যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ অব্যাহত, হাজারো শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

বিক্ষোভের কেন্দ্রে রয়েছে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে আছে ইসরায়েলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের যোগসূত্র ছিন্ন ও ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থায় অর্থায়ন প্রত্যাহার করা। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীরাও একই ধরনের দাবি জানিয়েছেন। 
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁবু খাটিয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন শিক্ষার্থীরা ছবি: রয়টার্স
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁবু খাটিয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন শিক্ষার্থীরা ছবি: রয়টার্স

সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে ক্যাম্পাস বিক্ষোভের ঝড় বইছে। এ সপ্তাহে দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

আজ শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এই বিষয়টি জানিয়েছে।

বিক্ষোভের কেন্দ্রে রয়েছে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে আছে ইসরায়েলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের যোগসূত্র ছিন্ন ও ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থায় অর্থায়ন প্রত্যাহার করা। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীরাও একই ধরনের দাবি জানিয়েছেন। 

ক্যাম্পাসে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা 'ক্যাম্প' বা শিবির তৈরি করে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন। গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণের প্রতিবাদে সব ধরনের শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছেন, যাদের মধ্যে আছে ফিলিস্তিনি, আরব, ইহুদি ও মুসলিম।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সর্বশেষ পরিস্থিতির বিস্তারিত তথ্য এখানে উল্লেখ করা হল।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

স্কুলের প্রেসিডেন্ট মিনুশ শফিকের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব নিয়ে আজ ফ্যাকাল্টি সিনেটে ভোট হবে। তার বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের জেরে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমনে পুলিশকে অনুমতি দিয়ে তিনি কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া

নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালুর ঘোষণা দিয়ে আগামী মাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিল করেছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই ক্যাম্পাস থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এমোরি ইউনিভার্সিটি

মোট ২৮ শিক্ষার্থীকে বিক্ষোভরত অবস্থায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের জননিরাপত্তা বিষয়ক ভাইস-প্রেসিডেন্ট শেরিল এলিয়ট জানান, বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর ট্রুপাররা গোলমরিচের গোলা নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের এক দল ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর 'অত্যধিক বলপ্রয়োগের' নিন্দা জানিয়েছেন।

টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স
টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স

ব্রাউন ইউনিভার্সিটি

বিশ্ববিদ্যালয় ১৩০ শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করেছে, যারা আচরণবিধি অমান্য করে ক্যাম্পাসে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আচরণবিধি অনুযায়ী আদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ইমারসন কলেজ

ইমারসন কলেজে অবস্থান ধর্মঘট পালন করার সময় ১০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় চার পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন।

ইনডিয়ানা ইউনিভার্সিটি

ক্যাম্পাস থেকে ৩৩ ব্যক্তিকে অবস্থান ধর্মঘটে অংশগ্রহণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।

জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি

ক্যাম্পাসে 'অননুমোদিত বিক্ষোভ কর্মসূচি' দমনে ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশকে অনুরোধ জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন এম গ্র্যানবার্গ এই তথ্য দেন।

বিক্ষোভকারীদের তাদের কর্মসূচি অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার অনুরোধ জানালেও তারা এতে সাড়া দেয়নি। 

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলস

ইউসিএলএ তে বৃহস্পতিবার 'অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ' শুরু হয়েছে।

ইউসিএলএ বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজার জন্য শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স
ইউসিএলএ বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজার জন্য শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স

নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি

বোস্টনের নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে শিক্ষার্থীরা। কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে তাঁবুর পাশে মানব বন্ধন তৈরি করতে দেখা গেছে।

এ ছাড়াও ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি, অস্টিনের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান, ইউনিভার্সিটি অব নিউ মেক্সিকো, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলি, ইয়েল, হার্ভার্ড, প্রিন্সটন ও মিনেসোটা ইউনিভার্সিটিতেও বিক্ষোভের সংবাদ পাওয়া গেছে।  

Comments

The Daily Star  | English
battery-run rickshaws in Dhaka

Banning rickshaws may not be the big traffic solution

Dhaka’s traffic is a complicated problem that needs multifaceted efforts to combat it.

1h ago