকা দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন ঈদের ছুটি উদযাপনের পরিকল্পনা, তাদের অভিনীত আসন্ন সিনেমা 'নেত্রী: দ্য লিডার' মুক্তিসহ আরও অনেক বিষয় নিয়ে।

প্রতিবছর ঈদের সময় ছুটি কাটাতে দেশের বাইরে যান। এবার কোন দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে? 

অনন্ত জলিল: এইবার ঈদের ছুটিতে তুরস্কে যাবো ভেবে রেখেছি। সেখানে ঘুরতে যাওয়ার পাশাপাশি 'নেত্রী: দ্য লিডার' সিনেমার একটা রোমান্টিক গানের সিকোয়েন্সের শুটিং করব বলেও ঠিক করেছি। তুরস্ক, ইস্তাম্বুলের বৈচিত্র্যময় লোকেশনে শুটিং করার খুব ইচ্ছা আছে। সুন্দর লোকেশন গানের আবেদনকে আরও বাড়িয়ে তোলে। সেই কারণে আমরা সেখানে যাওয়ার একটা পরিকল্পনা করেছি। বাকিটা দেখি কী হয়! 

বর্ষা: একটা গোপন কথা বলি উনি (অনন্ত জলিল) ঈদের ছুটিতে কোথাও গেলে শুধু ঘুরতে যান না। আগে ওই দেশে তার ব্যবসায়িক মিটিং সেট করেন তারপর সেখানে ঘুরতে যান। একইসাথে ঘোরাঘুরি, ব্যবসা দুটোই করেন। তবে আমরা যে দেশেই যাই না কেন সব কাজ শেষে ঘুরতে খুব পছন্দ করি। 

আপনার প্রতিটা সিনেমার শুটিং হয় দেশে ও দেশের বাইরে। অনেক বাজেট লাগে একেকটা সিনেমার জন্য। এত টাকা কী উঠে আসে সিনেমা থেকে? 

অনন্ত জলিল: এখন সিনেমা তো শুধু দেশের সিনেমাহলে চলে না। বিশ্বের অনেক দেশেই আমাদের দেশের সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে। সেখান থেকে একটা বড় বাজেট উঠে আসছে। এছাড়া গান, ডিজিটাল রাইটস, টেলিভিশনে স্বত্ব বিক্রি থেকে শুরু করে অনেকভাবেই বাজেট আসছে। তাই বিগ বাজেটের সিনেমা নির্মাণ করা এই সময়ে কোনো ব্যাপারই না। আর আমি অনেক বছর আগে এই দেশে প্রথম ডিজিটাল সিনেমা নির্মাণ 'খোঁজ, দ্য সার্চ' করেছিলাম। আমি বিশ্বাস করি মন দিয়ে কোনোকিছু চাইলে সেটা সম্ভব হয়।  

ছবি: শেখ মেহেদি মোর্শেদ/স্টার

আগেকার সিনেমা আর এখনকার সিনেমার মধ্যে পার্থক্য কী?  

অনন্ত জলিল: আগে সোনালি যুগে  রাজ্জাক, শাবানা, কবরী ম্যাডামদের মতো কিংবদন্তী অভিনয়শিল্পীদের অভিনয় দর্শকদের অনায়াসে মোহিত করতে পারতো। তারা একটা গাছের নিচে, গাছের চারপাশে গান গাইলেও দর্শকরা পছন্দ করতো। এখন  ইন্টারনেটের বিস্তারের কারণে সবকিছু কঠিন হয়ে গেছে। সিনেমাহলগুলোতে দর্শকদের সম্পৃক্ত করার প্রতিযোগিতা কঠিন হয়ে উঠেছে। সিনেমার নির্মাতারা ঈদে মুক্তির জন্য ভিড় করছেন। অনেক সিনেমা মুক্তি দিচ্ছেন। এখন সিনেমার গল্প, লোকেশন, অ্যাকশন, অনেক কিছুতেই মনোযোগ দিতে হচ্ছে। অনেক পার্থক্য আগের আর এখনকার সিনেমার মধ্যে। 

আপনাদের আগামী সিনেমা 'নেত্রী: দ্য লিডার' কবে আসবে?

