এটি একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্লাসরুম

পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাংগাশিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের একটি ক্লাসরুম। ছবি: স্টার

'একদিকে প্রচণ্ড রোদের তাপ, আরেকদিকে ক্লাসে কোনো ফ্যান নাই। আমরা কেমন করে ক্লাস করি?'

গরমের মধ্যে ক্লাস করা নিয়ে কথাগুলো বলছিল পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাংগাশিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।

রোজা আর ঈদের দীর্ঘ ছুটি এবং গরমের কারণে আরও এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর গত ২৮ এপ্রির স্কুল খোলে। সেদিন স্কুলটিতে গিয়ে দেখা যায় ওই স্কুলের সব শিক্ষার্থী তীব্র তাপদাহের মধ্যে হাসফাঁস করছে। শ্রেণিকক্ষে কোনো বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা না থাকায় তারা ঘর্মাক্ত ও ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়ের তিনটি ভবনের কোনোটিতেই ফ্যান নেই।

অন্যদিকে জরাজীর্ণ স্কুল ভবনটির ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে, বেড়িয়ে পড়েছে ছাদের রড।

ছবি: স্টার

সংস্কারাভাবে ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়া ও জানালায় গ্রিল না থাকায় চুরি হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে বৈদ্যুতিক পাখা লাগানো হচ্ছে না বলে জানান বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আবু ইউসুফ।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আমেনা বলেন, আমরা সবসময়য় আতঙ্কে থাকি কখন ছাদ খেকে পলেস্তারা খসে মাথার ওপরে পড়ে। এতে লেখাপড়াতেও মনোযোগ দিতে পারি না।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক জালাল হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের পশাপাশি আমরাও আতঙ্কে থাকি। দ্রুত ভবনটি মেরামত না করা হলে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্মাণের পর ভবনটি মেরামত না হওয়ায় এটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।

নারী শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে এলাকার কয়েকজনের সহায়তায় ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পাংগাশিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। শুরুতে টিনশেড ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও ১৯৯৫ সালে সরকারি সহায়তায় শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ একটি একতলা ভবন নির্মাণ করে যা দীর্ঘ দিন সংস্কারাভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জানালায় টিন দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রপাতি।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোশফিকুর রহমান বলেন, আমি ওই স্কুল ভবনটির দুরবস্থার কথা শুনেছি। শিগগিরই আমি বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে যাব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English

When homes become killing grounds

Husbands killed 19 women on average each month this year

54m ago