জাফলং-লালাখালের পথে পর্যটকদের গাড়িতে বাধা, সাউন্ডবক্স জব্দ
ঈদুল ফিতর ও পয়লা বৈশাখের ছুটিতে সিলেটের জাফলং, লালাখালসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের গাড়িবহর আটকে সাউন্ডবক্স জব্দ করেছে শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ এলাকার বাসিন্দারা।
গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে রাত পর্যন্ত সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জৈন্তাপুর উপজেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশকে কিছু না জানিয়ে তারা নিজেরাই এসব কর্মকাণ্ড করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে লোকজন পর্যটকবাহী যানবাহন থামিয়ে সাউন্ডবক্স জব্দ করতে থাকেন।
জব্দ করা সাউন্ডবক্সের বিপরীতে পর্যটকদের একটি করে টোকেন দেওয়া হয়, যাতে ফিরতি পথে টোকেন দেখিয়ে তারা সাউন্ডবক্স নিয়ে ফিরতে পারেন। কিন্তু ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকটি খোলা বাহনে লাঠিসোটা নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
এ ব্যাপারে দরবস্ত এলাকার বাসিন্দা এবং এই কাজের মূল উদ্যোক্তা আবু বকর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পর্যটনের নামে কিছু তরুণ-যুবক সাউন্ডবক্স বাজিয়ে খোলা ট্রাক কিংবা পিকআপে উশৃঙ্খলভাবে ভ্রমণ করে। এসব সাউন্ডবক্সের উচ্চশব্দে সড়কের পার্শ্ববর্তী বাড়িতে বসবাসরত মানুষজন—বিশেষ করে বৃদ্ধ, অসুস্থ রোগী ও শিশুদের অসুবিধা হয়। তাই আমরা স্থানীয়রা এ উদ্যোগ নিয়েছি।'
তাদের এ অবস্থান সাউন্ডবক্সের বিরুদ্ধে নাকি খোলা বাহনে অসতর্ক ভ্রমণের বিরুদ্ধে—এমন প্রশ্নের জবাবে আবু বকর বলেন, 'খোলা বাহনে ভ্রমণ এমনিতে যতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তার চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সাউন্ডবক্স বাজিয়ে নাচানাচি করতে থাকা।'
কিন্তু এই কাজে সহযোগিতা কিংবা শব্দদূষণ রোধে পুলিশ কিংবা প্রশাসনের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি বলে জানান আবু বকর। আর পর্যটকবাহী যানে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা ও কিশোর-তরুণদের মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, 'এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।'
জানতে চাইলে জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, 'উশৃঙ্খলভাবে যারা খোলা পিকআপ-ট্রাকে করে ভ্রমণ করছিল, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ অ্যাকশনে ছিল। তবে স্থানীয়দের উদ্যোগে তাদের বাধাদানের বিষয়টি আমার জানা ছিল না।'
বিষয়টি নিয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, 'ঈদ পূর্ববর্তী আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে খোলা ট্রাক-পিকআপে ভ্রমণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং এভাবে চলাচল বন্ধে উদ্যোগ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও মাঠে ছিলেন। তবে এভাবে স্থানীয়দের বাধা দেওয়ার বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হয়নি। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।'
Comments