অনন্ত জলিল: দর্শকদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। যেহেতু আমার স্ত্রী বর্ষা এই সিনেমার প্রযোজক। তাই সিনেমা মুক্তির তারিখের বিষয়ে আমার নেত্রীর কাছ থেকেই অনুমতি নিতে হবে। এই সিনেমায় আমি তার দেহরক্ষী হিসেবে অভিনয় করেছি। আমাকে অনেক শারীরিক পরিশ্রম করতে হয়েছে। পানির নিচের দৃশ্যসহ কয়েকটি দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য কঠোর প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে। আমার স্ত্রীকে নেত্রী বলে সম্বোধন করা এবং তাকে দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করে সত্যিই একটি অনন্য অভিজ্ঞতা।

বর্ষা: যখন আমি 'মোস্ট ওয়েলকাম', 'মোস্ট ওয়েলকাম ২' এবং 'নিঃস্বার্থ ভালোবাসা' সিনেমাগুলো করছি তখন তাকে ভাইয়া বলে ডেকেছি আর দর্শকরা হলগুলোতে উল্লাস করেছে। কিন্তু 'নেত্রী, দ্য লিডার' একেবারে অন্যরকম একটা সিনেমা চরিত্র। এখানে একজন নেত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। এটা করা খুব সহজ নয়, অনেকেই হয়তো তার প্রতিকৃতিকে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তুলনা করতে পারেন। এই চরিত্রের জন্য যে বেশ কয়েকটি শাড়ি পরেছি, যা আমাদের  প্রধানমন্ত্রী পরেন। আমি আমার পোশাক এবং সংলাপের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।

আপনারা দুজন 'মাসুদ রানা' সিনেমায় অভিনয় করবেন এমনটা কথা রয়েছে। এজন্য কতটা প্রস্তুতি নিচ্ছেন?

অনন্ত জলিল: কাজী আনোয়ার হোসেনের লেখা মাসুদ রানা সিরিজের 'অপারেশন চিতা' অবলম্বনে জাজ মাল্টিমিডিয়া 'চিতা' সিনেমাটা নির্মাণ করছে। সেখানে আমরা অভিনয় করব। এটি আমার জন্য একটি স্বপ্নের প্রকল্প। এই সিনেমায় প্রচুর অ্যাকশন দৃশ্য রয়েছে, যা প্র্যাকটিস করছি।

বর্ষা: আমি মাসুদ রানা সিরিজের বইগুলো কিনে পড়ার চেষ্টা করছি। নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছি ভেতরে ভেতরে। আশা করছি ভালো একটা কিছু হবে। এই সিনেমায় অভিনয় করার জন্য আমি সত্যি মুখিয়ে আছি।

ছবি: শেখ মেহেদি মোর্শেদ/স্টার

আপনাদের ভালোবাসা, বিয়ে নিয়ে বলুন। কে প্রথম ভালোবাসি বলেছেন? দীর্ঘদিন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার মন্ত্র কী আপনাদের কাছে? 

অনন্ত জলিল: আমার আর বর্ষার বিয়ে হয়েছে ২০১১ সালে। তবে আমাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল ২০০৮ সালের শুরুর দিকে। 

বর্ষা: আমিই প্রথম তাকে ভালোবাসার কথা বলেছিলাম। 

অনন্ত জলিল: আমি অফিস থেকে সরাসরি বাসায় আসি। একা কোথাও যাই না। দুজন দুজনের প্রতি দায়িত্বশীল। সবকিছু দুজন মিলে করি এটাই আমাদের ভালোবাসার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার মন্ত্র। 

Comments

The Daily Star  | English

Neonatal mortality still high at 20 per 1,000 births

A recent study has raised concerns about their current condition, revealing operational issues that could threaten future progress.

14h ago