আমলাদের সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আলোচনা হয়নি: জনপ্রশাসনমন্ত্রী
জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ডিসি সম্মেলনে কোনো প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়নি। এমন কোনো চিন্তাও সরকারের নেই।
'সন্তানদের পড়াশোনার জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় চেয়েছেন আমলারা' এমন একটি বিষয় নিয়ে কিছুদিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার দুপুরে ডেইলি স্টারসহ আরও তিনটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে ফরহাদ হোসেন বলেন, সরকারের অগ্রাধিকারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। সরকার অগ্রাধিকার ঠিক করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে।
প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিশেষায়িত জ্ঞান অর্জনের জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কয়েক বছর আগে ডিসি সম্মেলনে প্রস্তাব উঠেছিল জানিয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে এবারো আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সরকার এখনি বিষয়টি নিয়ে সক্রিয়ভাবে চিন্তা করছে না।
আমলাদের সন্তানদের পড়ালেখার বিষয়ে তিনি বলেন, যদি কোনো বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হয়, সেখানে আমলাদের সন্তানদের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করতে তো বাধা নেই।
উদাহরণ দিয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, সরকারি কর্মচারীদের জন্য ঢাকায় একটি হাসপাতাল আছে। হাসপাতালটির নাম সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল হলেও এখানে সবাই চিকিৎসা নিতে পারেন। যদি কোনো বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হয় সেটা একক কারও জন্য হবে না। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণা হলো বিশ্বজনীন। নির্দিষ্ট কিছু মানুষের জন্য হলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় হয় না।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিউপি), মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর উদাহরণ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সরকার আমলাদের প্রশিক্ষণ ও জ্ঞানার্জনে সব সময় গুরুত্ব দেয়। এ কারণে সাভারের লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (পিএটিসি) এক হাজার জনের থাকার সুবিধাসম্বলিত ভবন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এসব বিষয়ে খুবই উৎসাহ দেন। দেশের আর কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে এত বড় পরিসরে প্রশিক্ষণের সুযোগ নেই।
আমলাদের সন্তানদের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্যুতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং মাঠ প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে এ প্রতিবেদকের। তারা বলছেন, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের যে কোনো উদ্যোগ বা প্রস্তাবের বিষয়ে যেভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে না জেনে সমালোচনা হয় সেটা পুলিশ বা অন্য কোনো বাহিনীর বিষয়ে দেখা যায় না।
আক্ষেপ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে অন্য অনেকে ব্যাংক, বিশ্ববিদ্যালয়, বিস্কুট, পাউরুটির ব্যবসা করে। কিন্তু আমলারা এসব কাজে নামেনি। পেশাগত উৎকর্ষের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে চাইলে কেন এতো সমালোচনা হয় বুঝতে পারি না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ এক কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মৌখিক প্রস্তাবের কথা উঠেছে। কিন্তু সন্তানদের জন্য ডিসিরা পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় চাইবে এমন অর্বাচীন কর্মকর্তা হয়তো প্রশাসনে নেই।
Comments