জন্ম নিবন্ধন: ডিএসসিসিকে কেন্দ্রীয় সার্ভার ব্যবহারের নির্দেশ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিজস্ব সার্ভারে ইতোমধ্যে সংরক্ষিত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের আওতাধীন জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সার্ভারে হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।

নিজস্ব সার্ভার থেকে বেরিয়ে এসে আবারো বার্থ রেজিস্ট্রার জেনারেলের কেন্দ্রীয় সার্ভারে যেতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে (ডিএসসিসি) নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। গত ১৩ মে এ চিঠি দেওয়া হলেও, গত ১১ দিনেও এই নির্দেশ পালন করেনি ডিএসসিসি।

রাজস্বের অর্থ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ডিএসএসসিতে গত বছর তিন মাস জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর নিজস্ব সার্ভার তৈরি করে ৪ অক্টোবর সংস্থাটি পুনরায় এই সেবা চালু করে। স্বতন্ত্র সার্ভার চালু হওয়ায় নিবন্ধন ফির অর্থ সরাসরি পাচ্ছে ডিএসসিসি।

এখন ডিএসসিসির আওতাভুক্ত এলাকার স্থায়ী বাসিন্দারা সংস্থার নিজস্ব জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সার্ভারে গিয়ে সহজে আবেদন করতে পারছেন। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের কাজ রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা সার্ভারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর সঙ্গে ডিএসএসসির নিজস্ব সার্ভারের সংযোগ নেই। ফলে ডিএসসিসির সার্ভারে নিবন্ধনের তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে জমা হচ্ছে না। ফলে জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে একজন নাগরিক যে ২২টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা পাবেন, এর কোনটিই পাচ্ছেন না।

রেজিস্ট্রার জেনারেলের কেন্দ্রীয় সার্ভার ব্যবহার করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি করপোরেশন শাখা-১ এর উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম গত ১৩ মে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানকে চিঠি দেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, এ (স্থানীয় সরকার) বিভাগের আওতাধীন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের কেন্দ্রীয় সার্ভার ব্যবহার করে দেশের সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সেবা প্রদান করে আসছে। সমস্ত প্রক্রিয়াটি কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সার্ভারের মাধ্যমে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পৃথক সার্ভারের মাধ্যমে এই সেবা দিলে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে এবং পাসপোর্ট সেবাসহ অনেক ক্ষেত্রে নাগরিক দুর্ভোগ তৈরি হতে পারে।

এ ছাড়া, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিজস্ব সার্ভারে ইতোমধ্যে সংরক্ষিত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের আওতাধীন জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সার্ভারে হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।

প্রসঙ্গত, গত অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ডিএসসিসির নিজস্ব সার্ভারের মাধ্যমে প্রায় ৮০ হাজার নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বৃহস্পতিবার দ্যা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা চিঠিটি পেয়েছি। তবে আমরা এখনও রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে দাবি জানাচ্ছি, তারা যেন তাদের সার্ভারে আমাদের সার্ভারেরে একসেস দেন। তাহলে আমরা সহজে কাজ করতে পারব।'

তিনি বলেন, 'রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের সক্ষমতা না থাকায় নিবন্ধন নিয়ে জনভোগান্তি দেখা দিয়েছিল। জনভোগান্তির কথা চিন্তা করেই ডিএসসিসি নিজস্ব সার্ভারে নিবন্ধনের কাজ শুরু করেছে। পাসপোর্ট-সংক্রান্ত যে জটিলতা দেখা দিয়েছে, তা সমাধানে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমওইউ সই করা হবে।'

চিঠির কোনো জবাব দেবেন কি-না জানতে চাইলে তিনি জরুরি কাজ থাকার কথা বলে ফোন রেখে দেন।

রেজিস্ট্রার জেনারেল (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন) যাহিদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সরকারি নির্দেশনা এবং জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন ২০০৪ এবং জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮ এর আলোকে কাজ করছি।'

আইনের ৭ (ক) (২) ধারায় বলা আছে, রেজিস্ট্রার জেনারেলের দায়িত্ব ও কার্যাবলি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে। আর বিধিমালার ষষ্ঠ অধ্যায়ের ১৯ (২) ধারায় উল্লেখ আছে, সফটওয়্যার নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিবন্ধনের তথ্য কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডারে সংরক্ষণের এখতিয়ার রেজিস্ট্রার জেনারেলের।

যাহিদ হোসেন বলেন, 'যদি ডিএসসিসি আমাদের কেন্দ্রীয় সার্ভারের মাধ্যমে পুনরায় জন্ম নিবন্ধন করতে চায়, আমরা স্বাগত জানাব। কারণ, এখনও তাদের ইউজার আমাদের সার্ভারে আছেন। সেই সঙ্গে তারা যে ৮০ হাজারের মতো জন্ম নিবন্ধন করেছেন, তাদের ডেটা আমাদের দিলে আমরা কেন্দ্রীয় সার্ভারে যুক্ত করব। এর জন্য কোন নাগরিককে সশরীরে আসতে হবে না এবং ফি দিতে হবে না।'

Comments

The Daily Star  | English

Demanding Khaleda's release, BNP to hold rally on Dhaka on Saturday

BNP will hold a rally on Saturday in front of the party’s Nayapaltan headquarters demanding the release of its Chairperson Khaleda Zia

14m ago